×

ভিডিও

শিবালয়ে অবাধে বিক্রি হচ্ছে ফসলি জমির মাটি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ মে ২০২৩, ১২:৩০ পিএম

https://www.youtube.com/watch?v=pn-Owheh9tc

মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার উলাইল ইউনিয়নের চারিপাড়া গ্রামে মজাপুকুর সংস্কারের নামে ড্রেজার দিয়ে পাশের ফসলি জমি কেটে রমরমা মাটি বাণিজ্য চলছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, উলাইলের ইউপি চেয়ারম্যান আনিছুর রহমানের ছোট ভাই তোতা মিয়া, ভাওয়ালকান্দি গ্রামের হযরত পীর সাহেবের ছেলে শাহজাহান, আমডালার মো. মাঈনুদ্দিনের ছেলে এবং উলাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিণ্টুর বড় ভাই আব্দুল মান্নান এবং জুনিকালসা গ্রামের মো. নজুমদ্দিনের ছেলে আব্দুল মজিদ দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন অজুহাতে ড্রেজার বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন।

আর এই ড্রেজারের মালিক জেলার হরিরামপুর উপজেলার বেজদী এলাকার ইউনুছ আলী। এলাকার রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি ও পাশ্ববর্তী ফসলী জমির ক্ষতি করে তারা সম্প্রতি চারিপাড়া এলাকার মো. রহিজ উদ্দিন রাহি মেম্বারের জলাশয়ে ড্রেজার বসিয়ে পাশের ফসলি জমির মাটি কেটে বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করছেন। মাঝেমধ্যে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তাদের এ অবৈধ ড্রেজার বাণিজ্য সাময়িক বন্ধ হলেও রহস্যজনক কারণে স্থায়ীভাবে বন্ধ হচ্ছে না।

উলাইল ইউনিয়নের কতিপয় স্থানীয় বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, উল্লেখিত মাটি ব্যবসায়ীদের অত্যাচারে এলাকার সাধারণ মানুষ অসহায়। কোন ব্যক্তি ড্রেজার বন্ধের বিষয়ে তাদের অনুরোধ করলে তারা উল্টো নানারকম ভয়ভীতি দেখান। তাদের ড্রেজার ব্যবসা এবং কথাবার্তা শুনে মনে হয় তারা যেন ড্রেজার ব্যবসার বৈধ লাইসেন্স পেয়েছেন!

গত ৮ মে (সোমবার) দুপুরে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ওই মাটি ব্যবসায়ীরা উলাইল ইউনিয়নের চারিপাড়া গ্রামের রাহি মেম্বারের বালিরদর এলাকার ডাঙ্গায় (জলাশয়) ড্রেজার বসিয়ে মজাপুকুর সংস্কারের নামে পাশের আবাদি জমি কেটে বিভিন্ন জায়গা ভরাট করছেন।

সম্প্রতি তারা ভাওয়ালকান্দি গ্রামের হেকমত মিয়ার মেয়ের জামাইয়ের জায়গাটি ভরাট করছেন। যেটি চারিপাড়া মসজিদের সামান্য দক্ষিণে তোমো, শুকুর আলী এবং ভূবন মল্লিকের বাড়ির মাঝামাঝি জায়গায় অবস্থিত।

ড্রেজার মালিক ইউনুছ আলী জানান, মাটি ব্যসায়ী তোতা, মজিদ, মান্নান এবং শাহজাহান ভাই আমার কাছ থেকে ড্রেজার ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত ওই এলাকায় ব্যবসা করছেন। তারা নাকি প্রশাসনসহ সবার সাথে কথা বলেই ব্যবসা করছেন! সেক্ষেত্রে তাদের কোন সমস্যা হওয়ার কথা না।

মাটি ব্যবসায়ী আব্দুল মজিদ প্রতিবেদককে জানান, তোতা, শাহজাহান এবং মান্নান মিলে একটা মজাপুকুর সংস্কারের কাজ করছি। এই জমির মালিক মজাপুকুর সংস্কারের জন্য ইউএনও বরাবর আবেদন করেছিলেন। ইউএনও সাহেব অনুমতি দিয়ে আবেদনটি এসিল্যান্ড সাহেবকে দিয়েছিলেন। তিনিও অনুমতি দিয়েছেন। সেক্ষেত্রে এখন কাজ করতে আমাদের আর কোন আইনি জটিলতা নেই।

আপনারাতো মজাপুকুর সংস্কারের অজুহাতে আবাদি জমির মাটি কেটে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি আপনার সাথে দেখা করবো। মোবাইলে এতো কথা বলা যাবে না বলে মোবাইলের সংযোগ কেটে দেন।

শিবালয় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আনিছুর রহমান খান দৈনিক ভোরের কাগজকে জানান, আমি কাউকে এ রকম কোন কাজ করতে অনুমতি দেইনি। তবে, মাঝেমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এ রকম কিছু আবেদন আসে। মানবিক দিক বিবেচনা করে এবং অন্য কোথায় মাটি বিক্রি করা যাবে না শর্তে তিনি কিছু ক্ষেত্রে মৌখিক অনুমতি দিয়ে থাকেন। চারিপাড়া এলাকায় তিনি এ রকম কোন মৌখিক অনুমতি দিয়েছেন কিনা আমার জানা নেই। তিনি মৌখিক অনুমতি দিলেও ড্রেজার ব্যবসায়ীরা যদি মজাপুকুর সংস্কারের নামে অন্যত্র বালু বিক্রি করেন আমি অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহিদুর রহমান প্রতিবেদককে জানান, আমি এখন প্রশিক্ষণের জন্য মানিকগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছি। অফিসের ফাইল না দেখে এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App