×

জাতীয়

পবিত্র কুরআন নাজিলের মাস

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০২৩, ০৮:৫৯ এএম

পবিত্র কুরআন নাজিলের মাস

ফাইল ছবি

পবিত্র কুরআন নাজিলের মহিমান্বিত ও বরকতপূর্ণ মাস হলো রমজান। বার মাসের মধ্যে রমজানের যে শ্রেষ্ঠত্ব, তা মূলত মহাগ্রন্থ আল কুরআনুল কারিমের জন্যই। কেননা লাউহে মাহফুজ তথা সংরক্ষিত ফলক থেকে ধুলির ধরায় পবিত্র কুরআনের অবতরণ ঘটে এ মোবারক মাসেই।

তাই কুরআনে পাকের সন্দেহাতীত শ্রেষ্ঠত্বের সঙ্গে ঐতিহাসিকভাবে মাহে রমজান সংশ্লিষ্ট হয়ে আছে। পবিত্র কুরআনই আমাদের জানাচ্ছে, ‘শাহরু রামাদানালাল্লাযি উনযিলা ফিহিল কুরআন’ অর্থাৎ এ হলো সেই রমজান মাস, যাতে অবতীর্ণ করা হয়েছে আল কুরআন। অতপর সেই কুরআনুল কারিম কি দিনে নাকি রাতে অবতীর্ণ হয়েছে, সে বিষয়টিও কুরআন পাকই আমাদের সুস্পষ্ট করেছে, ‘ইন্না আনযালনাহু ফি লাইলাতিল কাদরি’ অর্থাৎ নিশ্চয়ই এই কুরআনকে আমি অবতীর্ণ করেছি এক মহিমান্বিত রজনিতে তথা লাইলাতুল কদরে; যা অনেকের মতে রমজানের শেষ ১০ দিনের কোনো এক বেজোড় রাত্রে হওয়ার কথা।

তবে কেউ কেউ শবেকদরকে রমজানের ২৭তম রজনিতেও সুনির্দিষ্ট করেছেন। এ রাতের মর্যাদাও সেই কুরআন নাজিলের কারণেই আর রমজান মাসের মর্যাদাও এ রাতের বিশিষ্টতারই ফলশ্রুতি। কুরআনুল কারিমে এ রাতকে হাজার মাসের চাইতেও উত্তম বলে ঘোষণা করা হয়েছে। কুরআন নাজিলের কারণে এ রাতের আরো অনেক বৈশিষ্ট্য কুরআন-হাদিসে বিবৃত রয়েছে।

মহাবিশ্বের মহাবিস্ময় হলো আল কুরআন আর তা নাজিল হলো রমজান মাসে। আমাদের জন্য আশার কথা হলো, এ দুটি অমূল্য জিনিসই মুমিন বান্দার জন্য মহান আল্লাহর কাছে সুপারিশ করবে।

মহানবী (সা.)-এর ভাষ্যমতে, রমজান বলবে হে আল্লাহ! আমি এ বান্দাকে দিবাভাগে যাবতীয় পানাহার ও কামাচার থেকে নিবৃত রেখেছি। তাই এ বান্দার জন্য তুমি আমার শাফায়াত কবুল করো। একইভাবে পবিত্র কুরআন বলবে হে আল্লাহ! আমিই এ বান্দাকে রাত্রি জাগরণে বাধ্য করেছি, আরামের ঘুম বিনষ্ট করেছি; অতএব এ বান্দার জন্য তুমি আমার সুপারিশ মঞ্জুর করো। অতপর বান্দার জন্য রমজান আর কুরআনের সম্মিলিত সুপারিশ মহান আল্লাহ কবুল করে নেবেন। তাই আমাদেরও উচিত পবিত্র রমজানে আল কুরআনকে অধিকতর তেলাওয়াত করা, বুঝা ও চর্চা করা। কেননা, পবিত্র কুরআনের মর্যাদার উপলব্ধির ওপরই রমজানের প্রকৃত অধিকারের মর্মার্থ অনুধাবন নির্ভরশীল।

বরকতের রমজানে আবির্ভূত কালামে পাকের আলোকে আমরা জানতে পারি, সিয়াম সাধনার মূল লক্ষ্য তাকওয়া তথা খোদাভীতি অর্জন করা। আল্লাহপাকের ঘোষণা, ‘লাআল্লাকুম তাত্তাকুন’ অর্থাৎ রমজানের রোজাব্রত পালনের মধ্য দিয়ে হয়তো তোমরা পরিপূর্ণ মুত্তাকিরূপে নিজেদের গড়ে তুলতে পারবে। তাহলে এই রমজান পালন এবং কুরআনের নির্দেশনার আলোকে আমরা যদি তাকওয়া অবলম্বন করতে পারি, তবে তার ফলশ্রুতিতে আমরা মধুর পরিণতি ভোগ করতে পারব।

আল্লাহপাকের ঘোষণা, ‘ওয়ালাও আন্না আহলাল কোরা আমানু ওয়াত্তাকাও লাফাতাহনা আলাইহিম বারাকাতিম মিনাস্ সামায়ি ওয়াল আরদ্’ অর্থাৎ জনপদের অধিবাসীরা যদি আমার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে ও তাকওয়া অবলম্বনে সক্ষম হয়, তবে আমি তাদের জন্য আকাশ ও জমিনের বরকতের সমস্ত ভাণ্ডার উন্মুক্ত করে দেব। বস্তুত তখন আর আমাদের কোনো প্রকার অভাব-অভিযোগের লেশমাত্র থাকবে না।

তাই কুরআন নাজিলের এই মাসে সিয়ামব্রত পালনের মধ্য দিয়ে প্রকৃত তাকওয়া অবলম্বন করে নিজেরা এবং পুরো সমাজকে খোদাপ্রদত্ত বরকতের ভাণ্ডারে স্বাবলম্বী করার মহৎ প্রয়াসে সবাই শরিক হই। মহান আল্লাহ আমাদের সে তাওফিক দান করুন (আমিন)।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App