হজযাত্রীরা সঙ্গে নিতে পারবেন ১২০০ ডলার

আগের সংবাদ

আকাশছুঁলো পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতি

পরের সংবাদ

আলফাডাঙ্গায় অন্তঃসত্ত্বা নারীকে মারধর, নবজাতকের মৃত্যু

প্রকাশিত: মে ২, ২০২৩ , ৯:১৯ অপরাহ্ণ আপডেট: মে ২, ২০২৩ , ৯:১৯ অপরাহ্ণ

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় হত্যাকাণ্ডের বিরোধের জের ধরে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীকে মারধরের কারণে নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (১ মে) সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় ওই নারীর নবজাতক সন্তানের মৃত্যু হয়।

নির্যাতিতা ওই নারী নাম গোলাপী বেগম (২৫)। তিনি উপজেলার পাঁচুড়িয়া ইউনিয়নের যোগিবরাট গ্রামের কৃষক ইব্রাহিম শেখের স্ত্রী।

জানা যায়, গত বছরের ২৩ মে গ্রাম্য দলাদলিকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আলফাডাঙ্গা উপজেলার যোগিবরাট গ্রামে শরীফুল ইসলাম নামে এক যুবক নিহত হয়। নিহতের ঘটনায় শরীফুলের চাচা বাদী হয়ে নির্যাতিতা ওই গৃহবধূর স্বামী কৃষক ইব্রাহিম শেখসহ আরও ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। পরবর্তীতে হত্যা মামলার আসামি ইব্রাহিম শেখ আদালত থেকে জামিন নিয়ে বাড়িতে আসে। কিন্তু জামিনে আসলেও প্রতিপক্ষের ভয়ে দীর্ঘকাল পালিয়ে বেড়াতো সে।

সর্বশেষ গত শুক্রবার সকালে ইব্রাহিম শেখ তার পাটের জমিতে কাজ করতে যায়। এই খবর পেয়ে নিহত শরীফুল ইসলামের ভাই সাগর মোল্যার নেতৃত্বে ৩০-৪০ জন লোক ইব্রাহিম শেখের উপর হামলা চালানোর চেষ্টা করে। পরে সে দৌঁড়ে অন্যত্র পালিয়ে যায়। এরপর হামলাকারীরা কৃষক ইব্রাহিম শেখের বাড়িতে এসে হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করে। এসময় বাড়িতে থাকা ইব্রাহিম শেখের সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী গোলাপী বেগমকে বাড়িতে পেয়ে হামলাকারীরা তাকে বেধড়ক লাঠিপেটা ও তলপেটে লাথি মেরে চলে যায়। পরে প্রতিবেশীরা এসে গুরুতর আহত অবস্থায় গোলাপী বেগমকে পাশ্ববর্তী বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। ওইদিন রাতেই গোলাপী বেগমের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় সিজারের মাধ্যমে কন্যা সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার দুইদিন পর নবজাতক শিশুটি মৃত্যুবরণ করে।

নির্যাতিতা ওই গৃহবধূর স্বামী ইব্রাহীম শেখ জানান, ‘হামলাকারীরা বাড়িতে আমাকে না পেয়ে আমার বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে। বাড়িতে থাকা আমার সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে একা পেয়ে তারা প্রচুর নির্যাতন করে। পরবর্তীতে আমার স্ত্রীর রক্তক্ষরণ শুরু হলে সিজার করা হয়। সিজারের দুইদিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমার নবজাতক কন্যা সন্তানের মৃত্যু হয়। শিশুটির শরীরেও আঘাতের কালো দাগ ছিলো। তাদের নির্যাতনের কারণে আমার সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।’

এদিকে অভিযুক্তদের বাড়িতে গেলে কাউকে খুঁজে না পাওয়ায় তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু তাহের ভোরের কাগজকে বলেন, নবজাতক ওই শিশুটির মরদেহ গ্রামে আসলে পুলিশি টহল মোতায়েন করা হয়। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

তিনি আরও জানান, নবজাতক শিশুটি মারা যাওয়ার আগেই ওই গৃহবধূকে মারধর, বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় মামলা অর্ন্তভূক্ত করা হয়েছে। মামলা তদন্তকালে চিকিৎসকের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে নবজাতকের মৃত্যুর বিষয়টি আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

এনজে

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়