×

সাহিত্য

‘কী চাহ শঙ্খচিল’ শিল্পকলার মঞ্চে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৩, ০৮:৪৫ পিএম

‘কী চাহ শঙ্খচিল’ শিল্পকলার মঞ্চে

ছবি: ভোরের কাগজ

বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের এক বেদনাময় অধ্যায় হলো পাকসেনা কর্তৃক নারী নির্যাতন। এ নির্যাতন সভ্যতার ইতিহাসে কলংকিত এক ঘটনা। মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত নারীরা যুদ্ধচলাকালে যেমন ভোগ করেছে অবর্ণনীয় যন্ত্রণা, তেমনি উত্তরকালেও তাদের মুখোমুখি হতে হয়েছে একই অনুভূতির। অজস্র প্রশ্নবাণে ক্ষতবিক্ষত হতে হয়েছে মুক্তিযুদ্ধে ধর্ষণের শিকারদের। সে মর্মন্তুদ জীবনযন্ত্রণার আবেগমথিত নাট্যভাষ্য মমতাজউদদীন আহমদের ‘কী চাহ শঙ্খচিল’।

মঙ্গলবার (১৬ মে) সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে নাট্যজন সৈয়দ বদরুদ্দীন হোসাইনের জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত সপ্তাহব্যাপী নাট্যেৎসবের পঞ্চম দিনে শব্দ নাট্যচর্চা কেন্দ্র’র ২৭তম প্রযোজনা ‘কী চাহ শঙ্খচিল’ নাটকটির দ্বিতীয় মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এ নাটকের কাহিনী আবর্তিত হয়েছে একাত্তরে পাকসেনা কর্তৃক ধর্ষণের শিকার রৌশনারাকে কেন্দ্র করে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীনের সঙ্গে পাকিস্তানিদের বাংকার থেকে মুক্ত হয়ে রৌশনারা ঘরে ফিরে আসে। তার এই প্রত্যাবর্তনে পরিবারের সবাই আপাত: খুশি হলেও, তার পিছনে ছিল তাদের আত্মপ্রতিষ্ঠার লোভ। রৌশনারার জীবনের বিষাদময় আখ্যানকে পুঁজি করে তার স্বামী-শ্বশুর সবাই সামাজিক প্রতিষ্ঠা ও প্রতিপত্তি লাভ করেছে। স্বার্থসিদ্ধির পর রৌশনারার স্বামী-শ্বশুর অচিরেই শুরু করে তার গর্ভের সন্তান লালনকে নিয়ে সন্দেহ। এ সন্তান তার স্বামীর ঔরশজাত হলেও তা বিশ্বাস করানো সহজ ছিল না। কেননা গর্ভধারণের আনন্দময় সংবাদটি স্বামীকে জানানোর আগেই পাকসেনারা তাকে ধরে নিয়ে যায় সেনা ছাউনিতে। এরই মধ্যে তার গর্ভের সন্তান লালনকে আত্মপ্রতিষ্ঠার উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করলেও প্রয়োজন ফুরালে পরিবারের সদস্যরাই তাকে গলা টিপে হত্যা করে। এরপর হত্যার সাক্ষী রৌশনারাকে মানসিক ভরসাম্যহীন রোগী হিসাবে চিহ্নিত করে বন্দিজীবন কাটাতে হয় হাসপাতালে।

সম্ভ্রম ও সন্তান হারানোর বেদনায় জর্জরিত রৌশনারার মাতৃহৃদয়ের হাহাকার এবং মুক্তিযুদ্ধের অব্যবহিত পর বাংলার আকাশে আবির্ভুত স্বার্থ ও সুযোগসন্ধানী শঙ্খচিলকে নির্মূল করার দৃঢ় প্রত্যয় ফুটে উঠেছে ‘কী চাহ শঙ্খচিল’ নাটকের কাহিনী বিন্যাসে।

একই সময়ে জাতীয় নাট্যশালার দুটি মিলনায়তনে সন্ধ্যায় থিয়েটার ফ্যাক্টরি মঞ্চায়ন করেছে ‘দ্যা রেস্পেক্টফুল প্রস্টিটিউট’ এবং এক্সপেরিমেন্টালে হলে আরণ্যক নাট্যদলে ‘নানকার পালা’ মঞ্চায়ন হয়।

উল্লেখ্য, এবার উৎসবে অংশ নিচ্ছে নাট্যকেন্দ্র, আরণ্যক, প্রাচ্যনাট, লোকনাট্য দল, সুন্দরম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ব বিভাগ, অনুস্বর, থিয়েটার ফ্যাক্টরি, শব্দ নাট্যচর্চা কেন্দ্র, বটতলা, নাট্যম রেপার্টরি, ম্যাড থেটার, ঢাকা পদাতিক, ভারতের চাকদাহ নাট্যজন, কসবা অর্ঘ, টেন্থ প্ল্যানেট থিয়েটার গ্রুপ, বাগুইহাটি নৃত্যমন্দির।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App