×

সারাদেশ

চট্টগ্রামে স্বাভাবিক হয়ে আসছে আবাসিক গ্যাস সরবরাহ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৩, ০৯:৪৩ পিএম

চট্টগ্রামে স্বাভাবিক হয়ে আসছে আবাসিক গ্যাস সরবরাহ

ছবি: সংগৃহীত

সংকটের ফায়দা লুটছে অসাধু গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসায়ীরা

ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’র কারণে মহেশখালীতে অবস্থিত এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ না হওয়ায় চট্টগ্রামসহ এর আশপাশের কয়েকটি জেলাতে জ্বালানি গ্যাসের মারাত্মক সংকট ছিল গত দুইদিন।

তবে সোমবার (১৫ মে) দুপুর থেকে কর্ণফুলী গ্যাস ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) কর্তৃপক্ষ গ্যাস সরবরাহ শুরু করাতে সংকট কিছুটা কমতে শুরু হরেছে। বিশেষ করে আবাসিক লাইনে গ্যাস সরবরাহ শুরু হওয়াতে কিছুটা স্বস্তি এসেছে নাগরিকদের জীবনে।

কেজিডিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (বিতরণ-দক্ষিণ) আমিনুর রহমান বলেছেন, ‘সার কারখানা ও পাওয়ার প্ল্যান্ট ছাড়া চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হবে বলে আশা করছি। পরবর্তীতে শিল্প কলকারখানায়ও গ্যাস সরবরাহ ঠিক হবে বলে আশা করছি। সকাল থেকেই গ্যাস আসা শুরু হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রামে সার কারখানা, শিল্প প্রতিষ্ঠান, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও গৃহস্থালী মিলিয়ে প্রতিদিন গড়ে তিনশ মিলিয়ন ঘনফুটের ওপরে গ্যাসের প্রয়োজন হয়। শুধু চট্টগ্রামে গৃহস্থালী কাজে গ্যাসের প্রয়োজন হয় ৫০ মিলিয়ন ঘনফুটের মতো। সোমবার সন্ধ্যা নাগাদ এলএনজি টার্মিনাল থেকে দেড়শ মিলিয়ন ঘনফুটের মতো গ্যাস পাওয়া যাবে। এতে করে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, ঘূর্ণিঝড় মোকার কারণে শুক্রবার রাতে সমুদ্রে থাকা এলএনজি টার্মিনাল থেকে সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়। সতর্কতার অংশ হিসেবে টার্মিনাল দুটি মহেশখালীর নির্ধারিত জায়গা থেকে গভীর সমুদ্রের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। এর ফলে চট্টগ্রামে বাসাবাড়ি, সার কারখানা, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও শিল্প প্রতিষ্ঠানে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। শনিবার থেকে চরম দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী। রান্নার চুলা জ্বলেনি দুইদিন ধরে। সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনে গ্যাস না থাকায় অটোরিকশা, প্রাইভেট কারসহ সিএনজিচালিত যানবাহন রাস্তায় কমে যায় এবং গাড়ি ভাড়া বেড়ে যায়। বাসাবাড়িতে গ্যাসের চুলা না জ্বলায় বিকল্প জ্বালানির জন্য সিলিন্ডার গ্যাস কিনতে নগরীর দোকানগুলোতে ভিড় জমে এবং বিক্রেতারা সিলিন্ডার গ্যাসের দাম কয়েকগুণ বাড়তি আদায় করেন। এছাড়া হোটেলেও খাবার কিনতে গিয়ে মানুষকে অতিরিক্ত দাম গুণতে হয়েছে।

জনগণের এই চরম সংকটের সময় অতিক্তি বাড়তি দামে সিলিন্ডার গ্যাস বিক্রি করায় রবিবার রাতেই নগরীর কয়েকটি জায়গায় অভিযান চালিয়ে ৪৮ হাজার টাকা জরিমানা করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট প্রতীক দত্ত।

ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনাকারী চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট প্রতীক দত্ত বলেন, একদল অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে গ্যাস সিলিন্ডার এর কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। সাথে দাম বেড়েছে রাইস কুকার, ইনডাকশন চুলা ও ইনফ্রারেড চুলার। সোমবার সকাল ১১ টায় আবারো অভিযান শুরু করা হয়। এ সময় লাভ লেনের হাবিব ট্রেডার্সে ১০ হাজার টাকা, এনায়েত বাজার মোড়ে যে এস ট্রেডিং কে ২০ হাজার টাকা এবং আরিফ ট্রেডার্সকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এরপর নগরীর গোলাম রসুল মার্কেটে ইনডাকশন চুলা ও রাইস কুকারের দাম বেশি রাখায় দুটি দোকানকে ৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং মার্কেট কমিটি সহ সকল দোকানদারদের সতর্ক করা হয়েছে।

এদিকে, গ্যাসের এই সংকট অত্যন্ত দ্রুত সমাধান করতে চট্টগ্রামের ক্যাব নেতৃবৃন্দ কেজিডিসিএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম এর সঙ্গে দেখা করে নাগরিকদের দুর্ভোগের বিষয়টি জানান। এ সময় কেজিডিসিএল এর এমডি প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান অতিদ্রুত চট্টগ্রাম নগরে বাসাবাড়িতে ও সিএনজি স্টেশনে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।

ক্যাব নেতৃবৃন্দ বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরে এলএনজি নির্ভর গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থার কারণে যে কোন ভাবে আমদানিতে সংকট হলেই চট্টগ্রামে গ্যাস সংকট প্রকট হয়ে যায়। এ অবস্থায় বিকল্প ব্যবস্থায় গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ন্যাশনাল গ্রিড থেকে বাখরাবাদ বা দেশীয় মজুত থেকে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার দাবি জানান। একই সাথে যে কোন প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা যে কোন সংকট মোকাবেলায় বিকল্প ব্যবস্থায় বাসাবাড়ি ও সিএনজি স্টেশনে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা এবং দেশীয় গ্যাসে চট্টগ্রামের হিস্যা নিশ্চিত করার দাবি জানান।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App