×

সারাদেশ

নেত্রকোণায় স্কুলছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৩, ০২:১৩ পিএম

নেত্রকোণায় স্কুলছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যা

ছবি: সংগৃহীত

নেত্রকোণার বারহাট্টায় স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে বখাটেদের ধারালো দায়ের কুপে প্রাণ গেল স্কুলছাত্রী মুক্তি রানী বর্মনের। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (২ মে) বিকাল পৌনে ৩টার দিকে উপজেলার ছালিপুরা এলাকায়।

নিহত মুক্তি রানী বর্মন উপজেলার প্রেমনগর গ্রামের নিখিল বর্মনের মেয়ে এবং প্রেমনগর ছালিপুরা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল। অভিযুক্ত বখাটে কাওছার মিয়া একই গ্রামের শামসু মিয়ার ছেলে।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, বখাটে কাওছার প্রায়ই স্কুলে যাওয়া আসার পথে মুক্তি রানীকে উত্ত্যক্ত করতো। সর্বশেষ প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় এবং ঘটনাটি পারিবারিকভাবে জানাজানি হওয়ায় ক্ষোভ থেকে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছে বলে দাবি মুক্তি রানীর পরিবারের।

নিহত মুক্তি রানীর কাকা লিটন বর্মন জানান, স্কুলে যাওয়া আসার পথে তার ভাতিজিকে উত্যক্ত করতো বখাটে কাওছার। ঘটনাটি তার পরিবারকে জানানো হয়েছিল। এ ঘটনার পর মঙ্গলবার বিকালে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে বখাটে কাওছার তাকে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে, পরে তাকে উদ্ধার করে বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য নেত্রকোনা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পরে সেখান থেকে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মুক্তির সহপাঠীরা জানান, গতকাল পৌনে ৩টার দিকে স্কুল ছুটি হওয়ার পর তারা সবাই এক সঙ্গে বাড়ি ফিরছিল। স্কুল থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে ছালিপুরা নামক স্থানে পৌঁছানোর পর হঠাৎ কাওছার দা হাতে দৌড়ে এসে মুক্তিকে কুপাতে শুরু করে। এ সময় তারা ভয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে তাদের চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে মুক্তিকে উদ্ধার করে। খবর পেয়ে রাতেই নেত্রকোনার পুলিশ সুপার ফয়েজ আহমেদ নিহত মুক্তি রানীর বাড়িতে ছুটে যান।

এ সময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা উদ্ধার করা হয়েছে। বখাটে কাওছারকে গ্রেপ্তারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে আমরা তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবো।

প্রেমনগর ছালিপুরা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল খায়ের আকন্দ বলেন, মুক্তি রানীর পরিবার অত্যন্ত দরিদ্য। মেয়েটি শান্ত ও মেধাবী ছিল। ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। আমরা বখাটে কাওছারের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবি জানাচ্ছি।

তিনি আরো জানান, মুক্তিরা ছয় বোন সবাই লেখাপড়া করে। মুক্তি তাদের মধ্যে চতুর্থ। তার দুই বোন নেত্রকোণা সরকারি কলেজে পড়ে। আর তৃতীয়জন এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে।

নারী প্রগতি সংঘরের ব্যবস্থাপক সুরজিৎ ভৌমিক জানান, মুক্তি তাদের ইয়ুথ গ্রুপের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। সে বাল্য বিবাহ, ইভটিজিং প্রতিরোধসহ বিভিন্ন সামাজিককাজ করে আসছিল।

তিনি আরো জানান, উত্ত্যাক্তের প্রতিবাদ করায় বখাটেরা তাকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও পাশাপাশি বখাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

এদিকে, এ ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার (৩ মে) বরহাট্টা উপজেলা পরিষদের সামনে মানববন্দন ও প্রতিবাদ সমাবেশ চলছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App