সংকেত, সর্বোচ্চ ১২ ফুট জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা

দেশের তিন বন্দরে ৪ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত উঠিয়ে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখানোর নির্দেশ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বন্দরগুলো হলো- কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও পায়রা বন্দর। উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা ও তাদের কাছাকাছি দ্বীপ ও চরসমূহ ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম এবং এদের কাছাকাছি দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চলে ৮-১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা রয়েছে।

মহাবিপদসংকেত শুরু হয় ৮ নম্বর থেকে। ঝড়ের বেগ তখন প্রচণ্ড- ৮৯ কিলোমিটারের বেশি। এ সময় ঝড়টি বন্দরকে বামদিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এই মাত্রার ঝড়ে সাধারণত ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হয়ে থাকে।

আবহাওয়ার অধিদপ্তরের ১২ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তি বলা হয়, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আজ শুক্রবার (১২ মে) সন্ধ্যা ছয়টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৬০কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৫৫কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিলো। এটি আরো উত্তর ও উত্তর-পূর্বদিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে আগামী রবিবার (১৪ মে) সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

এতে আরো বলা হয়, আগামীকাল শনিবার (১৩ মে) সন্ধ্যা থেকে কক্সবাজার ও তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’-এর অগ্রভাগের প্রভাব শুরু হতে পারে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৪০ কি.মি., যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৬০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুদ্ধ রয়েছে।

আবাহওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত (পুনরায়) ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত (পুনরায়) ৪ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ০৮ (আট) নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম এবং এদের কাছাকাছি দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮-১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।