×

মুক্তচিন্তা

কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৩, ১২:৩৮ এএম

সালটা ২০১৬, প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব উদ্যোগে যেসব উপজেলাতে সরকারি কলেজ নেই, সেসব উপজেলাতে একটি করে কলেজকে সরকারিকরণের কার্যক্রম শুরু করেন। এতে করে এসব কলেজে আনন্দ উপক্রম হয়। ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারিকরণের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। তবে সরকারিকরণ করা হলেও গত ৫ বছরে প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক-কর্মচারীরা থেকে গেছেন বেসরকারি! সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেও এসব শিক্ষক-কর্মচারী এত বছর পর্যন্ত বেসরকারি থাকাটা খুবই দুঃখজনক। প্রধানমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রী দুজনই বিশেষভাবে নজর রাখছেন জাতীয়করণ কলেজগুলোর শিক্ষক-কর্মচারীদের নিয়োগের বিষয়ে। তারপরও অজানা কারণে যেন প্রক্রিয়াটি বারবার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তবে এত বাধা-বিপত্তির পরও হাতেগোনা মাত্র কয়েকটি কলেজের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। যে ধীরগতিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হচ্ছে, তাতে তিনশর অধিক কলেজের নিয়োগ শেষ করতে আরো কত সময় লাগতে পারে তা কে জানে? বিধি মোতাবেক ধাপে ধাপে কয়েকটি মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ফাইল যাচাই-বাছাইকরণের নামে প্রচুর পরিমাণে হয়রানি ও কালক্ষেপণের অভিযোগ আছে জাতীয়করণকৃত কলেজগুলোর সংগঠনের নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে। এতগুলো ধাপে ধাপে যাচাই-বাছাইয়ের পরও পুনরায় সচিব কমিটিতে নতুন করে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য স্থগিত করে রাখা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত সবার কাছেই দুঃসংবাদ! সদ্য জাতীয়করণকৃত কলেজগুলো থেকে ২০১৯ সাল থেকে গত সাড়ে ৪ বছরে যেসব শিক্ষক-কর্মচারী অবসরে গেছেন, তাদের জন্য জাতীয়করণ এখন এক অভিশাপের নাম। গত সাড়ে ৪ বছর এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে এসব শিক্ষককে। এরা সরকারিকরণের সুবিধা গত সাড়ে ৪ বছরেও পাননি এমনকি এরা বেসরকারি আমলের শিক্ষক-কর্মচারীর মতো সুবিধাগুলো থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। সত্যিকার অর্থেই অবসরের পর এসব শিক্ষক-কর্মচারী সাড়ে ৪ বছর ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন জটিলতা কিংবা অনিশ্চয়তা তো আছেই। বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকগুলোতে অবসরে যাওয়া এসব শিক্ষক-কর্মচারীর মানবেতর জীবনযাপন নিয়ে লেখালেখি হলেও আজ পর্যন্ত এরা সব সুবিধা-বঞ্চিত। যেভাবে শেষ দিকে এসেও নিয়োগ প্রক্রিয়া বারবার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, তাতে করে তাদের অনিশ্চয়তা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। জাতীয়করণকৃত কলেজগুলোর অবসরে যাওয়া শিক্ষক-কর্মচারীদের ফাইলগুলো বিশেষ বিবেচনায় দেখা যেত কিনা, এ নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। তবে গত ৭ বছরেও তিন শতাধিক কলেজের নিয়োগ পুরোপুরি সম্পন্ন না হওয়াটা সত্যিকার অর্থেই চরম হতাশার। কারণ অবসরজনিত কারণে কিংবা অন্য কোনো কারণে কলেজের শূন্যপদগুলোতে নতুন করে কোনো শিক্ষক নেয়া হচ্ছে না। এতে করে সরকারিকৃত কলেজগুলো তীব্র শিক্ষক সংকট নিয়ে চলছে। একটি অনলাইন পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী বরগুনা সরকারি কলেজে শিক্ষকদের সর্বমোট পদ ৪৯টি। কলেজটিতে ১১টি বিভাগ রয়েছে। যেখানে নতুন করে আরো শিক্ষক দরকার সেখানে কলেজটিতে শিক্ষক সংখ্যা মাত্র ৩২ জন! অর্থাৎ প্রয়োজনের তুলনায়ও প্রায় ১৭ জন শিক্ষক কম আছে উক্ত প্রতিষ্ঠানে! এমন সংকট আছে সদ্য সরকারিকৃত প্রায় সব প্রতিষ্ঠানে। এতে করে কি শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে না! শিক্ষক সংকট এসব কলেজের ছাত্রছাত্রীর জন্য তৈরি করছে বিভিন্ন সংকট। সরকারিকৃত কলেজগুলো থেকে অধ্যক্ষ অবসরে যাওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়ে চলছে। এসব সংকট নিরসনে দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে শিক্ষক সংকট নিরসনে জরুরি পদক্ষেপ নেয়া দরকার। এছাড়া এসব কলেজের অবসরে যাওয়া শিক্ষক-কর্মচারীদের দুর্দশার কথা ভেবে তাদের জন্য বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।

কে এম মাসুম বিল্লাহ : ব্যাংকার ও লেখক, দুমকি, পটুয়াখালী। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App