×

সারাদেশ

সিলেটে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে জঙ্গিরা, আটক ৪

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ মে ২০২৩, ০১:৩২ পিএম

সিলেটে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে জঙ্গিরা, আটক ৪

বান্দরবানের পাহাড়ে প্রশিক্ষণ নেয়া জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সদস্যরা সিলেটে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করেছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাব-৯ এর মিডিয়া অফিসার (সিনিয়র এএসপি) আফসান-আল-আলম।

গত সোমবার সিলেট এয়ারপোর্টের বড়শলা এলাকা থেকে নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র সদস্য আটকের বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে র‌্যাব-৯ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান। সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন র‌্যাব-৯ এর সিইও খন্দকার আল মঈন।

আটককৃতরা হলেন- সিলেটের দক্ষিণ সুরমার হাফিজ মাওলানা মাহমুদ হোসাইনের ছেলে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার অন্যতম শুরা সদস্য ও দাওয়াতী শাখার প্রধান আব্দুল্লাহ মায়মুন ওরফে মুমিন (৩৪), ফরিদপুর চরভদ্রসন এলাকার মৃত. শেখ আব্দুস ছালাম মাস্টারের ছেলে আবু জাফর ওরফে তাহান (৪০), চাঁদপুরের মতলব উত্তরের মৃত মোস্তফা কাজীর ছেলে মো. আক্তার কাজী ওরফে সাইদ বা আইজল (৩৮) ও গোপালগঞ্জের মকদেসপুর এলাকার মৃত আব্দুর রাজ্জাক মোল্লার ছেলে সালাউদ্দিন রাজ্জাক মোল্লা। এ সময় তাদের কাছ থেকে নগদ ২ লাখ টাকাসহ ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস এবং গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার করা হয়।

খন্দকার আল মঈন জানান, র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা জানতে পারে এই নতুন জঙ্গি সংগঠনের অন্যতম শুরা সদস্য ও দাওয়াতী শাখার প্রধান আব্দুল্লাহ মায়মুন সংগঠনের কয়েকজন সদস্যসহ সিলেট এলাকায় অবস্থান করে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত সোমবার এয়ারপোর্টের বড়শলা এলাকায় রাতভর অভিযান চালিয়ে চার জঙ্গিকে আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

তিনি জানান, আব্দুল্লাহ মায়মুন অভিনব কৌশলের বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে নতুন জঙ্গি সংগঠনের অস্ত্র ও প্রশিক্ষণের জন্য অর্থ সহায়তা দিয়ে থাকেন। পাশাপাশি তিনি জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সঙ্গে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সেতুবন্ধন কাজ করেন।

তিনি জানান, ২০২২ সালের ২৩ আগস্ট কুমিল্লা সদর এলাকা থেকে আট তরুণ নিখোঁজ হয়। নিখোঁজ তরুণদের পরিবার কুমিল্লার কোতয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। নিখোঁজের ঘটনা দেশব্যাপী চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। তখন র‌্যাব ফোর্সেস নিখোঁজদের উদ্ধারে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়ে দেয়।

নিখোঁজ তরুণদের উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে র‌্যাব ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ নামক একটি নতুন জঙ্গি সংগঠনের সক্রিয় থাকার তথ্য পায় এবং র‌্যাব জানতে পারে যে, এই সংগঠনের সদস্যরা পার্বত্য চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফর সহায়তায় সশস্ত্র প্রশিক্ষণ নিচ্ছে।

তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে ও পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইতোমধ্যে নতুন এই জঙ্গি সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাসহ সর্বমোট ৬৮ জন এবং পাহাড়ে অবস্থান, প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য কার্যক্রমে জঙ্গিদের সহায়তার জন্য পাহাড়ী বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফের ১৭ জন নেতা ও সদস্যকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।

তিনি জানান, বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তারকৃতদের নিকট থেকে প্রাপ্ততথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, এই সংগঠনের আমীর আনিসুর রহমান মাহমুদ, দাওয়াতী কার্যক্রমের প্রধান গ্রেপ্তারকৃত আব্দুল্লাহ মায়মুন, সংগঠনের উপদেষ্টা শামীম মাহফুজ, অর্থ ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান রাকিব।

গ্রেপ্তারকৃত আব্দুল্লাহ মায়মুন ২০১৩ সালে স্থানীয় এক ব্যক্তির মাধ্যমে আনসার আল ইসলামে যোগ দেন। তিনি আনসার আল ইসলামের সিলেট বিভাগীয় প্রধান ছিলেন। জঙ্গি সংগঠনটির শীর্ষ জঙ্গি নেতা চাকরিচ্যুত মেজর জিয়ার সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল এবং তার বাসায় নিয়মিত যাতায়াত ছিল। ২০১৯ সালে বগুড়ার একটি সন্ত্রাসবিরোধী মামলায় সে গ্রেপ্তার হয়ে ১ বছরের বেশি সময় কারাভোগ করে ২০২০ সালের শেষের দিকে জামিনে মুক্তি পায়। মুক্তির পর আত্মগোপনে গিয়ে ফের জঙ্গি কার্যক্রম শুরু করে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App