×

ফিচার

সোনার ফসল ঘরে তুলতে কৃষকদের ‘হোড়ায়’ বসতি স্থাপন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২৩, ০৩:২২ পিএম

সোনার ফসল ঘরে তুলতে কৃষকদের ‘হোড়ায়’ বসতি স্থাপন

ছবি: শান্তিগঞ্জ (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি

হাওরাঞ্চল সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হয়েছে। হাওরপাড়ের সকল বয়সের মানুষ এখন সগান ঘরে তুলার যুদ্ধে সামিল। চারিদিকে মনোরম পরিবেশ বিরাজ করছে। কৃষক পরিবারগুলোর চোখেমুখে আনন্দের ছাপ। সবাই এখন ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। আর এই ধান সংগ্রহ ও তদারকি করার জন্য হোড়ায় বসতি শুরু করেছেন হাওরপাড়ের কৃষকরা। কৃষি বিভাগ কৃষকদের ধান দ্রুত ঘরে তোলার জন্য ভর্তুকি মূল্যে হারভেস্টার মেশিন দেয়ায় লাভবান হচ্ছেন অনেক কৃষক। এই সোনার ফসল ধান ঘরে তুলার জন্যই কৃষকের এত আপ্রাণ চেষ্টা, ঘাম ঝরা কষ্ট।

বুধবার (২৬ এপ্রিল) শান্তিগঞ্জের সাংহাই হাওর ও দেখার হাওরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ধান ঘরে তোলার জন্য হাওরে শতাধিক ছোট ছোট অস্থায়ী ঘর রয়েছে। বিশাল হাওরের এক কোনায় অস্থায়ী ছনের ঘরে রাত্রিযাপন করার জন্যই হোড়া তৈরি করা হয়েছে। ঝড়বৃষ্টি, বজ্রপাতের মধ্যেই সারারাত এই অস্থায়ী ঘরেই রাত্রিযাপন করেন কৃষকরা। এছাড়া দিনের বেলাও প্রচন্ড রোদ, ঝড়বৃষ্টি এবং বজ্রপাতের সময়ে এই অস্থায়ী ঘরেই আশ্রয় নিয়ে থাকেন কৃষক কৃষাণীরা। তাছাড়া এখানে কৃষি কাজের পাশাপাশি রান্নার জন্য চুলা বানিয়ে রান্না-বান্না করছেন তারা। মূলত থাকা-খাওয়া বিশ্রাম সব কিছু হচ্ছে হাওরের হোড়া নামক ছোট এই ঘরটিতে।

কৃষক আজাদ মিয়া জানান, তার কোন জমি নেই। তারপর বছরের খাবার জোগাড় করতে স্ত্রী সন্তান নিয়ে সাংহাই হাওরের এক খন্ড অনাবাদি উঁচু জমিতে ছন ও বাঁশ দিয়ে অস্থায়ী ছোটঘর (স্থানীয় ভাষায় হোড়া) বানিয়েছেন। গত এক সপ্তাহ ধরে সাংহাই হাওরেই রাত্রীযাপন করছেন।

আরেক কৃষক সলিম মিয়া জানান, সাংহাই হাওরে তাদের দুই হাল (১২ কেদারে এক হাল) জমি আছে। বাড়ি থেকে জমির দুরত্ব অনেক বেশি হওয়ায় হাওরে ধান কেটে মাড়াই দিয়ে বস্তাবন্দি করে রাখছেন। পরে গাড়ি দিয়ে ধান বাড়ি নিয়ে যাবেন। তাই হাওরে অস্থায়ী হোড়া বানিয়ে বসতি স্থাপন করেন। রান্না-খাওয়া সব কিছুই এখন হাওরে।

উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রভাষক নূর হোসেন বলেন, এখন ধান তোলা নিয়ে কৃষকদের মধ্যে অন্যরকম উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছে। উপজেলার বেশি সংখ্যক হাওরেই এখন মানুষের ভিড় চোখে পড়ার মতই। আশা করা যায় ঠিকঠাক মতই ফসল ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকরা।

কৃষি কর্মকর্তা খন্দকার সোহায়েল আহমেদ বলেন, এ বছর ফসল ভালো হওয়ার কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয়ে কিছুদিনের মধ্যে হাওরের ধান কাটা শেষ হবে৷ ধানের নায্য মূল্য থাকায় কৃষকরা লাভবান হবেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App