×

সারাদেশ

ইউএনওকে প্রতিমাসে দিতে হয় লাখ টাকা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৩, ১০:১৪ পিএম

ইউএনওকে প্রতিমাসে দিতে হয় লাখ টাকা

ছবি: ভোরের কাগজ

মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের পেঁচারকান্দা বাজার সংলগ্ন পুরাতন ধলেশ্বরী নদীতে ড্রেজার বসিয়ে সরকারি প্রকল্পের জায়গা ভরাটের নামে লক্ষ লক্ষ টাকার মাটি বিক্রি হচ্ছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয়রা জানান, বালিয়াখোড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি মো.গোলাপ খানের তত্ত্বাবধানে ইউপি সদস্য আলমগীর হোসেন, রতন মেম্বারসহ কতিপয় ব্যক্তি দীর্ঘদিন যাবত দাপটের সঙ্গে ড্রেজার বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। এলাকার হাটবাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পাকা সেতু, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, কবরস্থান, রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি ও পাশ্ববর্তী ফসলী জমি হুমকির মুখে ফেলে তারা নদী থেকে বালু উত্তোলন করে বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করছেন। মাঝেমধ্যে পুলিশ প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের লোক দেখানো অভিযানে এ ড্রেজার বাণিজ্য কয়েক ঘন্টার জন্য বন্ধ হলেও একটা সময় যথারীতি চলতে থাকে। মাটি ব্যবসায়ীরা প্রশাসনকে টাকা দিতে দেরি করলেই তারা ড্রেজার, ভেকুর বিরুদ্ধে অভিযানে নামেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

ঘিওর, বালিয়াখোড়া ও বানিয়াজুরি ইউনিয়নের সচেতন বাসিন্দারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ড্রেজার ও ভেকু স্থায়ীভাবে বন্ধের বিষয়ে প্রশাসনের যদি একান্ত ইচ্ছা থাকতো তবে মাটি ব্যবসায়ীরা কোনদিনই এ ব্যবসায় করতে পারতেন না। প্রশাসনের লোকজন যদি মাটি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা না নিয়ে থাকেন তবে মাটি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে কেন যাচ্ছেন না? আমরা দেখছি, প্রশাসন মাঝেমধ্যে মাটি ব্যবসায়ীদের ড্রেজার ভেকু ভাঙচুর করছেন। কিন্তু এ পর্যন্ত জেল জরিমানা হয়েছে কতজনের?

বুধবার সকালে (৩ মে) সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বালিয়াখোড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গোলাপ খানের নেতৃতে আলমগীর মেম্বার ও মোশারফ হোসেন পেঁচারকান্দা বাজারের পাশে পুরাতন ধলেশ্বরী নদীতে ড্রেজার বসিয়ে সরকারি প্রকল্পে মাটি ভরাটের নামে বিভিন্ন ব্যক্তি মালিকানা জমি মাটি ভরাট করছেন। এছাড়াও, তরা শ্বশ্মানঘাট ও জাবরা বাজার থেকে ঘিওর ব্রিজ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি ড্রেজার চলমান রয়েছে।

মাটি ব্যবসায়ী গোলাপ খান প্রতিবেদককে জানান, হাবিব ভাই ড্রেজারের বিষয়ে ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে আমাদের মিডিয়া করে দিয়েছেন। সেক্ষেত্রে ইউএনও-কে প্রতিমাসে এক লাখ টাকা দিতে হয়। শুধু আমরা একাই টাকা দেইনা,এই নদীতে যতগুলো ড্রেজার চলে কেউ কি ইউএনও-কে টাকা না দিয়ে ড্রেজার চালাতে পারেন? এখানে আমি, আলমগীর মেম্বার, মোশারফসহ কয়েকজন মিলে ব্যবসা করি। এই ড্রেজারের মালিক রতন মেম্বারের ভাই আলামিন। তবে, রতন মেম্বার এখানে ব্যবসা করেন না। রতন মেম্বার আলাদাভাবে কুশুণ্ডা এলাকায় ব্যবসা করেন। তিনি প্রতিবেদককে বেশ কিছু টাকা দেবার জন্য বেশ পীড়াপীড়ি করেন এবং এ বিষয় নিয়ে নিউজ না করার অনুরোধ জানান। ঘিওর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান বলেন, আমি ড্রেজারের বিষয়ে আপোষহীন। আমি চাইনা নদীতে কোনো ড্রেজার চলুক। আমি ড্রেজারের বিষয়ে ইউএন’র সঙ্গে মধ্যস্থতা করে দিয়েছি এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা।

ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হামিদুর রহমান প্রতিবেদককে জানান, মাটি ব্যবসায়ীরা নিজেদের বাঁচাতে বিভিন্ন সময় প্রশাসন এবং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এ রকম উল্টোপাল্টা অভিযোগ করে থাকেন। গোলাপ খান যদি আমার নামে এ রকম অভিযোগ করেন আমি তার নামে মামলা দেবো। ড্রেজার ভেকুর বিষয়ে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App