বাড়তি ভাড়ায় মিলছে না গন্তব্যে ফেরা

রুটে যাত্রী নিয়ে আধিপত্য বিরোধে কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ জেলায় বাস মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে সৃষ্ট দ্বন্দ্বের জেরে গত চারদিন কুষ্টিয়া-খুলনা রুটে বাস ধর্মঘটে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন এ রুটে চলাচলরত যাত্রীরা। বাড়তি বাড়া দিয়েও যেতে পারছেন না গন্তব্যে।

গত ৯ এপ্রিল সকালেও খুলনা ও ফরিদপুর রুটে কোনো যাত্রীবাহী বাস ছেড়ে যায়নি। ফলে জেলার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ও মজমপুর বাস ডিপো এলাকায় দীর্ঘক্ষণ ধরে অপেক্ষা করতে দেখা যায় যাত্রীদের।

গত শুক্রবার ভোর থেকে কুষ্টিয়া-খুলনা ও কুষ্টিয়া-ফরিদপুর রুটে কুষ্টিয়া জেলা মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকে এ ধর্মঘট চলছে।

কুষ্টিয়ার হাটশ হরিপুর বোয়ালদহ গ্রামের বাসিন্দা হাসান খন্দকার মাগুরায় চাকরি করেন। প্রতি সপ্তাহে বৃহস্পতিবার বাড়ি আসেন তিনি। তিনি জানান, স্বাভাবিক সময়ে যাতায়াতের খরচ ২৫০ টাকা। আজ সকালে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় মাগুরাতে পৌঁছাতে তার খরচ হয়েছে ৩২০ টাকা। তারপরও সঠিক সময়ে পৌছাতে পারেননি।

সংকট নিরসনে শনিবার দুপুরে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সাইদুল ইসলাম জেলার বাস মালিক ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করলেও কোন সুরাহা করতে পারেননি।

কুষ্টিয়া মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মাহবুল আলমের অভিযোগ, গতকাল কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে বৈঠক শেষে কুষ্টিয়ার মালিক শ্রমিকের পক্ষ থেকে বাস চলাচল স্বাভাবিক করার সম্মতি দিলেও ঝিনাইদহের মালিক-শ্রমিকরা আমাদের গাড়ি ঢুকতে দিচ্ছে না। বিষয়টি দুই জেলার প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নিয়ে সুরাহা করবেন বলে আশ্বস্ত করেন। অথচ রবিবার দুপুর পর্যন্ত দুই জেলার প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো সুরাহা করতে পারেননি। আমরা গাড়ি ছাড়তে প্রস্তুত আছি।

কুষ্টিয়া জেলা মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ নেতাদের অভিযোগ, ঝিনাইদহ মটর শ্রমিক নেতারা বাসের নতুন ট্রিপ দাবি করেন। এ দাবির ব্যাপারে কথা বলতে ঝিনাইদহে গেলে কুষ্টিয়ার বাস শ্রমিকদের মারধর করা হয়। মারধরের ঘটনায় জড়িতদের আগামী ১০ এপ্রিলের মধ্যে পুলিশ-প্রশাসন গ্রেপ্তার না করলে সারা দেশের সঙ্গে কুষ্টিয়ার বাস যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়া হবে বলে জানান কুষ্টিয়া জেলা বাস-মিনিবাস মালিক গ্রুপের সভাপতি আক্তার হোসেন।

কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম জানান, যাত্রীবাহী বাস চলাচল স্বাভাবিক করতে ঝিনাইদাহ জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। ঝিনাইদহের মালিক শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।

ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক এস এম রফিকুল ইসলাম জানান, আমরা গতকাল মালিক শ্রমিকদের সাথে কথা বলেছি, আজও বলছি, এখনও তাদের সঙ্গে আমাদের বৈঠক চলছে। তবে এখনও পর্যন্ত কোন সন্তোষজনক সমাধানে পৌঁছাতে পারিনি। আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।