×

সারাদেশ

শাল্লায় আগাম ঢলের বার্তায় শঙ্কিত কৃষক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২৩, ০৭:২৯ পিএম

শাল্লায় আগাম ঢলের বার্তায় শঙ্কিত কৃষক

ছবি: ভোরের কাগজ

বোরোধান গোলায় তুলতে ধান কাটার ধুম

শাল্লায় আগামী ২৩ এপ্রিল থেকে টানা ১১ দিন ভারি বৃষ্টিপাতের আগাম বার্তায় কৃষকের কপালে যেন চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। আতঙ্ক রয়েছে শিলাবৃষ্টিরও। এই সংবাদ লেখাকালীন সময়েও উপজেলার বিভিন্ন স্থানে শিলাবৃষ্টি হয়েছে। কিছুটা হলেও ক্ষতি হয়েছে এই শিলাবৃষ্টিতে। এরপূর্বেও দুই দফা শিলাবৃষ্টিতে উপজেলার বেশকিছু এলাকায় ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ফলে দ্রুত ধান কাটার জন্য উপজেলা প্রশাসন মাইকিংও করেছে।

এমন খবর পেতেই ঘরে বসে নেই নববধূ থেকে শুরু করে স্কুলের কোমলমতি শিশুরাও। তারাও ধান কাটছেন প্রখর রোদ উপেক্ষা করে। কেউ কেউ আবার আধপাকা ধান কাটতেও দেখা গেছে। ধান কাটার শ্রমিকের সংকট থাকলেও কম্বাইন্ড হারফেস্টার, রিপার মেশিনে ধান বেশি কাটছে। ২০ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) সরেজমিনে উপজেলার সবচেয়ে বৃহৎ ছায়ার হাওর ঘুরে এমন দৃশ্যই দেখা যায়। উপজেলা অন্যান্য হাওরগুলোতেও ঘুরে দেখা যায় বছরের একমাত্র রোবো ধান গোলায় তুলতে ধান কাটার ধুম লেগেছে।

তবে আগাম জাতের ধানের ফলন ভালো না হলেও কৃষি, জনকসহ অন্যান্য হাইব্রিড জাতের ধানের ফলন হয়েছে বেশ ভালো। ছায়ার হাওরের কৃষকরা বলছেন এপর্যন্ত ধান কাটা হয়েছে ২৫ ভাগ। হাওর বাঁচাও আন্দোলন উপজেলা কমিটি সহ সভাপতি রঞ্জন কুমার বৈষ্ণব বলেন আমার এলাকায় ধান কাটা হয়েছে ২৫ ভাগেরও কম। উপজেলায় এখন পর্যন্ত ৩৫ ভাগেও কম কাটা হয়েছে বলে জানান তিনি।

অন্যদিকে বাহাড়া গ্রামের কৃষক নরেন্দ্র কুমার দাস বলেন, আমার ৩ কেয়ার জমির মধ্যে মাত্র ১ কেয়ার কাটতে পেরেছি। ২ কেয়ার জমি এখনও কাটার বাকি আছে।

হাওর বাঁচাও আন্দোলন শাল্লা শাখার আরেক সহ সভাপতি হাবিবুর রহমান চৌধুরী বলেন, আমি জমি করেছি ৬০কেয়ার। আমি অর্ধেক কাটতে পারলেও সাধারণ কৃষকরা অর্ধেক কাটতে পারেননি। সার্বিকভাবে দেখলে উপজেলায় এখনও ৪০ভাগ ধানই কাটা হয়নি।

উপজেলার আনন্দপুর গ্রামের কৃষক সুবোধ চন্দ্র দাশ বলেন, আমি জমি করেছি ২৪ কেয়ার। কাটতে পেরেছি মাত্র ৭ কেয়ার। ছায়ার হাওরে এখন পর্যন্ত ২৫ ভাগেও কম ধান কাটা হয়েছে বলে জানান তিনি।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে বড় বড় কৃষকদের কাছে কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন থাকায় তারা অর্ধেক ধান কাটতে পেরেছেন। এক্ষেত্রে ধান কর্তনের দিক দিয়ে সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছেন মধ্যবিত্ত কৃষকরা। তাদের চেয়ে আরও পিছিয়ে রয়েছেন বর্গাচাষীরা।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তালেব বলেন উপজেলায় ধান কাটার জন্য কম্বাইন্ড হারফেস্টার মেশিন রয়েছে ৬০টি। ২৩ এপ্রিল থেকে ঝড়বৃষ্টি শুরু হলে নদীর পানি বৃদ্ধি পাবে। ফলে কৃষকদের দ্রুত ধান কর্তনের জন্য মাইকিং করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ধান কর্তন করা হয়েছে ৬৬ ভাগ বলে জানান তিনি।

অন্যদিকে হাওর বাঁচাও আন্দোলন শাল্লা উপজেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক তরুণ কান্তি দাস বলেন ৬৬ ভাগ কর্তন হয়েছে এই তথ্য সঠিক নয়। আমরা বিভিন্ন গ্রাম এবং হাওরে খোঁজ নিয়ে জেনেছি এখনও হাওরে ৬৫ ভাগ ধান কর্তন বাকি রয়েছে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, উপজেলার ৬টি হাওরে এবছর বোরোধান আবাদ করা হয়েছে ২২হাজার হেক্টর জমিতে। উৎপাদিত ধানের চালের লক্ষমাত্রা রয়েছে ১লাখ মেট্রিক টন। যার বাজারমূল্য প্রায় সাড়ে তিনশ কোটি টাকা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App