×

জাতীয়

ভোটের মাঠে আ.লীগের ‘উন্নয়ন’ কৌশল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ মে ২০২৩, ০৯:০৬ এএম

ভোটের মাঠে আ.লীগের ‘উন্নয়ন’ কৌশল

উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে ভোট চাইবেন প্রার্থীরা

ঢাকায় সফররত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিনিধিদল বলেছে অনেক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি বর্ধনশীল। বাংলাদেশের জন্য আইএমএফ মিশন প্রধান রাহুল আনন্দ বলেছেন, একটি চ্যালেঞ্জিং অর্থনৈতিক পটভূমিতে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাংলাদেশ অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি।

শুধু প্রবৃদ্ধি বর্ধনশীল অর্থনীতিই নয়; একের পর এক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন দেশের যোগাযোগ খাত, বাণিজ্য খাত এবং কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বেকারত্ব দূরীকরণে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। আগামী নির্বাচনে বিজয়ের লক্ষ্যে ভোটার তুষ্টিতে উন্নয়ন প্রচারের বহুমুখী কৌশল নিয়ে জনগণের দোরগোড়ায় যাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলের প্রচার কৌশলে এবার প্রাধান্য পাবে শেখ হাসিনা সরকারের টানা তিন মেয়াদের উন্নয়ন।

জাতীয় নির্বাচনের আগে আসন্ন পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেই ভোটারদের মন জয়ের চেষ্টা করবে আওয়ামী লীগ। দৃশ্যমান সাফল্য থেকে মহাকাশ বিজয় প্রতিটি অর্জন তুলে ধরে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে ভোট চাইবে তারা। সেইসঙ্গে বিএনপি-জামায়াতের দুর্নীতি, সহিংসতা-নাশকতার চিত্রও তুলে ধরা হবে। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প সামনে রেখেই আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনী প্রচারণার উপযুক্ত ‘কৌশল’ হিসেবে নিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি।

দলের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, নির্বাচনী প্রচারণায় গত ১৪ বছরে তাদের যে অর্জন, সেগুলোকেই সামনে তুলে ধরা হবে। এর মধ্যে রয়েছে মহাকাশে বিজয় পতাকা, দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়া, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, ডিজিটাল বাংলাদেশ, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, দারিদ্র্য বিমোচন, চিকিৎসা খাতে উন্নয়ন, ইন্টারনেট সুবিধা, কৃষিতে নীরব বিপ্লব, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, বিনামূল্যে বই বিতরণ, নারীর অগ্রগতি, ছিটমহল জয়, সমুদ্র বিজয়, কূটনৈতিক সম্পর্কের উন্নয়ন পভৃতি।

আর সাত মাস পরই সংসদ নির্বাচন। দেশজুড়ে দাবদাহের হালকা হাওয়ার মধ্যেই নির্বাচনী হাওয়াও বইছে বেশ জোরেই। রাজনৈতিক ডামাডোলের সেই উত্তাপ ছড়াবে রাজধানী ঢাকা থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে। ইতোমধ্যেই ভোটের রাজনীতির হাওয়া ছড়িয়ে দিতে সংসদ সদস্যসহ সম্ভাব্য মনোনয়নপ্রত্যাশীরা মাঠে। জনসংযোগ করছেন যে যার মতো। সরকারের টানা তিন মেয়াদের উন্নয়ন সাফল্য তুলে ধরছেন কেন্দ্র থেকে প্রান্তিকে। দলটির সিনিয়র নেতারা বলছেন, দলকে প্রস্তুত করার অংশ হিসেবে একাধিক তৎপরতা এখন চলছে- যার মূল উদ্দেশ্য হলো মাঠ পর্যায়ে কর্মী ও সমর্থকদের চাঙা করে নির্বাচনের আবহ তৈরি করা। সেইসঙ্গে সরকারের উন্নয়ন সাফল্য জনগণের সামনে তুলে ধরে আগামী নির্বাচনে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করা।

নেতারা বলছেন, সরকারের মেগা প্রকল্পগুলো দৃশ্যমান হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড মানুষের নজর কাড়ছে। দারিদ্র্য নিরসন, আয় বৈষম্য হ্রাস, নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, রপ্তানি খাত বহুমুখীকরণ, বৈদেশিক বাণিজ্য ও লেনদেনে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা, টেকসই বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবস্থাপনা, টেকসই উন্নয়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে কাজ চলছে। বাংলাদেশ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে রূপান্তরিত হতে চলেছে।

গভীর সমুদ্রবন্দর, পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ, এয়ারপোর্ট, মেট্রোরেল, পাতালরেল- এসব উন্নয়ন কর্মকাণ্ডও আলোচনায় আসছে। উন্নত বিশ্বের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে বাংলাদেশ উৎপাদনের সক্ষমতা দেখাচ্ছে। পৃথিবীর সবচেয়ে প্রভাবশালী মিডিয়ায় সেসব প্রচারও হচ্ছে। বাংলাদেশের মৌলবাদ-জঙ্গি দমনের সফলতা নিয়ে এখন বিভিন্ন দেশেই আলোচনা হয়। জনগণের সামনে এসব তুলে ধরে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় সরকারের ধারাবাহিকতার প্রয়োজনীতা তুলে ধরা হবে।

দলটির শীর্ষ নেতাদের মতে, একটানা ১৪ বছরের শাসনামলে পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ে, রাজধানীর মেট্রোরেল, কর্ণফুলী ট্যানেলসহ দেশে যে পরিমাণ উন্নয়ন প্রকল্প হয়েছে, সেই সফলতার প্রচারণা এবং নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে জনগণকে আবারো আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোট দিতে আকৃষ্ট করার কৌশল অবলম্বন করছে দলটি। আওয়ামী লীগের কেন্দ্র থেকে স্থানীয় নেতাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে আগামী নির্বাচনের জন্য জনগণের কাছে ভোট চাইতে।

দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী ভোরের কাগজকে বলেন, বিগত ১৪ বছরে দেশে যে পরিমাণ উন্নয়ন হয়েছে, স্বাধীনতার পর এটি হলো উন্নয়নের সবচেয়ে বড় মাইলফলক। শুধু বাংলাদেশের মানুষই নন, বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থাও বাংলাদেশের উন্নয়নকে স্বীকৃতি দিচ্ছে। বাংলাদেশের অবকাঠামো ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন একবারেই বিস্ময়কর- যা বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সম্ভব হয়েছে।

দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল ভোরের কাগজকে বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের টানা তিন মেয়াদের উন্নয়ন দেশের উন্নয়নের সোনালি সময়। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের উন্নয়নের রোলমডেল। এসবই সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বের কারণে। আমরা নির্বাচনী প্রচারে এসব উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরব। কারণ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা মানেই দেশের উন্নয়ন, জনগণের ভাগ্যের উন্নয়ন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App