লাখো বছরের পুরনো ভাইরাস ক্যান্সার প্রতিরোধে সক্ষম!
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৩, ১২:২৮ এএম
লাখ লাখ বছর ধরে মানবদেহের ডিএনএর ভেতরে সুপ্ত এমন একটি প্রাচীন ভাইরাসের ধ্বংসাবশেষ, যা ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শরীরকে সাহায্য করে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
ফ্রান্সিক ক্রিক ইন্সটিটিউটের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, শরীরে ক্যান্সার কোষগুলো যখন ছড়িয়ে পড়ছে তখন পুরনো এই ভাইরাসের সুপ্ত থাকা অবশিষ্টাংশ জেগে উঠছে। খবর বিবিসির।
এটা অবচেতন মনেই টিউমারকে টার্গেট বানিয়ে আক্রমণ করতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে।
গবেষক দল তাদের এই উদ্ভাবনকে এখন ক্যান্সার চিকিৎসা বা প্রতিরোধের জন্য ভ্যাকসিন তৈরির কাজে লাগাতে চান।
গবেষণায় তারা দেখেছেন যে ফুসফুস ক্যান্সার থেকে সেরে ওঠা ও রোগ প্রতিরোধ প্রক্রিয়ার একটি অংশ যাকে বি-সেল বলা হয় ও এটি টিউমারকে ঘিরে গুচ্ছ আকারে থাকে-এর মধ্যে যোগসূত্র আছে।
বি-সেল শরীরের একটি অংশ যা এন্টিবডি তৈরি করে। এটি বিশেষভাবে পরিচিত কোভিডের মতো ইনফেকশনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভূমিকার জন্য।
এরা ফুসফুস ক্যান্সারে কী করে সেটি রহস্য। কিন্তু মানুষ ও প্রাণীর স্যাম্পল নিয়ে অনেকগুলো পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে তারা এখনো ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে উদগ্রীব।
অ্যান্টিবডি যেসব ভাইরাসকে শনাক্ত করছে সেগুলোর মাত্রা হ্রাস করতে সহায়তা করছে সুপ্ত থাকা রেট্রোভাইরাস,”
রেট্রোভাইরাসের তাদের ভেতরেই তাদের নিজস্ব জেনেটিক নির্দেশনার কপি রেখে দেয়ার এক ধরণের কৌশল আছে।
এর আট শতাংশের বেশি যাকে আমরা হিউম্যান ডিএনএ মনে করি, সেটি প্রকৃতপক্ষে এ ধরনের ভাইরাসের উৎস।
ফ্রান্সিস ক্রিক ইন্সটিটিউটের অ্যাসোসিয়েট রিসার্চ ডিরেক্টর প্রফেসর জুলিয়ান ডাউনওয়ার্ড বলেন, কিছু রেট্রোভাইরাস কোটি বছর আগে জেনেটিক কোডের ফিক্সচারে পরিণত হয়েছিলো ও আমাদের বিবর্তনের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিষয়গুলো ধারণ করেছে।
তিনি আরো বলেন, অন্য রেট্রোভাইরাসগুলো হয়তো কয়েক হাজার বছর আগে আমাদের ডিএনএতে প্রবেশ করেছে।
তিনি বলেন, সময়ের আবর্তে বাইরের নির্দেশনাগুলো কো-অপ্ট হয়েছে ও শরীরের কোষের মধ্যে কাজ করেছে। কিন্তু অন্যগুলো সেটি ছড়াতে শক্তভাবে বাধা দিয়েছে।
তবে ক্যান্সারে আক্রান্ত কোষগুলোর মধ্যে তখন গণ্ডগোল লেগে যায় যখন এটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় আর যখন প্রাচীন ভাইরাসগুলোর নিয়ন্ত্রণ কমে যায়।
প্রাচীন জেনেটিক নির্দেশনাগুলো আর নতুন করে ভাইরাসের পুনরুত্থান ঘটাতে পারে না কিন্তু ভাইরাসকে খণ্ড খণ্ড করতে পারে। আর সেটাই শরীরের ভেতরে ভাইরাল থ্রেটকে বা রোগের হুমকিকে চিহ্নিত করতে রোগ প্রতিরোধ প্রক্রিয়ার জন্য যথেষ্ট।