×

মুক্তচিন্তা

পবিত্র রমজানের শ্রেষ্ঠত্ব

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ এপ্রিল ২০২৩, ১২:০৮ পিএম

পবিত্র রমজানের শ্রেষ্ঠত্ব

ফাইল ছবি

সময়ের স্রষ্টা মহান আল্লাহ তায়ালা। বছরের যে কোনো মাসের, দিবসের ও মুহূর্তের তাৎপর্যময় গুরুত্ব রয়েছে। সে জন্য সময়কে খারাপ ভাবা অথবা সময় সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করা ঠিক নয়। তবে মহান আল্লাহ সৃষ্ট ও প্রদত্ত এই সময়ের অবস্থা এবং উপলক্ষ ভেদে গুরুত্ব-শ্রেষ্ঠত্বের পার্থক্য রয়েছে। বছরের ১২ মাসের মধ্যে মাহে রমজানের আলাদা মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব মহান আল্লাহ কর্তৃক স্বীকৃত। তাই এ মাসের রহমত, বরকত ও ফজিলতের কোনো সীমা-পরিসীমা নেই। পবিত্র কুরআন ও মহানবী (সা.)-এর বাণীর মাঝে রমজান মাসের এই শ্রেষ্ঠত্ব ও প্রাধান্য ফুটে উঠেছে।

মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, লিকুল্লি আমালিন কাফ্ফারাহ ওয়াস্সাওমুলি ওয়া আনা আজযি বিহি অর্থাৎ প্রতিটি আমলেরই রয়েছে কাফ্ফারাহ। আর রোজা কেবলমাত্র আমারই জন্য এবং আমি নিজেই এর প্রতিদান দেব। তিনি আরো বলেছেন, মানব সন্তানের প্রতিটি আমলের প্রতিদান কখনো কখনো অবস্থাভেদে ১০ গুণ থেকে ৭০০ গুণ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়া হয়; কিন্তু রোজার ক্ষেত্রটি এর বাইরে। কেননা এর পুরস্কার মহান আল্লাহ নিজেই প্রদান করবেন। এতে বোঝা যায়, পবিত্র রমজানের প্রতিদানের বিষয়টি স্বয়ং খোদা তায়ালা সংরক্ষণ করেন এবং তিনি কখনো সিয়ামব্রত পালনকারী বান্দাকে নিরাশ করবেন না। বরং বান্দার প্রত্যাশার চাইতেও বেশি পরিমাণে ফায়দা অর্জনের নিশ্চয়তা রয়েছে এই রমজান পালনের মধ্য দিয়ে; এখানেই অন্য আমলের সঙ্গে রোজার মৌলিক পার্থক্য বিরাজিত।

পবিত্র রমজান পালনের জন্য বান্দাকে সংযম ও ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হয়। মহান আল্লাহপাক বলেন, ইন্নামা ইয়ুফ্ফাস্ সাবিরুনা আজরুহুম বিগাইরি হিসাব অর্থাৎ সিয়াম পালনকারীর মতো চরম ধৈর্যের পরাকাষ্টা বহনকারী ব্যক্তিকে মহান আল্লাহ পরিপূর্ণরূপে প্রতিদান দেবেন এবং সেই দানের কোনো হিসাব-নিকাশ নেই। ধৈর্যের মোটামুটি তিনটি প্রকরণ রয়েছে এবং রোজা পালনের মধ্য দিয়ে একজন রোজাদার এ তিনটি বিষয়েই উত্তীর্ণ হয়ে থাকেন।

সেজন্য প্রিয়নবী (সা.) বলেছেন, ওয়াহুয়া শাহরুস্সাবরি ওয়াস্সাবরু সাওয়াবুহুল জান্নাহ অর্থাৎ এটি ধৈর্যধারণের মাস আর এ ধৈর্য ও সংযমের পুরস্কার হলো জান্নাত। রোজাদার ব্যক্তি যতক্ষণ না ইফতার সম্পন্ন করে, তার দোয়া কখনো ফিরিয়ে দেয়া হয় না। পবিত্র রমজানে দিবস ও রাতের পুরো সময়টাতেই একজন রোজাদার ইবাদতের মধ্যে থাকেন; তার প্রতিটি কর্ম, মুহূর্ত ও ইচ্ছার বিপরীতে পুণ্যার্জন হতে থাকে এবং পুরো রমজান মাস জুড়েই এ ধারা অব্যাহত থাকে। মহান আল্লাহর ঘোষণা অনুযায়ী রোজাদার ব্যক্তি জান্নাতে তার ইচ্ছা মতো খাদ্য, পানীয় এবং অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন। জান্নাতে রোজাদাররা এক ব্যতিক্রমী সুঘ্রাণ লাভ করবেন। তাদের কৌতূহল হবে এটি জানবার, কীভাবে এই দুর্লভ সুঘ্রাণের অধিকারী তারা হলো! তখন তাদের জানানো হবে, এটি সেই রোজা পালনের বরকত, যেটি তারা পৃথিবীতে রেখেছিল, পানাহার বর্জন করে মহান আল্লাহর নির্দেশনা ও আনুগত্যের পরীক্ষায় সফল হয়েছিল; রাইয়ান নামক বিশেষ তোরণ দিয়ে তারা সেদিন জান্নাতে প্রবিষ্ট হবেন, যে পথে আর কারো প্রবেশাধিকার থাকবে না রোজাদার ব্যতীত।

মহান আল্লাহ মাহে রমজানের যথার্থ অধিকার ও সম্মান বজায় রেখে আমাদের পবিত্র সিয়াম পালনের তাওফিক দিন (আমিন)।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App