×

সারাদেশ

সাংগ্রাই উৎসবে থানচিতে মঙ্গল শোভাযাত্রা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল ২০২৩, ০৩:২৮ পিএম

সাংগ্রাই উৎসবে থানচিতে মঙ্গল শোভাযাত্রা

ছবি: থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধি

সাংগ্রাই উৎসবে থানচিতে মঙ্গল শোভাযাত্রা

ছবি: থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধি

বান্দরবানে থানচি উপজেলা মঙ্গল শোভাযাত্রা ও সমাবেশে মধ্য দিয়ে শুভ সূচনা হলো মারমা সম্প্রদায়ের নববর্ষ বরণের প্রাণের উৎসব মাহা ‘সাংগ্রাই পোওয়ে’। উপজেলা ৪টি ইউনিয়নের শতাধিক পাড়া ও গ্রামে বর্ষবরণের এই উৎসবকে কেন্দ্র করে ঐতিহ্যবাহী নতুন পোষাক পরে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে সাজসাজ রব পড়েছে। সকল বয়সের সম্মিলিতভাবে পবিত্র মৈত্রী পানি বর্ষণের (জলকেলি) মাধ্যমে পুরাতন বছরের ক্লান্তিহীন কর্মকাণ্ডকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে স্বাগতম ও অভিনন্দন জানানো হয়। এদিকে, প্রতিবছরের ন্যায় মারমাদের মাহা সাংগ্রাইংপোওয়ে উৎসবকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) সকালে উপজেলা মাহা সাংগ্রাইং পোওয়ে উৎসব উদযাপন পরিষদের আয়োজনে উপজেলা সদরে বঙ্গবন্ধু মুক্ত মঞ্চ থেকে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা মাধ্যমে শুভ সুচনা হয়। শোভাযাত্রাটি উপজেলা সদরে জনগুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে স্থানীয় মাল্টিপারপাশ হল রুমে শেষ হয়। এ সময় ১১টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীরা বৈচিত্রময় ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে ঐতিহ্যবাহী পোশাকে শোভাযাত্রায় অংশ গ্রহণ করে। এ সময় মারমা সম্প্রদায়সহ ১১টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায় ছাড়াও সমতল অঞ্চলে নারী পুরুষ অংশ গ্রহণ করেন। স্থানীয় মাল্টিপারপাশ হল রুমে মাহা সাংগ্রাইং পোওয়ের বিষয়ক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে উৎযাপন কমিটি সভাপতি হ্লামংউ মারমা সভাপতিত্ব করেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সাংগ্রাই উৎসবের শুভ সূচনা করেন উপজেলা চেয়ারম্যান থোয়াইহ্লামং মারমা। [caption id="attachment_422569" align="alignnone" width="1280"] ছবি: থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধি[/caption] উদযাপন কমিটি সহসভাপতি মেমংসিং মারমা সঞ্চালনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মুহা. আবুল মনসুর, ভাইস চেয়ারম্যান চসাথোয়াই মারমা,নারী ভাইস চেয়ারম্যান নুমেপ্রু মারমা, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি ইমদাদুল হক, প্রেস ক্লাবের সভাপতি মংবোওয়াংচিং মারমা অনুপম, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান উবামং মারমা, বান্দরবান জজ্ আদালতে নবীন আইনজীবী সিংথোয়াইমং মারমা, ইউপি মেম্বার হ্লাচিংমং মারমা, থুইমংপ্রু মারমাসহ সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন কর্মকর্তা ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। উপজেলা কেন্দ্রীয় সাংগ্রাইং পোওয়ে উৎসব উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক থোয়াইহ্লাঅং মারমা বলেন, আগামী ১৪ এপ্রিল দুপুরে শংঙ্খ নদীর পাড়ে বুদ্ধ মূর্তি স্নান, রাতে পাড়ায় পাড়ায় বিনি ধানের পিঠা উৎসব, ১৫ এপ্রিল থানচি হেডম্যান পাড়া বৌদ্ধ বিহারের ধর্ম দেশনা, শীল গ্রহণ, পিন্ড দান, ১৬ এপ্রিল সন্ধ্যা হাজার প্রদীপ প্রজ্জলন, ১৮ এপ্রিল মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে পবিত্র মৈত্রী পানি বর্ষণ ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে মারমা সম্প্রদায়ের এই এতিহ্যবাহী এবারের সাংগ্রাই উৎসবের। উদযাপন কমিটি সভাপতি হ্লামংউ মারমা বলেন, পবিত্র মৈত্রি পানি বর্ষণ (জলকেলি) উৎসবের সময় তরুণ-তরুণীরা নির্ধারিত মঞ্চে অবস্থানের মাধ্যমে তরুণদের প্রান্তে নৌকা ভর্তি জলধারের জল, একটি করে মগ। একইভাবে তরুণীদের সামনে নৌকা ভর্তি জলাধারে জল রাখা থাকে। এক একজন তরুণ একজন তরুণীর দেহে জল ছিটায়। আর ওই তরুণীও ওই তরুণের দেহে পাল্টা জল ছিটিয়ে তার প্রতি উত্তর হলো জলকেলি। উল্লেখ্য, পাহাড়ের চাকমা সম্প্রদায়রা এই উৎসবকে বিঝু, মারমা’রা সাংগ্রাই এবং ত্রিপুরারা বৈসু বা বৈসুক বলে। ত্রিপুরাদের বৈসুর (বৈ), মারমাদের সাংগ্রায়ের (সা) চাকমাদের বিঝুর (বি) থেকে “বৈসাবি”। মারমা সম্প্রদায়ের বর্ষবরণের এই উৎসব ‘সাংগ্রাই’ নামে পরিচিত।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App