×

সারাদেশ

মসজিদের ১২ লাখ টাকা নয়-ছয়: ইউএনও’র কাছে অভিযোগ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০২৩, ১১:৪৪ এএম

মসজিদের ১২ লাখ টাকা নয়-ছয়: ইউএনও’র কাছে অভিযোগ

ছবি: প্রতীকী

নওগাঁর আত্রাইয়ে উপজেলার মনিয়ারী ইউনিয়নের ধর্মপুর জামে মসজিদে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করছেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে । উল্লেখিত মসজিদের প্রায় ১২ লাখ টাকা ফেরত না দেয়ায় সংস্কার কাজ করতে পারছেন না। এমতাবস্থায় ১২ লাখ টাকা ফেরত পেতে মুসল্লিরা আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকতেখারুল ইসলাম।

ধর্মপুর জামে মসজিদ কমিটির বর্তমান সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ১৯৭৩ সালে চার শতাংশ জায়গার উপর গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তি বর্গের উদ্যোগে মসজিদ নির্মাণ করা হয়। পরে মসজিদটি পুনর্নির্মাণের প্রয়োজন হলে গ্রামের লোকমান প্রামানিকসহ তিন ব্যক্তি আরো দেড় শতক জায়গা মসজিদে দান করেন। এরপর মসজিদটিতে একতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। মসজিদ নির্মাণের পর থেকে গ্রামের এবং এলাকার লোকজনের দানে এ পর্যন্ত প্রায় ৭ বিঘা ধানী জমি রয়েছে। এরই মধ্যে গ্রামের আব্দুল মান্নান মসজিদ কমিটির সভাপতি এবং নাছির উদ্দীন সাধারণ সম্পাদক ও ক্যাশিয়ারের দায়িত্ব নিয়ে প্রায় ১৫-১৬ বছর ধরে মসজিদটি পরিচালনা করেছেন। এ সময়ের মধ্যে মসজিদের পক্ষ থেকে জমি বন্ধক, বিভিন্ন জলাশয় লিজ নিয়ে এবং বিভিন্ন লোকজনের দান করা অনুদানসহ প্রায় ১০ থেকে ১২লক্ষ টাকা ক্যাশ হয়েছে। এরই মধ্যে নির্মিত মসজিদটির বিভিন্ন জায়গায় ফাটল ধরায় এবং কিছু জায়গা ভেঙে যাওয়ায় গত বছর মসজিদটি পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ নেয় মুসল্লিরা। কিন্তু নির্মিত মসজিদের জায়গার দাগ নম্বর ভুল আছে, এমন অজুহাতে ওই কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকসহ কিছু ব্যক্তি হিসাব-নিকাশ এবং মসজিদের কাগজপত্র বুঝে না দিয়ে হঠাৎ করেই টিনের বেড়া দিয়ে গ্রামে আরো একটি নতুন মসজিদ নির্মাণ করেন।

মোস্তাফিজুর আরো অভিযোগ করে বলেন, আমরা মুসল্লিরা বারবার সভাপতি-সম্পাদককে তাগাদা দিলেও কোন ফল হচ্ছে না। কোনভাবেই তারা টাকা ফেরত দিচ্ছেন না। ফলে মসজিদটি সংস্কার করতে পারছি না। যে কোন মুহূর্তে মসজিদটি ধসে পড়ে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তার পরেও মুসল্লিরা বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই ঝুঁকিপূর্ণ মসজিদেই নামাজ আদায় করছেন। এ ঘটনায় টাকা ফেরত পেতে মনিয়ারী ইউনিয়ন পরিষদে একটি লিখিত অভিযোগ করেছিলাম। কয়েক দফা তারিখ দিয়েও ওই পক্ষ হাজির না হওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান সমাধান করতে পারেননি। ফলে সুষ্ঠু সমাধানের লক্ষে বাধ্য হয়ে গ্রামের ৫৪ জন মুসল্লির স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগপত্র গত বৃহস্পতিবার আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর দাখিল করেছি। মুসল্লিরা দ্রুততম সময়ে এ ঘটনার শান্তিপূর্ণ সুষ্ঠু সমাধান চান।

জানতে চাইলে মসজিদ কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ক্যাশিয়ার নাছির উদ্দীন বলেন, মসজিদের জায়গার দলিলে একটু ভুল থাকায় মুসল্লিদের মধ্যে মতভেদ দেখা দেয়। ফলে নতুন আরো একটি মসজিদ নির্মাণ করতে হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ১০-১২ লাখ টাকা নয়, ৮ লাখ ২২ হাজার টাকা আমাদের কাছে আছে। গত এক সপ্তাহ আগে বসে ওই টাকা থেকে তিন ভাগের দুই ভাগ পুরাতন জামে মসজিদ এবং এক ভাগ টাকা আমাদের নতুন মসজিদ পাবে এমনটি সমাধান করে দিয়েছিল গণ্যমান্য লোকজন, কিন্তু অভিযোগকারীরা তা না মানায় টাকাগুলো সমাজে গচ্ছিত রাখা আছে। যে কোন সময় সুষ্ঠু সমাধান হলেই টাকাগুলো হস্তান্তর করা হবে।

আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকতেখারুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App