×

সম্পাদকীয়

বাজার ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন জরুরি

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ মে ২০২৩, ১২:১৭ এএম

বাজার ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন জরুরি

দিন দিন নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে নিত্যপণ্যের বাজার। বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না। গতকাল ভোরের কাগজের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে চাল, ডাল ও তেল থেকে শুরু করে সব নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। উত্তাপ ছড়াচ্ছে চিনি, পেঁয়াজ, আলু, আদা ও ডিমের দাম। কেজিতে এসব পণ্যের দাম বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা করে। অতি মুনাফালোভী পাইকারি ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ভোক্তাদের জিম্মি করে পণ্যের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ খুচরা ব্যবসায়ীদের। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন নি¤œ আয়ের মানুষ। তারা বলছেন, সব কিছুর দাম বাড়ায় সংসার খরচ বেড়ে গেছে। যে কারণে আয়ের সিংহভাগ চলে যাচ্ছে নিত্যপণ্যের পেছনে। চাহিদার সঙ্গে দাম যাতে না বাড়ে, সে জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সংস্থাগুলো দৃশ্যত কিছু বিশেষ ব্যবস্থাও নিয়ে থাকে। তবে আমাদের অভিজ্ঞতায় আছে, এসব ব্যবস্থা বাজার নিয়ন্ত্রণে ইতিবাচক তেমন প্রভাব ফেলতে পারে না। বাজার ঘুরে ও বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা গেছে, কারণে-অকারণে দেশে একেক সময় একেক পণ্যের দাম বাড়ছে। কোনো পণ্যের দাম বাড়লে তা সহজে কমছে না। দাম বাড়ানোর সুনির্দিষ্ট কারণ না থাকলেও ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়া, সময়মতো এলসি খুলতে না পারাসহ বিভিন্ন যুক্তি দাঁড় করিয়ে রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। এমনকি সরবরাহ সংকট দেখাতে অনেক সময় বাজার থেকে পণ্য হাওয়া করে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এসব কাজে শক্ত ভিত তৈরি করে রেখেছে অসাধু সিন্ডিকেট। তবে এ সিন্ডিকেট ভাঙতে বিভিন্ন সময় সরকারি উদ্যোগ দেখা গেলেও কার্যকর হয়নি। এমতাবস্থায় বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে যাতে বাজারকে অস্থিতিশীল করতে না পারে, সেদিকে লক্ষ রাখার কথা জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করছেন কর্মকর্তারা। অবশ্য এসব তৎপরতায় তেমন কোনো সাফল্য আমরা দেখি না। চাল আমাদের প্রধান খাদ্যপণ্য। অথচ এই চাল নিয়ে প্রায় ধারাবাহিকভাবে চলছে চালবাজি। চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে ইতোমধ্যে সরকার অনেকবার চাল আমদানি করেছে। আমদানি শুল্কও কমিয়েছে। কিন্তু ভোক্তা এর যথাযথ সুফল কখনোই কাক্সিক্ষত মাত্রায় পাননি। তবে বাজার নিয়ন্ত্রণে টিসিবির মাধ্যমে খোলাবাজারে পণ্য বিপণন, বাজার মনিটরিং ইত্যাদি যেসব পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে, এগুলো যেন যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। পণ্য পরিবহন নির্বিঘœ রাখতে বিশেষ করে কৃষিপণ্যের সরবরাহে যাতে কোনো বাধার সৃষ্টি হতে না পারে সেদিকে নজর রাখতে হবে সংশ্লিষ্টদের। এর বাইরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বাজার পরিস্থিতি তদারকি অব্যাহত রাখতে হবে। আমরা এও মনে করি, কেন্দ্র থেকে স্থানীয় উৎপাদন ক্ষেত্র পর্যন্ত ব্যবস্থাপনাও নজরদারির আওতায় আনা জরুরি। একই সঙ্গে আমদানিকৃত ও দেশজ উৎপাদিত- এ দুই ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন ও নির্বিঘœ রাখার ব্যবস্থাও নিশ্চিত করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App