×

মুক্তচিন্তা

দেশ নিন্দা মাতৃ নিন্দার সমান পাপ

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১২ মে ২০২৩, ১২:২০ এএম

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতির মাঠ ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের নানা বিষয় দিন দিন আরো স্পষ্ট হয়ে উঠছে। রাজনীতিকে কেন্দ্র করে নানা ষড়যন্ত্র ও দেশবিরোধী প্রচারণার কৌশল পাল্টা কৌশলও আমরা লক্ষ্য করছি। গত ১৪ বছর ধরে বিএনপি-জামায়াত তাদের ভুল রাজনৈতিক কৌশলের মাশুল হিসেবে ক্ষমতার বাইরে রয়েছে। তাই তারাও ক্ষমতায় আসতে আদাজল খেয়ে মাঠে নেমেছে। অপরদিকে টানা ১৪ বছরে ক্ষমতায় থেকে আওয়ামী লীগ ও স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উন্নয়ন-অগ্রগতির এক বদলে যাওয়া বাংলাদেশের ভিত রচনা করতে সক্ষম হয়েছে। ফলে তারাও ক্ষমতায় থেকেই বাংলাদেশকে আধুনিক, উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশে রূপ দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিএনপি ক্ষমতাকেন্দ্রিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে যুগপৎ আন্দোলনের যে কর্মসূচি গ্রহণ করেছিল এবং ১০ ডিসেম্বর সরকারের পতন ঘটাবে বলে যে ঘোষণা দিয়েছিল, বাস্তবে তা আষাঢ়ে তর্জন-গর্জন ছাড়া কিছুই ছিল না। ১০ ডিসেম্বর যুগপৎ আন্দোলনের ব্যর্থতার পর দলটি নানাভাবে দেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করার জন্য দেশি-বিদেশি নানা তৎপরতা অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাচ্ছে বলে প্রায়ই শোনা যাচ্ছে। ১০ ডিসেম্বরকে সফল করার জন্য ৬ ডিসেম্বর বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে একটি মানবাধিকার ফোরামে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ভুল তথ্য উপস্থাপন করে বিতর্কিত সংবাদমাধ্যম নেত্রনিউজের চিফ এডিটর তাসনিম খলিল ও বাংলাদেশবিরোধী কিছু লবিস্ট। বাংলাদেশের সঙ্গে পার্টনার হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্পর্ক ছিন্ন করার সুপারিশও করেছিল তারা। তখন বাংলাদেশের প্রতি ইইউর অর্থনৈতিক ও সামরিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানানো হয়। সে সময় উপস্থিত বাংলাদেশের কূটনীতিকের সঠিক তথ্য প্রমাণ উপস্থাপন, পাল্টা জবাব ও তাসনিম খলিলের সব অসত্য অভিযোগের অসারতা তুলে ধরার ফলে তাসনিম খলিল ও তার পেছনের বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্রটি তখন নস্যাৎ হয়ে যায়। বলা হচ্ছে, তাসনিম খলিলের ধারাবাহিক দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে এবারের নতুন রূপ ডয়েচভেলের তথ্যচিত্রটি, যা নতুন বোতলে পুরনো বিষ! কেননা দর্শকরা তাতে নতুন কিছু দেখতে পায়নি আর কেনইবা দুবছর আগের ঘটনাকে নির্বাচন সামনে রেখে আবার নতুন রূপে উপস্থাপন? তা অনেকেরই প্রশ্ন। প্রশ্ন উঠেছে এনইডির সঙ্গে তাসনিম খলিলের সখ্য বিষয়েও; ৭০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ যে ধরনের কাজ করত, এনইডি (ন্যাশনাল এনডাউম্যান্ট ফর ডেমোক্রেসি) মূলত সে ধরনেরই কাজ করে। তারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে তাদের অপছন্দের সরকারকে সরিয়ে দিয়ে নিজেদের পছন্দের আজ্ঞাবহ কাউকে ক্ষমতায় বসায় এবং নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারে তৎপর হয়। একই কায়দায় বাংলাদেশে বর্তমান সরকারকে উৎখাত করতে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস কর্তৃক ষড়যন্ত্রের দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্লট তৈরি ও অর্থায়নের কথা বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ কখনোই কাম্য নয়। বাংলাদেশকে গত ১৪ বছরে শেখ হাসিনার সরকার অনন্য এক উচ্চতায় আসীন করতে সক্ষম হয়েছেন। সাধারণ একটা দেশকে অসাধারণ উন্নয়নের গল্পে রূপদান করেছেন তিনি। পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু টানেল, মেট্রোরেল, শত সেতু, শত সড়ক, আশ্রয়ণ প্রকল্প, মডেল মসজিদ, যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তনসহ বহু মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন একের পর এক। যাকে বিশ্বে কেউ কেউ মিরাকল ম্যাজিক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন; এরপরও তিনি থেমে নেই। দেশি-বিদেশি নানা বাধা ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে একের পর এক পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। সব সংকটেই তিনি অতন্দ্র প্রহরীর মতো দেশের মানুষকে খাদ্য নিরাপত্তা দানে এক ইঞ্চি জমিও ফেলে না রাখতে নির্দেশ দিয়ে কৃষি বিপ্লবেও জনগণকে উৎসাহিত করেছেন। এরপরও এক শ্রেণির মানুষ দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের নানা জাল বুনছেন, তাতে সায় দিচ্ছে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমও। উন্নয়নের নিন্দা করতে গিয়ে, সরকারকে কটাক্ষ করতে গিয়ে দেশের নিন্দা করছেন অনেক বিরোধী রাজনীতিক কিংবা গণমাধ্যম। কিন্তু তারা ভুলে গেছেন ‘দেশ নিন্দা মাতৃ নিন্দার সমান পাপ’। দেশের সন্তান হয়ে দেশকে যারা নিন্দা করে, তারা মাকে নিন্দা করার মতো বড় পাপ করছেন, যার শাস্তি মোটেও সহজ হতে পারে না।

তানজিব রহমান : লেখক ও গবেষক। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App