×

জাতীয়

দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম ও বিশ্বে অষ্টম বাংলাদেশ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৩, ০৮:৩৯ এএম

দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম ও বিশ্বে অষ্টম বাংলাদেশ

ছবি: সংগৃহীত

বাল্যবিয়ে কমছে। তা সত্ত্বেও দক্ষিণ এশিয়ায় এখনো প্রতি ৪ জন তরুণীর মধ্যে একজনের ১৮ বছরের আগেই বিয়ে হচ্ছে। বাংলাদেশে বাল্যবিয়ের প্রচলন দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি এবং বিশ্বের মধ্যে অষ্টম বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ শিশু সংস্থা ইউনিসেফ। গতকাল বুধবার ইউনিসেফের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। দুপুরে সংস্থার প্রকাশিত নতুন এক বিশ্লেষণে এমন তথ্যই উঠে এসেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, শিশুদের বিয়ে দেয়া উচিত নয়। অগ্রগতি সত্ত্বেও বাংলাদেশে শিশুবধূর সংখ্যা বিস্ময়কর। লাখ লাখ মেয়ের শৈশব কেড়ে নেয়া হচ্ছে এবং তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। মেয়েরা যাতে স্কুলে যেতে পারে তা নিশ্চিত করতে এবং তারা যাতে পরিপূর্ণভাবে নিজের মাঝে থাকা সম্ভাবনা অনুযায়ী বেড়ে উঠতে পারে সে সুযোগ দিতে আমাদের জরুরি ও সমন্বিত পদক্ষেপ দরকার।

যেসব মেয়ের শৈশবে বিয়ে হয়ে যায় তাদের তাৎক্ষণিক এবং জীবনভর এর পরিণতি ভোগ করতে হয়। তাদের স্কুলে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া সম্ভাবনা খুবই কম থাকে এবং তারা অল্প বয়সে গর্ভধারণের বাড়তি ঝুঁকির সম্মুখীন হয়, ফলস্বরূপ যা শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্যের জটিলতা ও মৃত্যুর ঝুঁঁকি বাড়ায়।

২০১৯ সালের বাংলাদেশ মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভের তথ্য ব্যবহার করে তৈরি কর ইউনিসেফের এই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে ৫১ শতাংশ তরুণীর বিয়ে হয়েছিল তাদের শৈশবে। দেশটিতে বাল্যবিয়ের প্রচলন দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি এবং বিশ্বের মধ্যে অষ্টম সর্বোচ্চ। বাংলাদেশে ৩ কোটি ৪৫ লাখ নারীর বিয়ে হয়েছে তাদের বয়স ১৮ বছর হওয়ার আগে এবং ১ কোটি ৩ লাখ নারীর বিয়ে হয়েছে তাদের বয়স ১৫ বছর হওয়ার আগে।

তাতে আরো বলা হয়, গত এক দশকে শিশুবিয়ে ধারাবাহিকভাবে কমা সত্ত্বেও সংঘাত, জলবায়ুজনিত অভিঘাত ও কোভিড-১৯ এর বিরূপ প্রভাবসহ একাধিক সংকট এক্ষেত্রে কষ্টার্জিত অর্জনগুলো নস্যাৎ করে দেয়ার হুমকি তৈরি করেছে। বাল্যবিয়ে নির্মূলের ক্ষেত্রে ধীর গতি সবচেয়ে বেশি সাব-সাহারান আফ্রিকায়। ওই অঞ্চলে শিশু বিয়ের অবসানে ২শ বছরেরও বেশি সময় লাগবে।

এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বলেন, বিশ্ব একের পর সংকটে জর্জরিত, যা ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের আশা ও স্বপ্নকে চুরমার করে দিচ্ছে। বিশেষ করে যেসব মেয়েদের শিক্ষার্থী হিসেবে থাকা উচিত, তাদের বিয়ের কনে হয়ে স্বপ্ন ভাঙছে। তিনি আরো বলেন, স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক সংকট, ক্রমবর্ধমান সশস্ত্র সংঘাত এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মারাত্মক প্রভাব পরিবারগুলোকে শিশু বিয়ের মতো মিথ্যা ধারণার আশ্রয় নিতে বাধ্য করছে। শিশুদের পড়াশোনার করার ও সক্ষম জীবনের অধিকারী হওয়ার অধিকার যাতে সুরক্ষিত হয় তা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের সাধ্য অনুযায়ী সবকিছু করতে হবে।

বিশ্লেষণে অন্তর্ভুক্ত সর্বশেষ বৈশ্বিক হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী জীবিত প্রায় ৬৪ কোটি মেয়ে ও নারীর বিয়ে হয়েছে তাদের ছোটবেলায়। প্রতি বছর ১ কোটি ২০ লাখ মেয়ের বিয়ে হয় তাদের ছোটবেলায়।

৫ বছর আগে এ বিষয়ে সর্বশেষ হিসাব প্রকাশের পর, এ পর্যন্ত ছোটবেলায় বিয়ে হয়ে যাওয়া তরুণীর সংখ্যা ২১ শতাংশ থেকে ১৯ শতাংশে নেমে এসেছে। তবে এই অগ্রগতি সত্ত্বেও ২০৩০ সালের মধ্যে শিশু বিয়ের অবসান করার যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে তা পূরণের জন্য বিশ্বব্যাপী ওই কমার গতি ২০ গুণ দ্রুততর হতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App