×

সাহিত্য

জাগরণের সুরবাণীতে নববর্ষকে স্বাগত জানাবে ছায়ানট

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০২৩, ১১:৪৭ এএম

জাগরণের সুরবাণীতে নববর্ষকে স্বাগত জানাবে ছায়ানট

ছবি: সংগৃহীত

মানবপ্রেম, দেশপ্রেম ও আত্মবোধন জাগরণের সুরবাণীতে বাংলা নববর্ষ-১৪৩০ কে স্বাগত জানাবে ছায়ানট। রমনা বটমূলে ভোর সোয়া ৬টায় আহীর ভৈরবের সুরে তবলা বাদন দিয়ে শুরু হবে বাংলা নববর্ষ ১৪৩০ এর উদযাপন।

সত্য সুন্দরের অভিলাষে সাজানো হয়েছে ছায়ানটের এ প্রভাতী আয়োজন। এবারের প্রতিপাদ্য ‘দূর করো অতীতের সব আবর্জনা, ‘ধরো নির্ভয় গান’। সবমিলিয়ে দেড় শতাধিক শিল্পী ও কলাকুশলী অংশ নেবেন বর্ষবরণের এ আয়োজনে। গতকাল সোমবার বিকালে ছায়ানট মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, বর্ষবরণের এবারের অনুষ্ঠানে ছোট বড় শিল্পীদের মিলিয়ে সম্মেলক গান পরিবেশিত হবে ১০টি, একক কণ্ঠে গান রয়েছে ১১টি, থাকবে দুটি আবৃত্তি।

জাতয়ি সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের অনুষ্ঠান। তার আগে বক্তব্য উপস্থাপন করবেন ছায়ানট সভাপতি সন্জীদা খাতুন। রমনা উদ্যান থেকে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী এই আয়োজন সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার। দেখা যাবে ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেলেও। ইউটিউব চ্যানেলটি হলো।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন- ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা, ছায়ানটের সহসভাপতি আতিউর রহমান ও খায়রুল আনাম শাকিল এবং যুগ্ম সম্পাদক জয়ন্ত রায়।

লাইসা আহমদ লিসা বলেন, কোভিড অতিমারীকে দমিয়ে পৃথিবী আজ নতুন করে স্বাভাবিক-স্বচ্ছন্দ, মানবসমাজের এক অবিস্মরণীয় জয়। বাঙালির যেন চিরচেনা জীবনেই প্রত্যাবর্তন। কিন্তু জয়ের আবহের মধ্যেও বাঙালি আজ মুখোমুখি নতুন সংকটের। শুধু এই ভূখণ্ডই নয়, বিশ্বব্যাপী ক্ষয়ে চলেছে মানবতা, দেশে ক্রমান্বয় অবক্ষয় হচ্ছে মূল্যবোধের।

আমরা আশাহত হই না, দিশা হারাই না, স্বপ্ন দেখি হাতে হাত রেখে সবাই একসঙ্গে মিলবার, চলবার। বাঙালি জাগবেই, সবাই মিলে সুন্দর দিন কাটানোর সময় ফেরাবে, পরম বিশ্বাসে বলবে সবারে বাসরে ভালো নইলে, মনের কালো ঘুচবে নারে। সার্থক হবেই হবে, মানুষ-দেশ, এ পৃথিবীকে ভালোবেসে চলবার মন্ত্র। শুভ কর্মপথে আঁধার কাটিয়ে আলোর সন্ধানে সুদিনের পথে চলব আমরা, বাঙালিকে বলব, হাল ছেড় না।

তিনি জানান, এবারের ছায়ানটের গোটা অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছে নতুন স্নিগ্ধ আলোয় স্নাত প্রকৃতির গান, মানবপ্রেম দেশপ্রেম আর আত্মবোধন- জাগরণের সুরবাণী দিয়ে।

আতিউর রহমান বলেন, সমাজে অসঙ্গতি, ভারসাম্যহীনতা ও বৈষম্য রয়েছে। সংগীতের সুর ও বাণী প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সম্মিলন ঘটায়, সমাজে সাম্যতা প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখে।

খায়রুল আনাম শাকিল বলেন, ১৯৬১ সালে রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তীর আয়োজনে বাধা এলে সেসময়ের বুদ্ধিজীবীরা উপলব্ধি করেন সংস্কৃতির ওপরে আঘাত আসছে। সেই বাধা থেকেই ছায়ানটের উন্মেষ। ১৯৬৩ সালে যাত্রা শুরু করে ছায়ানট।

প্রথম দিকে ছায়ানট পহেলা বৈশাখে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আয়োজন করত। পরে রমনা বটমূলে বর্ষবরণের আবাহনী গানের অনুষ্ঠান শুরু করে। আজ সেই অনুষ্ঠান সারাবিশ্বে বর্ষবরণের প্রতীকী আয়োজনে পরিণত হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বর্ষবরণ সার্থক করতে আন্তরিক নিষ্ঠায় মাস দুয়েক আগে থেকেই গান তোলা আর গলা মেলানোর কাজে নেমেছে শতাধিক ক্ষুদে ও বড় শিল্পী। বরাবরের মতোই নতুন বাংলা বছরকে বরণ করার এই আয়োজন সুষ্ঠু রাখতে অক্লান্ত সেবা দিয়ে চলেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং গণপূর্ত অধিদপ্তর।

সংবাদ সম্মেলনের সূচনা হয় সম্মেলক কণ্ঠে ‘ধ্বনিল আবাহন’ গান দিয়ে। আর আয়োজন শেষে সম্মেলক কণ্ঠে শিল্পীরা গেয়ে শোনান- ‘এই আমারই বাংলাদেশ’ ও ‘আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম’।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App