×

সাহিত্য

শহীদ জননী জাহানারা ইমামের জন্মবার্ষিকী আজ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম

শহীদ জননী জাহানারা ইমামের জন্মবার্ষিকী আজ

শহীদ জননী জাহানারা ইমাম

শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ৯৪তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯২৯ সালের ৩ মে ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার সুন্দরপুরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। জাহানারা ইমামের বিখ্যাত গ্রন্থ ‘একাত্তরের দিনগুলি’। একাত্তরে তার জ্যেষ্ঠ পুত্র শাফী ইমাম রুমী দেশের মুক্তিসংগ্রামে অংশগ্রহণ করেন এবং কয়েকটি সফল গেরিলা অপারেশনের পর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন। পরবর্তীতে নির্যাতনের ফলে মৃত্যুবরণ করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে বিজয় লাভের পর রুমীর বন্ধুরা রুমীর মা জাহানারা ইমামকে সব মুক্তিযোদ্ধার মা হিসেবে বরণ করে নেন। রুমীর শহীদ হওয়ার সূত্রেই তিনি শহীদ জননীর মযার্দায় ভূষিত হন।

একাত্তরে একই সঙ্গে স্বামী ও সন্তানকে হারিয়েছিলেন শহীদ জননী জাহানারা ইমাম। জাহানারা ইমামের পরিবার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে।

তার ১৯ বছর বয়সী বড় ছেলে শাফী ইমাম রুমি আমেরিকায় ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ ত্যাগ করে দেশের ডাকে মৃত্যুভয়কে উপেক্ষা করে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

১৯৯২ সালের ২৬ মার্চ তার নেতৃত্বে গঠিত গণআদালতের মাধ্যমে একাত্তরের শীর্ষ নরঘাতক গোলাম আযমের প্রতীকী ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়। এরপর আমৃত্যু এই সংগ্রামী নারী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবিতে সোচ্চার ভূমিকা রেখেছেন। বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে তিনি মুক্তিযুদ্ধের মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় নিজেকে নিবেদিত করেন। যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকারদের বিচারে আনার জন্য তার প্রচেষ্টা ছিল অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য।

১৯৯১ সালের ২৯ ডিসেম্বর শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমকে জামায়াতে ইসলামী তাদের দলের আমির ঘোষণা করলে দেশের জনগণ এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। জামায়াতের এই ধৃষ্টতার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী ৭০টি রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সমন্বয়ে ১৯৯২ সালের ২১ জানুয়ারি গড়ে ওঠে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।

পরবর্তীতে আরও বিস্তৃত কলেবরে ১১ ফেব্রুয়ারি গঠিত হয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল জাতীয় সমন্বয় কমিটি। সর্বসম্মতিক্রমে এই কমিটির আহ্বায়ক নির্বাচিত হন শহীদ জননী জাহানারা ইমাম। মুক্তিযুদ্ধে স্বামী ও সন্তানহারা, দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে গোলাম আযম এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে তীব্র গণআন্দোলন গড়ে ওঠে।

জাহানারা ইমাম মৃত্যুবরণ করেন ২৬ জুন ১৯৯৪ সালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স শেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের সানডিয়াগো স্টেট কলেজ থেকে সার্টিফিকেট ইন এডুকেশন থেকে ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ আবদুল আলী ও সৈয়দা হামিদা বেগমের ঘরে জন্মগ্রহন করেন জাহানারা ইমাম। তিনি ছিলেন একজন বাংলাদেশি লেখক, কথাসাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ এবং একাত্তরের ঘাতক দালাল বিরোধী আন্দোলনের নেত্রী।

কর্মসূচি : শহীদ জননীর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি বিকাল ৩টায় জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘জাহানারা ইমামের আন্দোলন : তরুণদের করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App