সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনে ফের আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে ধস্তাধস্তি, ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে। এক পর্যায়ে বার ভবনের সভাপতি ও সম্পাদকের কক্ষ ও বার ভবনের জানালা-দরজা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

মঙ্গলবার (১৬ মে) দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির বর্তমান কমিটি বাতিল করে নতুন করে ভোট আয়োজনের দাবিতে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের বিক্ষোভের সময় এ ঘটনা ঘটে।

দু’পক্ষই বলছে, তাদের কয়েকজন আইনজীবী আহত হয়েছেন। বিকেল পর্যন্ত পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে তারা। উভয়পক্ষের আইনজীবীদের মুখোমুখি অবস্থানের কারণে আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

জানা যায়, সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে সুপ্রিম কোর্ট বারে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া নির্বাচনে ভোট ডাকাতির অভিযোগ এনে সভাপতি ও সম্পাদকের কক্ষের সামনে বিক্ষোভ শুরু করে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। এ সময় আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরাও অবস্থান নেন সেখানে। এক পর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। এতে আহত হন ৪ জন।

জানা গেছে, উভয়পক্ষের হাতাহাতি-ধাক্কাধাক্কিতে আওয়ামীপন্থী তিন নারীসহ চার আইনজীবী আহত হয়েছেন। তারা হলেন, অ্যাডভোকেট সাবিনা ইয়াসমিন খান মৌলি, অ্যাডভোকেট শবনম মোস্তারি মৌসুমী, অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম ও অ্যাডেভোকেট রাজিয়া সুলতানা। এসময় সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদকের কক্ষের দরজা-জানালাও ভাঙচুর করা হয়।

এর আগে থেকেই নির্বাচন ও ভোট নিয়ে পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ সমাবেশ করে আসছেন উভয়পক্ষ। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ও আওয়ামীপন্থী আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদূন নুর দুলাল সাংবাদিকদের বলেন, আমরা (আওয়ামীলীগ পন্থী আইনজীবীরা) আমাদের কক্ষে বসা ছিলাম। তারা (বিএনপির আইনজীবীরা) ছিল বাইরে। আমাদের আইনজীবীদের উপর সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল ও ব্যারিস্টার কায়সার কামালের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়েছে। সহিংসতা উস্কে দিয়েছেন তারা। তাদের হামলায় আমাদের বেশ কয়েকজন আইনজীবী আহত হয়েছেন। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অন্যদিকে, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্যরা বলছেন, উদোরপিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপাচ্ছে আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা। বিএনপির আইন সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, তারা (আওয়ামীপন্থী) ভাঙচুর করে আমাদের সাধারণ আইনজীবীদের ঘাড়ে দোষ চাপানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।

গত ১৫ ও ১৬ মার্চ হট্টগোলের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন। বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের বর্জনের মধ্যদিয়ে একতরফা নির্বাচনে ১৪টি পদের সব কটিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেল জয়ী হয়। এরপর থেকে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আন্দোলন করে আসছেন। এর মধ্যে গত ৩০ মার্চ একদল আইনজীবী তলবি সভা ডেকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছেন। সুপ্রিম কোর্ট বার সমিতির সদস্যদের ব্যানারে আয়োজিত ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম। সভায় আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদকে আহ্বায়ক এবং আইনজীবী শাহ আহমেদ বাদলকে সদস্য সচিব করে সুপ্রিম কোর্ট বারে ১৪ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন কমিটি গঠন করা হয়।