×

জাতীয়

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পেয়েছে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:০৮ পিএম

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পেয়েছে

শনিবার বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশের জ্বালানি সমৃদ্ধি-২০৫০’ (বিইপি ২০৫০)-শীর্ষক সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং ভোরের কাগজের প্রকাশক সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি। ছবি: মাসুদ পারভেজ আনিস

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পেয়েছে
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পেয়েছে

বিশ্বের ৭০ কোটি মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার বাইরে থাকলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক নেতৃত্বে বাংলাদেশের শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পেয়েছে। আমাদের জিডিপি ৯৫ বিলিয়ন ডলার থেকে পাঁচ গুণ বেড়ে ৪৮৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছার পেছনে প্রধান চালিকা শক্তি হলো বিদ্যুৎ শক্তি। নবায়নযোগ্য জ্বালানির ভবিষ্যৎ সার্বিক প্লান তৈরী করতে হবে। এই খাতে বিনিয়োগের ফল কি হবে, বিনিয়োগ থেকে কি রিটার্ন পাওয়া যাবে, ভবিষ্যৎ কি হবে-এসব বিষয়ে সরকারকে সঠিক তথ্য দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি।

শনিবার (২৯ এপ্রিল) বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশের জ্বালানি সমৃদ্ধি-২০৫০’ (বিইপি ২০৫০)-শীর্ষক সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্যকালে তিনি এসব কথা বলেন। সম্মেলন থেকে নীতিনির্ধারক ও সুশীল সমাজের ২৭৩ জন প্রতিনিধি ২১ দফা ঘোষণা পেশ করেন। সভাপতিত্ব করেন তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারপারসন হাসানুল হক ইনু এমপি এবং সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারপারসন ও বাংলাদেশের জলবায়ু সংসদের সহ-সভাপতি ওয়াসিকা আয়েশা খান এমপি।

সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, আমরা যদি আমাদের যুক্তি বা চিন্তা পরিকল্পনা অনুযায়ী সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারি তাহলে আমরা যে সমন্বিত মাস্টারপ্লানের কথা বলছি, সেটা আমাদের প্রত্যাশা বা চাহিদা অনুযায়ী হবে। ২০০৮ সালে আমাদের জিডিপি ছিলো ৯৫ বিলিয়ন ডলার, এখন সেটা পাঁচ গুণ বেড়ে ৪৮৫ বিলিয়ন ডলারে এসে দাড়িয়েছে। এই সক্ষমতার পেছনে আমাদের যে প্রধান চালিকা শক্তি ছিলো তা হলো বিদ্যুৎ শক্তি। এই যে আমরা শতভাগ বিদ্যুতায়ন নিশ্চিত করলাম, অথচ আপনারা খোঁজ নিলে দেখবেন পৃথিবীতে এখনো ৭০ কোটি মানুষ আছে যাদের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি। কিন্তু বাংলাদেশের সবার কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে এবং এটা নিশ্চিত যে সরকার এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক নেতৃত্বের কারণে সবার কাছে বিদ্যুৎ পৌছেছে।

তিনি আরো বলেন, কেন বিদ্যুতে ভতুর্কি দেয়া হলো তা নিয়ে কথা হচ্ছে। আজকের আলোচনায় বলা হয়েছে- আমরা যে ৮ বিলিয়ন ডলার সাবসিডি দেই-তা কেন দেয়া হচ্ছে। আমাদের ইন্ট্রিগ্রেটেড এনার্জি ও পাওয়ার মাস্টারপ্ল্যান আছে সেখানে ২০২৩ সালে চাহিদা দেখানো হয়েছিলো প্রায় ৩০ শতাংশ। বাস্তবে বর্তমানে সেই চাহিদা হচ্ছে সাড়ে ১৪-১৫ শতাংশ। এর মানে হচ্ছে চাহিদা ও বাস্তবতার মধ্যে অনেক দূরত্ব রয়েছে। চাহিদার দিকে নজর রেখে এরপর সরকার যে কোনো উপায়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ভর্তুকি দিয়েছে।

বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বলেন, বিদেশি পরামর্শক আসবে, তারা তাদের সুপারিশ দেবে, সেই সুপারিশের আলোকে সরকার ব্যবস্থা নেবে ও দেশের মানুষের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্থ হবে এটা হতে দেয়া যাবে না। আগামীতে তারা যে রিপোর্ট দেবে এবং ওই রির্পোট যে পুরোপুরি সঠিক হবে এ বিষয়ে আমরা নিশ্চিত না। চীন, জাপান বা আমেরিকা তাদের দেশের প্রযুক্তিকে প্রোমোট করার জন্য যদি আমাদের দেশের ওপর চাপিয়ে দেয় তাহলে সেটা নেয়া ঠিক হবে না। কারন তাদের প্রযুক্তি ২০৫০ সালে কতটা প্রযোজ্য হবে সেটাও খতিয়ে দেখতে হবে। আমার মূল উদ্দেশ্য ছিলো একটি প্লাটফর্ম তৈরী করা। প্লাটফর্মে নানান মতামত থাকবে। আমার কাছে যেটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে, ইন্ট্রিগেটেড এনার্জি মাস্টার প্লান যেটা হতে যাচ্ছে তাতে আমাদের চাহিদাটা যেন সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হয়। সংসদ সদস্য হিসাবে আমাদের কাজ হচ্ছে এই বিষয়গুলো সামনে তুলে ধরা। আমাদেরকে নবায়নযোগ্য জ্বালানির একটি সার্বিক প্লান তৈরী করতে হবে। এই খাতে বিনিয়োগের ফল কি হবে, বিনিয়োগ থেকে কি রিটার্ন পাওয়া যাবে, ভবিষ্যৎ কি হবে এসব বিষয়ে সরকারকে সঠিক তথ্য দিতে হবে। আইইপিএমপিতে সঠিক বিদ্যুৎ নিশ্চিত করা এবং ভর্তুকির লোকসান থেকে নিস্তার পাওয়া অত্যন্ত জরুরি। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, পরিবেশ মন্ত্রণালয়, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয় ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়- চারটি কমিটি এই বিষয়গুলো বাস্তবায়নের জন্য একসঙ্গে কাজ করবে। আমাদেরকে অবশ্যই উন্নয়ন অংশীদারদের জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে এবং বাংলাদেশের স্বার্থের উপর ভিত্তি করে প্রযুক্তি অবলম্বন করতে হবে।

হাসানুল হক ইনু বলেন, আমাদের অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে সম্ভাব্য জ্বালানির চাহিদার পরিধি সঠিকভাবে যাচাই করা হয়েছে এবং আনুমানিক উৎপাদন নির্ভুল ও জবাবদিহিমূলক। জ্বালানি উৎপাদনের জন্য চাহিদার অতিরিক্ত ক্ষমতা ও অবকাঠামো নির্মাণ বাংলাদেশের জন্য আর্থিক ও পরিবেশগতভাবে ক্ষতিকর। আমাদের নীতি পরিকল্পনা করার আগে আমাদের হিসেবে-নিকেশে কোনো ভুল হল কিনা তা লক্ষ্য রাখতে হবে।

ওয়াসিকা আয়েশা খান বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানির ভর্তুকি এবং শুল্ক বন্ধ করার এবং সবুজ শিল্পায়নের দিকে ঐক্যবদ্ধ, সুসংগতভাবে এগিয়ে যাওয়ার জন্য এখনই সময়। এটি বাস্তবায়নে বেসরকারি ও সরকারি উভয় ক্ষেত্রে সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং আন্তঃমন্ত্রণালয় সহযোগিতা প্রয়োজন। উদ্যোক্তাদের উচিত উপলব্ধ টেকসই অর্থায়ন প্রক্রিয়া ও উন্নয়নের নিয়ামক সম্পর্কে সচেতন হওয়া। এক্ষেত্রে আমাদের দেশের রাজনৈতিক সদিচ্ছা অত্যন্ত সুদৃঢ়, কারণ আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এমসিপিপি অর্জনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তবে এটিকে বাস্তবে পরিণত করার জন্য আমাদের অবশ্যই একটি সমন্বিত পন্থা অবলম্বন করতে হবে।

সমাপনী অধিবেশনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও জলবায়ু সংসদ বাংলাদেশের আহ্বায়ক নাহিম রাজ্জাক এমপি। সম্মেলনে উপস্থিত নীতিনির্ধারক, বিশেষজ্ঞ ও সুশীল সমাজের সংগঠনগুলো দ্রুত জীবাশ্ম জ্বালানি ফেজ আউটের দাবি তোলে ও জ্বালানি রূপান্তরের আহ্বান জানান। ২৭৩ জন প্রতিনিধি ২১ দফা ঘোষণা পেশ করেন। বিদেশি অতিথিদের সম্মাননা দেয়া হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App