×

জাতীয়

১৫ ফুট জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ মে ২০২৩, ১২:০৩ পিএম

১৫ ফুট জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা

ছবি: সংগৃহীত

সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় মোখা শক্তিশালী রুপ নিচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়টি ঘণ্টায় ১৮০ থেকে ২০০ কিলোমিটার বেগে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যের উপর দিয়ে স্থল ভাগে আঘাতের আশংকা আছে। আগামী রবিবার (১৪ মে) সকাল ৬ টার থেকে ১৫ ই মে সকাল ৬ টার মধ্যে দেশে আঘাত করতে পারে। এমনটাই জানিয়েছেন কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ।

বিশ্বের বিভিন্ন আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল বিশ্লেষণ করে এই আবহাওয়াবিদ বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোখা আগামী রবিবার (১৪ মে) সকাল ৬টার পর থেকে ১৫ মে সকাল ৬টার মধ্যে অত্যন্ত তীব্র ঘূর্ণিঝড় হিসাবে ঘণ্টায় ১৮০ থেকে ২০০ কিলোমিটার বেগে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও মায়ানমারে রাখাইন রাজ্যের মংডু জেলার উপর দিয়ে স্থল ভাগে আঘাত করবে।

সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় মোকা স্থলভাগে আঘাতের সময় উপরে উল্লেখিত বাতাসের গতিবেগ নিয়ে আপনি কতটুকু নিশ্চিত, এমন প্রশ্নে মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখা (সম্ভব্য) যে অত্যন্ত তীব্র ঘূর্ণিঝড় হিসাবে ঘণ্টায় প্রায় ১৮০ থেকে ২০০ কিলোমিটার বেগে পূর্ব বঙ্গোপসাগর উপকূলে আঘাত করতে যাচ্ছে এই বিষয়ে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল হতে প্রাপ্ত Ensemble (সংকলন/সমষ্টিগত) আবহাওয়া পূর্বাভাসের উপর আমি পূর্ণ আস্থা রাখছি। এই ঘূর্ণিঝড়টি যে খুবই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হবে সেই আশংকার কথা আমি গত ২৬ এপ্রিল থেকে প্রচারিত প্রত্যেকটি আপডেটের মাধ্যমে বারংবার মনে করিয়ে দিয়েছি।

সম্ভব্য এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে উপকূলীয় এলাকাগুলোতে জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আশংকা বিষয়ে মোস্তফা কামাল পলাশের পূর্বাভাস, উল্লেখিত গতিবেগে ঘূর্ণিঝড় মোখা চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার উপকূলের উপর দিয়ে অতিক্রম করার সময় এই দুই জেলার উপকূলীয় এলাকাগুলো ১৫ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আশংকা রয়েছে। বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে ৭ থেকে ১০ ফুট ও খুলনা বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলো ৫ থেকে ৮ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে।

সম্ভব্য এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে দেশের কোন এলাকার মানুষের জীবন ও সম্পদ সবচেয়ে বেশি ক্ষতির ঝুঁকিতে রয়েছে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার কেন্দ্র কক্সবাজার জেলার সেন্টমার্টি দ্বীপ, টেকনাফ, কুতুবদিয়া, ও মহেশখালী উপজেলার উপর দিয়ে অতিক্রম করতপ পারে। ঘূর্ণিঝড়টি টেকনাফ উপজেলায় অবস্থিত রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোর উপর দিয়ে অতিক্রম করার আশংকা প্রবল।

তবে ঘূর্ণিঝড়টি স্থল ভাগে আঘাতের স্থান নিয়ে এখনও ক্ষীণ অনিশ্চয়তা আছে। পলাশ জানান, ঘূর্ণিঝড়টি মায়ানমার বা বরিশাল বিভাগের দিকে সামান্য পরিমাণ ঝুঁকে পড়তে পারে। অর্থাৎ, ঘূর্ণিঝড়টির চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী জেলার উপর দিয়ে অতিক্রম করার কিছু সম্ভাবনা রয়েছে। আবার ঘূর্ণিঝড়টি কিছুটা ডান দিকে সরে গিয়ে কক্সবাজার ও মায়ানমারে রাখাইন রাজ্যের মংডু জেলার উপর দিয়ে স্থলভাগে আঘাত করার কিছু সম্ভাবনা রয়েছে।

বৃষ্টির পূর্ভাবাস: সম্ভব্য এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে দেশের কোন বিভাগে ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টি হতে পারে। পলাশ বলেন, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় ২৫০ থেকে ৪০০ মিলিমিটার, বরিশাল বিভাগ ও পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলাগুলোর উপর ২০০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হওয়ার আশংকা করছি। খুলনা বিভাগের জেলাগুলোতে ১৫০ থেকে ২৫০ মিলিমিটার; ঢাকা ও সিলেট বিভাগের জেলাগুলোতে ১০০ থেকে ২০০ মিলিমিটার, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের জেলাগুলোতে ৫০ থেকে ১০০ মিলিমিটার ও ময়মনসিংহ বিভাগের জেলাগুলোতে ১০০ থেকে ১৫০ মিলিমিটার বৃষ্টির হওয়ার আশংকা করছি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App