×

আন্তর্জাতিক

কমলেও ব্যাপক উচ্চতায় খাদ্যের বৈশ্বিক দাম

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০২৩, ১১:৩৮ এএম

কমলেও ব্যাপক উচ্চতায় খাদ্যের বৈশ্বিক দাম

ফাইল ছবি

বিশ্বজুড়ে খাদ্যপণ্যের দাম গত মাসে আবারো কমেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। এ নিয়ে টানা ১২ মাস বাজারদরে নিম্নমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে। তবে দাম কমলেও তা এখনো ব্যাপক উচ্চতায় অবস্থান করছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, দাম কমার পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের কৃষ্ণ সাগরীয় চুক্তি। এ চুক্তির ফলে যুদ্ধের ভয়াবহতা ও ?প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যশস্য রপ্তানি বাড়াতে সক্ষম হয়েছে।

এফএওর প্রধান অর্থনীতিবিদ ম্যাক্সিমো টোরেরো বলেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যখন দাম কমছে, ঠিক তখনই স্থানীয় বাজারগুলোয় বাড়ছে। এসব বাজারে বর্তমানে দাম অনেক উঁচুতে অবস্থান করছে। ফলে খাদ্য নিরাপত্তার জন্য অতিরিক্ত চ্যালেঞ্জ তৈরি হচ্ছে। বিশেষ করে নিট খাদ্য আমদানিকারক দেশগুলোয় ঝুঁকি প্রকট হচ্ছে।

এফএও চলতি মাসে খাদ্যপণ্যের মূল্যসূচক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া পণ্যগুলোর ওপর ভিত্তি করে এ মূল্যসূচক তৈরি হয়। মার্চে সূচক দাঁড়িয়েছে ১২৬ দশমিক ৯ পয়েন্টে, যা আগের মাসের তুলনায় ২ দশমিক ১ শতাংশ। অন্যদিকে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সূচক ২০ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে।

দানাদার খাদ্যশস্য ও ভোজ্যতেলের দামে বড় দরপতন খাদ্যপণ্যের গড় দাম কমে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান প্রভাবকের ভূমিকা পালন করেছে। দানাদার খাদ্যশস্যের দাম ফেব্রুয়ারির তুলনায় ৫ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে। এর মধ্যে গমের দাম কমেছে ৭ দশমিক ১ শতাংশ। অস্ট্রেলিয়ায় শক্তিশালী উৎপাদন, ইউরোপীয় ইউনিয়নে ফলন পরিস্থিতির উন্নতি, রাশিয়া থেকে সরবরাহ বৃদ্ধি ও কৃষ্ণ সাগরীয় বন্দর থেকে ইউক্রেনের চলমান রপ্তানি গমের দাম নিম্নমুখী রাখতে সহায়তা করেছে।

এদিকে বিশ্বজুড়ে ভুট্টার দাম ৪ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে। ব্রাজিলে রেকর্ড উৎপাদনের সম্ভাবনা দেখা দেয়ায় এমনটি ঘটেছে। ভারত, ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডসহ শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশগুলোয় চাল উৎপাদন বাড়ায় শস্যটির দাম কমেছে ৩ দশমিক ২ শতাংশ।

এফএওতে ভোজ্যতেলের গড় মূল্যসূচক এক মাসের ব্যবধানে ৩ শতাংশ কমেছে। গত বছরের মার্চের তুলনায় কমেছে ৪৭ দশমিক ৭ শতাংশ। বিশ্বজুড়ে পর্যাপ্ত সরবরাহ ও নিম্নমুখী বৈশ্বিক আমদানি চাহিদার কারণে সয়াবিন, সরিষা ও সূর্যমুখী তেলের দাম কমেছে। তবে পাম অয়েলের দাম ব্যাপক বেড়েছে। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোয় নিম্নমুখী উৎপাদনের কারণেই বাজারদরে এমন ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা তৈরি হয়েছে। জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় গত বছরের জুলাইয়ে কৃষ্ণ সাগরীয় চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এর মধ্য দিয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়া ইউক্রেনের কৃষ্ণ সাগরীয় বন্দরগুলো দিয়ে আবারো রপ্তানি চালু হয়। এর আগে টানা ছয় মাস রপ্তানি বন্ধ ছিল। চুক্তির ফলে বিশ্বজুড়ে তীব্রভাবে বাড়তে থাকা খাদ্যপণ্যের বাজারে স্থিতি ফিরতে শুরু করে। বিভিন্ন দেশে খাদ্য সংকট দেখা দেয়া ঝুঁকিও হ্রাস পায়।

গত বছরের মার্চে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালালে বিশ্বজুড়ে খাদ্যপণ্যের দাম এক লাফে আকাশচুম্বী হয়ে ওঠে। এরপর টানা ১২ মাস দাম কমলেও তা যুদ্ধের আগের তুলনায় ঊর্ধ্বমুখীই রয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App