×

জাতীয়

শুভ বুদ্ধপূর্ণিমা আজ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৩, ০৮:১৯ এএম

শুভ বুদ্ধপূর্ণিমা আজ

ছবি: সংগৃহীত

আজ শুভ বুদ্ধপূর্ণিমা। মহামতি গৌতম বুদ্ধের আবির্ভাব, বোধিপ্রাপ্তি আর মহাপ্রয়াণ- তিন স্মৃতি বিজড়িত বৈশাখী পূর্ণিমার এই দিনটি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। দেশের বৌদ্ধ স¤প্রদায় সাড়ম্বরে এই উৎসব উদযাপন করবে।

এ উপলক্ষে রাজধানীসহ দেশজুড়ে বৌদ্ধ বিহারগুলোতে বুদ্ধ পূজা, প্রদীপ প্রজ্বলন, শান্তি শোভাযাত্রা, ধর্মীয় আলোচনা সভা, প্রভাত ফেরি, সমবেত প্রার্থনা, আলোচনা সভা ও বুদ্ধ পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও মানব জাতির সর্বাঙ্গীণ শান্তি ও মঙ্গল কামনায় বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান এই ধর্মীয় উৎসব উলপক্ষে আজ সরকারি ছুটির দিন।

বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, মহামতি বুদ্ধ একটি সৌহার্দ্য ও শান্তিপূর্ণ বিশ্ব প্রতিষ্ঠায় আজীবন সাম্য ও মৈত্রীর বাণী প্রচার করে গেছেন। ‘অহিংস পরম ধর্ম’ বুদ্ধের এই অমিয় বাণী আজো সমাজে শান্তির জন্য সমভাবে প্রযোজ্য। আজকের এই অশান্ত ও অসহিষ্ণু বিশ্বে মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ, যুদ্ধ-বিগ্রহ, ধর্ম-বর্ণ-জাতিগত হানাহানি রোধসহ সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় মহামতি বুদ্ধের দর্শন ও জীবনাদর্শ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে আমি মনে করি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, হাজার বছরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে আমরা বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরাও যুগ যুগ ধরে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সমানভাবে অংশগ্রহণ করে আসছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, গৌতম বুদ্ধের আদর্শ ধারণ ও লালন করে সবাই বাংলাদেশকে শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখবেন।

বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে আজ বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সদস্যদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও তার স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা। বঙ্গভবনের ক্রিডেনশিয়াল হলে বিকেল ৪টায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এ সময় পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈ সিং, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান এবং বঙ্গভবনের সংশ্লিষ্ট সচিবরা এ সময় উপস্থিত থাকবেন। ৮ শতাধিক আমন্ত্রিত অতিথিসহ প্রায় ১৬’শর বেশি মানুষ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বলে বঙ্গভবন সূত্র জানিয়েছে।

এদিকে বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে গতকাল বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ‘বিশ্বশান্তি ও সম্প্রীতি র‌্যালি’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেন্টার ফর বুদ্ধিস্ট হেরিটেজ এন্ড কালচার এবং ঢাবির পালি এন্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগ যৌথভাবে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে এই র‌্যালি বের করে। প্রধান অতিথি হিসেবে র‌্যালির উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

বৌদ্ধ সাহিত্য থেকে জানা যায়, পূর্বজন্মে বোধিসত্ব সব পারমি পূরণ করে সন্তোষকুমার নামে যখন স্বর্গে অবস্থান করছিলেন, তখন দেবরা তাকে জগতের মুক্তি এবং দেবতা ও মানুষের নির্বাণ পথের সন্ধান দানের জন্য মনুষ্যকূলে জন্ম নিতে অনুরোধ করেন। দেবতাদের অনুরোধে বোধিসত্ব সর্বদিক বিবেচনাপূর্বক এক আষাঢ়ী পূর্ণিমায় স্বপ্নযোগে মাতৃকুক্ষিতে প্রতিসন্ধি গ্রহণ করেন এবং পরবর্তী এক শুভ বৈশাখী পূর্ণিমায় জন্ম লাভ করেন। গৌতম বুদ্ধের শুভজন্ম হয়েছিল লুম্বিনী কাননের শালবৃক্ষ ছায়ায় খোলা আকাশের নিচে। তার কাছে জাতি, শ্রেণি ও গোত্রের ভেদাভেদ ছিল না। তিনি মানুষকে মানুষ এবং প্রাণীকে প্রাণিরূপেই জানতেন এবং এর প্রাণসত্তার মধ্যেই যে কষ্টবোধ আছে তা তিনি মর্মে মর্মে উপলব্ধি করতেন। তিনি বলেছিলেন, ‘সবেব সত্তা ভবন্তু সুখিতত্তা’ অর্থাৎ, জগতের সব প্রাণী সুখী হোক।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App