×

সারাদেশ

চকরিয়ায় আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে বাড়ি ফিরছে মানুষ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৩, ০৯:৪০ পিএম

চকরিয়ায় আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে বাড়ি ফিরছে মানুষ

ছবি: ভোরের কাগজ

ঘূর্ণিঝড় মোকার ভয়ে কক্সবাজারের চকরিয়ায় আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নেয়া সাধারণ মানুষ বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে। মোকার আতঙ্ক ও ভয় কেটে যাওয়ায় অনেকটা স্বস্তির নিঃস্বাস ফেলেছেন সাধারণ মানুষ। ঘূর্ণিঝড় মোকা মায়ানমারের আরকান রাজ্যে আঘাত হানায় বাংলাদেশের দক্ষিণ পৃর্ব অঞ্চলে দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে অবস্থান নেয়া সাধারণ মানুষ রবিবার সন্ধ্যার দিকে বাড়ি চলে যায়।

জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় মোকার কারণে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন একটি পৌরসভায় ৯৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১১ হাজার নারীপুরুষ আশ্রয় নেন। এর পাশাপাশি প্রায় ২০ হাজার গরু-ছাগল রাখা হয় আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে। এছাড়া, ঘূর্ণিঝড় মোকা মায়ানমারের দিকে গতি ফিরে যাওয়ায় রক্ষা পান লবণচাষীরা। তাদের উৎপাদিত হাজার হাজার মণ লবণ মাঠের মধ্যে রয়েছেন। রক্ষা পেয়েছে বোরো ধানও। শতকরা ৩০ ভাগ বোরো ধান মাঠের মধ্যে রয়ে গেছে। বাতাসের গতিবেগ কম হওয়ায় ঘরবাড়ি, জানমাল ও গাছপালার তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে সারাদিন হালকা বাতাস ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ছিল। দুপুর থেকে বিদ্যুৎ না থাকায় বিপাকে পড়ে সাধারণ মানুষ। বিদ্যুত না থাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দুভোগে পড়ে ঘরমুখো মানুষ। তবে পৌরশহরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বিপণি বিতানগুলো বন্ধ রয়েছে।

এদিকে রবিবার (১৪ মে) দুপুরের দিকে কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নেয়া মানুষের মাঝে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি দেয়া হয়েছে। চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী পাঁচটি আশ্রয়ণ কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া মানুষকে খাবার বিতরণ করেন। তবে দুপুরের খাবার ও পয়ঃনিস্কাশন অবস্থা পর্যাপ্ত না হওয়ায় বেশিরভাগ মানুষ দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্র ত্যাগ করেছেন। সর্তক সংকেত কেটে যাওয়ায় মানুষ ঘরে ফিরতে শুরু করেন। ঘূর্ণিঝড় মোকা মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আঘাত এনেছে।

মোকার আঘাত থেকে বাদ যায়নি টেকনাফের সেন্টমার্ন্টিন দ্বীপও। সেন্টমার্ন্টিন দ্বীপে আঘাত আনার পর চকরিয়া উপজেলার প্রায় ৬ লাখ মানুষের ভয় কেটে গেছে। রক্ষা পেয়েছে মানুষের জানমাল, গরুছাগল ও সহায় সম্পদ। যেভাবে মানুষের মাঝে আতঙ্ক ও ভয়ে কাজ করেছিল সতর্ক সংকেত কেটে যাওয়ায় স্বাভাবিক জীবন যাত্রা শুরু করেছেন।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোকার কারণে চকরিয়া উপজেলার ১৮ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ৯৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছিলো। ১৮টি মেডিকেল টিমসহ ১৪০০ জন রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সিপিপির স্বেচ্ছাসেবক মাঠে অবস্থান নিয়েছেন। উপজেলা প্রশাসনের সর্বোচ্চ তদারকির করার পরও সাধারণ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে যায়নি। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে প্রায় দুই লাখ মানুষের আশ্রয় নেয়ার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়। সেই হিসেবে রবিবার বিকাল তিনটা পর্যন্ত ৯৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ১১ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।

এদিকে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) রাহাত উজ্জামান। তিনি বলেন, আশ্রয় নেয়া মানুষগুলোকে দুপুরে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি বিতরণ করা হয়েছে। কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি। মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছেন। ঘূর্ণিঝড় মোকার সর্তক সংকেত কেটে যাওয়ায় মানুষ অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে। শনিবার রাতে আশ্রয়কেন্দ্রে কিছু মানুষ উঠলেও রবিবার বিকালের দিকে বাড়ি ফিরে যান অনেকে। চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী ৫-৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে দুপুরের খাবার বিতরণ করেছেন। যে কোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় সর্বোচ্চ সর্তক রয়েছি। সংকেত কেটে যাওয়ায় শুকরিয়া আদায় করছি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App