ধারের দুই লাখ টাকা ফেরত চাওয়ায় রাজধানীর তেজগাঁও কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইকরাম হোসেন মোল্লা হত্যা মামলায় বন্ধু শান্ত আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। শান্তর বন্ধু আবু সিদ্দিকের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

রবিবার (৭ মে) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খিলক্ষেত থানার ইন্সপেক্টর (পরিদর্শক) এনামুল হক খন্দকার দুই আসামিকে আদালতে হাজির করেন। শান্ত স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড ও আবু সিদ্দিকের সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোশাররফ হোসেনের আদালত শান্তর জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। আরেক ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলামের আদালত আবু সিদ্দিকের দুই দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

ইট-বালুর ব্যবসায় লগ্নি করতে বন্ধু শান্তকে দুই লাখ টাকা দিয়েছিল ইকরাম হোসেন মোল্লা (২২)। বিনিময়ে প্রতি মাসে তাকে হাত খরচার টাকা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু ছয় মাস আগে টাকা লগ্নি করেও কোনো হাত খরচা পায়নি ইকরাম। উল্টো নেশাগ্রস্ত হয়ে ব্যবসা লাটে ওঠার দশা শান্তর।

অন্যদিকে, টাকা চাওয়ায় ও শান্ত নেশাগ্রস্ত এ তথ্য পরিবারকে জানানোয় ক্ষিপ্ত হন শান্ত। অপর নেশাগ্রস্ত বন্ধু আবু সিদ্দিককে সঙ্গে নিয়ে ইকরামকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তিনি। পুলিশ জানিয়েছে, পরিকল্পনা করেই নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে ইকরামকে। তার চোখও তুলে ফেলা হয়েছিল। হত্যা নিশ্চিত করে ডোবায় ফেলে কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়েছিলো মরদেহ।

এ ঘটনায় খিলক্ষেত থানায় অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন নিহতের বাবা কবির হোসেন মোল্লা। মামলায় বাদী অভিযোগ করেন, গত ৪ মে রাত সোয়া আটটা থেকে শনিবার দুপুর একটার মধ্যে যেকোনো সময় পরস্পর যোগসাজশে আমার ছেলে ইকরাম হোসেন মোল্লাকে (২২) হত্যা করা হয়েছে। মরদেহ গুম করার উদ্দেশ্যে বসুন্ধরা স্টেডিয়ামের পূর্বদিকে বসুন্ধরা বালুর মাঠ সংলগ্ন ডোবার পশ্চিম কিনারে ফেলে কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে রাখে। মামলায় বন্ধুদের সঙ্গে টাকা-পয়সা লেনদেন নিয়ে বিরোধের বিষয়টি উল্লেখ করেন তিনি।