×

সারাদেশ

প্রত্যাবাসন : পরিস্থিতি দেখে এলেন রোহিঙ্গা শরণার্থীরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ মে ২০২৩, ০৯:১৩ এএম

প্রত্যাবাসন : পরিস্থিতি দেখে এলেন রোহিঙ্গা শরণার্থীরা

ছবি: সংগৃহীত

সম্ভাব্য প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুর আগে রাখাইনের মংডু পরিদর্শন করে এলো ২০ সদস্যের রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদল। এ সময় শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে এই প্রতিনিধিদলে ৭ জন বাংলাদেশি কর্মকর্তাও ছিলেন।  শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে টেকনাফের বাংলাদেশ-মিয়ানমার ট্রানজিট জেটি দিয়ে প্রতিনিধিদলটি ‘গো, সি এন্ড ভিজিট’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু শহর ও আশপাশের গ্রাম, স্থাপনা পরিদর্শন শেষে সন্ধ্যা ৬টায় ফিরে এসেছে।

শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মো. মিজানুর রহমান মিয়ানমার থেকে ফিরে সাংবাদিকদের বলেন, রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য কাজ করছে বাংলাদেশ সরকার। রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন ছাড়া বাংলাদেশের সমস্যা শেষ হবে না। ৭০ বছরের সমস্যা একদিনে শেষ হওয়ার কথা না। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা পরিলক্ষিত হয়েছে। তারা অনেক আন্তরিক বলে মনে হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের ‘গো, সি এন্ড ভিজিট’ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের মংডু ও আশপাশের গ্রাম, স্থাপনা দেখানোর আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছে। তারা মিয়ানমারে প্রত্যাবাসিত রোহিঙ্গাদের আস্থা ফেরাতে চায়।

শুক্রবার সকালে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের যাচাই-বাছাই করা প্রায় ২২০ পরিবারের মধ্য থেকে প্রত্যাবাসনের জন্য তালিকাভুক্ত টেকনাফ ২৬ নম্বর ক্যাম্পের ১৪ পরিবার, ২৭ নম্বর ক্যাম্পের ৪ পরিবার ও ২৪ নম্বর ক্যাম্পের ২ পরিবারসহ মোট ২০টি পরিবারের ৩ জন নারী সদস্যসহ ২০ সদস্যের রোহিঙ্গা প্রতিনিধি করিম উল্লাহ, মো. সেলিম, রশিদ উল্লাহ ছৈয়দ আলম, অলি হোসেন, মো. ফারুক, মোহাম্মদ ইলিয়াস, সাঈদ আলম, আবুল হোসেন, আবু সুফিয়ান, আবু তৈয়ুব, মো. ইলিয়াস, নোমান, মো. তাহের, মো. আলম, আবু সামা, আবদু সালাম, জমিলা, রহিমা খাতুন ও সুবিয়া খাতুন স্পিডবোট যোগে মংডু পরিদর্শন করে আসেন। নিজ দেশের রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরে গিয়ে পরিস্থিতি দেখে এসে রোহিঙ্গা প্রতিনিধি জমিলা, আবু সুফিয়ান, করিম উল্লাহ সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন।

তারা জানালেন, নিজ গ্রামের চিহ্ন পর্যন্ত সেখানে অবশিষ্ট নেই। কিছু ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছে আমাদের রাখার জন্য। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ আমাদের নাগরিকত্ব ফয়সালা নিয়ে কোনো সদুত্তর দেয়নি। এ অবস্থায় আমরা সেখানে কীভাবে ফিরে যাব।

জানা যায়, চীনের মধ্যস্থতায় চলতি মাসের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর প্রচেষ্টা চলছে। এ কারণে রোহিঙ্গাদের আগেই রাখাইনে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য পাঠানোর প্রস্তাব করে বাংলাদেশ। দীর্ঘদিন ধরে এ প্রস্তাব নাকচ করে এলেও এবার রাজি হয়েছে মিয়ানমার। রাখাইনে কী অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়ার জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি হয়েছে কিনা, তা রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদল নিজ চোখে পর্যবেক্ষণ করল।

এর আগে গত ১৫ মার্চ সকালে মিয়ানমারের ১৭ সদস্যবিশিষ্ট একটি টিম রাখাইন রাজ্যের সমাজবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী অং মিয়োর নেতৃত্বে টেকনাফ স্থলবন্দর রেস্টহাউসে অবস্থান করে তালিকা যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া শুরু করেছিল। মিয়ানমারের অভিবাসন ও জনসংখ্যা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাও ওই টিমের সদস্য ছিলেন।

সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ থেকে পাঠানো তালিকা যাচাই-বাছাই শেষে চূড়ান্ত মনোনীত রোহিঙ্গা পরিবারগুলোর ২০ টি পরিবারের সদস্যরা মিয়ানমার সরকারের গৃহীত প্রদক্ষেপ পর্যবেক্ষণ করলেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App