×

সম্পাদকীয়

যানজট নিরসনে সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০২ এপ্রিল ২০২৩, ০১:৪৫ এএম

যানজট নিরসনে অনেক কথা বলা হচ্ছে, নানা রকমের উদ্যোগের কথাও শোনা যায়; কিন্তু সমাধান হচ্ছে না। নগর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যানজট নিরসনে রাস্তায় বিভিন্ন দোকানপাট বসানো এবং যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং বন্ধ করতে হবে আগে। ঢাকায় অনেক মেগাপ্রজেক্ট করা হলেও সঠিক পরিকল্পনার অভাবে সেগুলো কোনো কাজে আসছে না। সমস্যা সমাধানে গণপরিবহন বাড়ানোরও গুরুত্ব দিতে হবে। গতকাল ভোরের কাগজের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রমজান মাস এলেই রাজধানীতে যানজট প্রকট হয়ে উঠে। ফুটপাতসহ মূল সড়কও সংকুচিত হয়ে যায়। যাত্রী ও পথচারীদের ভোগান্তির সীমা থাকে না। আধ ঘণ্টার রাস্তা যেতে সময় লাগে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা। অনেক রুটেই যাত্রীদের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে ৩/৪ ঘণ্টা পর্যন্ত লেগে যাচ্ছে। যানজট নিরসনের পরিকল্পনা নিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ১৫ দফা নির্দেশনার পরও অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। রাজধানীতে যানজট তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। বিশেষ করে অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল, বিপণিবিতান প্রভৃতি জায়গায় যাতায়াত করা এক দুঃসহ যন্ত্রণা। যানজটের কারণে কেবল রাজধানীতে প্রতিদিন বিভিন্ন খাত থেকে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা আয় নষ্ট হচ্ছে। সব মিলিয়ে যানজটের কারণে দিনে আর্থিক ক্ষতি প্রায় ১০০ কোটি টাকা। এছাড়া রাজধানীতে চলাচলকারী যানবাহন প্রতিদিন যানজটের কারণে প্রায় সাড়ে ৭ ঘণ্টা আটকে থাকে। তাতে শ্রমঘণ্টা অপচয়জনিত জাতীয় উৎপাদনশীলতার ক্ষতি হচ্ছে। এখনই এর থেকে বের হওয়ার পথ বের করতে হবে। না হয় এ শহর দিন দিন মানুষের বসবাসের অযোগ্য শহরে পরিণত হবে। ট্রাফিক পুলিশ, নগরবিদ, গবেষক ও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সমন্বয়হীনতার কারণে রাজধানীর যানজট নিরসন করা সম্ভব হচ্ছে না। এক সংস্থা রাস্তা খুঁড়ছে, আরেক সংস্থা গ্যাস লাইন ঠিক করছে। সমন্বয় করে কাজ করলে যানজট অনেকাংশে কমে আসবে। ঢাকার রাস্তায় ব্যক্তিমালিকানাধীন গণপরিবহন, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস মোটরসাইকেল এসব যানবাহন প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিষয়টিও আলোচনায় উঠে আসে। বক্তারা ব্যক্তিমালিকানাধীন গাড়ি ব্যবহারে সচেতন হতে বলেন। সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ কার্যকর নেই। এটি বাস্তবায়ন হলে সড়কে অনেকটা শৃঙ্খলা ফিরবে। আমরা মনে করি, এই আইন বাস্তবায়ন করতে হলে মূলে হাত দিতে হবে। বিআরটিএকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হবে। গাড়ির রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস, রুট পারমিট, ট্যাক্স টোকেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স, মালিকানা বদলসহ বিভিন্ন কাজে বিআরটিএর শরণাপন্ন হতে হয়। বিআরটির সহযোগিতায় অসংখ্য চালক ভুয়া লাইসেন্স নিয়ে রাস্তায় নামছে। বিআরটিতে চোখের দেখায় ফিটনেস দেয়া বন্ধ করতে হবে। সর্বোপরি, ট্রাফিক আইন বাস্তবায়ন জরুরি। রাজধানীতে লাখ লাখ রিকশা চলছে। অবাধে রিকশা ছেড়ে দিয়ে আধুনিক নগরী চিন্তা করা যায় না। অবৈধ গাড়ি পার্কিং, ফুটপাত দখল করে রাস্তা সংকীর্ণ করা থেকে জনগণকে বিরত রাখতে হবে। নাগরিক দায়িত্ব সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App