×

জাতীয়

ঢাবি অধ্যাপক ইমতিয়াজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ছাত্রলীগের স্মারকলিপি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২৩, ০৪:৫২ পিএম

ঢাবি অধ্যাপক ইমতিয়াজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ছাত্রলীগের স্মারকলিপি

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড মো আখতারুজ্জামান বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতসহ অন্যরা। ছবি: ভোরের কাগজ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদের বইয়ে বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও গণহত্যা সম্পর্কে বিকৃত তথ্য উপস্থাপনের নিন্দা জানিয়ে আইনগত ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে ঢাবি শাখা ছাত্রলীগ।

বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড মো আখতারুজ্জামান বরাবর স্মারকলিপি দিয়ে এই দাবি জানান বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত।

এসময় বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত করা ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টার কারণ উদ্ঘাটন ও প্রতিবেদন প্রকাশ করা ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তারা।

এ বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, আমরা ড. ইমতিয়াজ আহমেদ স্যারের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলতে চাচ্ছি তাঁর বইয়ে ইতিহাস ও আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে বিকৃত করা হয়েছে। এটা স্বাধীন বাংলাদেশের শিক্ষার্থী হয়ে কখনো আমরা মেনে নিতে পারিনা। তাই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছি এবং ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছি।

ছাত্রলীগ প্রদত্ত স্মারকলিপিতে বলা হয়, ড. ইমতিয়াজ আহমেদ তার লেখা ‘হিস্টোরিসাইজিং ১৯৭১ জেনোসাইড: স্টেট ভার্সেস পারসন, ঢাকা, জানুয়ারি, ২০০৯’ বইয়ে উল্লেখ করেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একাত্তরের ৭ মার্চের ভাষণ শেষে ‘জয় পাকিস্তান’ বলেছেন; আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে বাংলাদেশে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পরিচালিত গণহত্যাকে 'গণহত্যা' বলা যাবে না এবং একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহিদদের সংখ্যা নিয়েও ড. ইমতিয়াজ সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

এতে আরো বলা হয়, ড. ইমতিয়াজ জাতির পিতার দীর্ঘ সংগ্রাম, ৭ মার্চের ভাষণ, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের দ্বারা সংঘটিত একাত্তরের গণহত্যা ইত্যাদি নিয়ে বেশ কিছু মিথ্যা রাষ্ট্রস্বীকৃত জাতীয় ইতিহাসের বিকৃতি ঘটানো মন্তব্য করেছেন যা একেবারেই ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। যেমন, একাত্তরের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক বক্তৃতার সমাপ্তিতে বঙ্গবন্ধু ‘জয় বাংলার’ সঙ্গে ‘জয় পাকিস্তান’ বলেছেন বলে দাবি করেছেন ড. ইমতিয়াজ।

উল্লেখ করা হয়, তখনকার পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের অধিবাসীদের মধ্যে বিয়ে হতো, দুই অংশের মধ্যে সাংস্কৃতিক অনেক মিল ছিল, উর্দুর সঙ্গে বাংলাও পাকিস্তানের দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা ছিল, দুই অংশের অধিবাসীদের মধ্যে নৃতাত্ত্বিকও অনেক মিল ছিল এধরনের উদ্ভট দাবীও তিনি তার বইয়ে করেছেন; কখনো নিজের বরাতে, কখনো অন্যের মুখে শুনেছেন দাবী করে লিখেছেন। উল্লিখিত বিষয়গুলো মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে চূড়ান্তভাবে মীমাংসিত হয়েছে। জাতির পিতার অবদানকে অবমূল্যায়ন কিংবা স্বাধীনতা ও মহান মুক্তিযুদ্ধের মীমাংসিত ইতিহাস নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রলীগ রাষ্ট্রবিরোধী অপরাধের শামিল মনে করে ও তীব্র ধিক্কার জানায় এবং এ ধরনের অপচেষ্টার পেছনে কোনো গূঢ় ষড়যন্ত্র রয়েছে এমন সন্দেহ পোষনের অবকাশ রয়েছে বলে মনে করে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ঢাবি শাখা ছাত্রলীগ দুই দফা দাবি জানিয়েছে: ১. অনূর্ধ্ব ১৫ দিনের মধ্যে ড. ইমতিয়াজ আহমেদের বিরুদ্ধে তদন্তের মাধ্যমে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টার কারণ উদ্ঘাটন ও প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হবে। ২. ড. ইমতিয়াজ আহমেদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাযথ আইনানুগ ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App