×

জাতীয়

নতুন উদ্যোমে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশায় শুরু মঙ্গল শোভাযাত্রা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:২৯ এএম

https://www.youtube.com/watch?v=Btm9h7MVOfE

পুরোনো গ্লানি, হতাশা আর মলিনতাকে পেছনে ফেলে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশায় বাংলা নতুন বছর ১৪৩০-কে বরণ করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়(ঢাবি) ক্যাম্পাসে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়েছে।

‘বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে শুক্রবার (১৪ এপ্রিল-পহেলা বৈশাখ) সকাল ৯ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে এই মঙ্গল শোভাযাত্রাটি শুরু হয়। শোভাযাত্রাটি শাহবাগ মোড় হয়ে পুনরায় চারুকলা অনুষদে গিয়ে শেষ হবে। এছাড়াও রমজান মাস হওয়ায় এবারের পয়লা বৈশাখের সকালে পান্তা-ইলিশের আয়োজন হয়নি।

 

তবে মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ চারুকলায় এসেছেন। শোভাযাত্রায় বিদেশি নাগরিকদেরও দেখা গেছে। তারা ব্যাপক আগ্রহ ও উচ্ছ্বাসের সঙ্গে তারা শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করছেন।

এদিকে শোভাযাত্রায় অংশ নিতে আসা নারী-পুরুষদের পোশাকের মধ্যে যথাক্রমে শাড়ি ও পাঞ্জাবি দেখা গেছে। নারীদের খোঁপায় লক্ষ করা গেছে বাহারি রংয়ের ফুল। নারী-পুরুষের পাশাপাশি শিশুদের পোশাকে রয়েছে বৈচিত্রতা। শিশুরাও মেতেছে রং বেরংয়ের পোশাকে। সবার চোখে-মুখেই এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়।

[caption id="attachment_422788" align="alignnone" width="1280"] ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]

এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রায় প্রতিকৃতি হিসাবে আছে হাতি, বাঘ, টেপা পুতুল, নীলগাই ও ময়ূর। এছাড়াও প্রদর্শনীর জন্য বিভিন্ন মুখোশ, পেঁচা, ঘোড়া, মূর্তি, ট্যাপা পুতুল, নকশি পাখি, বিভিন্ন প্রাণীর প্রতিকৃতি লক্ষ করা গেছে।

শোভাযাত্রার আয়োজনের দায়িত্বে থাকে চারুকলা অনুষদের ২৪ ও ২৫তম ব্যাচ এবং অনুষদের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে কর্মশালায় আঁকা ছবি ও বিভিন্ন শিল্পকর্ম বিক্রির টাকায় শোভাযাত্রা আয়োজন করা হয়েছে৷

শোভাযাত্রাকে ঘিরে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকেই পুরো ক্যাম্পাস এলাকায় কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়। মোতায়েন আছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য।

পহেলা বৈশাখ শান্তিপূর্ণভাবে পালন করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। তন্মধ্যে আজ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের মুখোশ পরিধান এবং ব্যাগ বহন করা যাবে না।তবে চারুকলা অনুষদ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত মুখোশ হাতে নিয়ে প্রদর্শন করা যাবে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভুভুজেলা বাঁশি বাজানো ও বিক্রি করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এছাড়াও দিনের সব অনুষ্ঠান বিকেল পাঁচটার মধ্যে শেষ করতে হবে।

পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে আজ ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের যানবাহন ও মোটরসাইকেল চালানো সম্পূর্ণ নিষেধ।বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বসবাসরত ব্যক্তিরা নিজস্ব গাড়ি যাতায়াতের জন্য শুধুমাত্র নীলক্ষেত মোড় সংলগ্ন গেট ও পলাশী মোড় সংলগ্ন গেট ব্যবহার করতে পারবেন।

[caption id="attachment_422789" align="alignnone" width="1280"] ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]

এছাড়াও আজ রাজু ভাস্কর্যের পেছনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেট বন্ধ থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আগত ব্যক্তিবর্গ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশের জন্য চারুকলা অনুষদ সম্মুখস্থ ছবির হাটের গেট, বাংলা একাডেমির সম্মুখস্থ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেট ও ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট সংলগ্ন গেট ব্যবহার করতে পারবেন।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে প্রস্থানের পথ হিসেবে ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট সংলগ্ন গেট, রমনা কালী মন্দির সংলগ্ন গেট ও বাংলা একাডেমির সম্মুখস্থ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেট ব্যবহার করতে পারবেন।

নববর্ষ উপলক্ষে নিরাপত্তার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামরা ও আর্চওয়ে স্থাপন করা হয়েছে।

সামরিক শাসনের অন্ধকার ঘোচানোর আহ্বানে ১৯৮৯ সালে পয়লা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে প্রথম শোভাযাত্রা বের হয়। এটিই পরে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নাম ধারণ করে। গত তিন দশক ধরে প্রতি বছরই পয়লা বৈশাখে চারুকলার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হচ্ছে। যা ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর ইউনেস্কো এ শোভাযাত্রাকে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মর্যাদা দেয়। মঙ্গল শোভাযাত্রাকে বাঙালির হাজার বছরের অসাম্প্রদায়িক ঐতিহ্যের মেলবন্ধনের মাধ্যমে কূপমণ্ডূকতা ও সংকীর্ণতার ঘৃণ্য অবয়বের ওপর সাংস্কৃতিক আঘাত হিসেবে দেখা হয়ে থাকে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App