×

খেলা

নতুন শুরুর অপেক্ষায় রোমাঞ্চিত মুর

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০২৩, ০২:১৭ পিএম

নতুন শুরুর অপেক্ষায় রোমাঞ্চিত মুর

ছবি: সংগৃহীত

থমকে যাওয়া ক্যারিয়ার পুনরুজ্জীবিত হতে যাচ্ছে ক্রিকেটার পিটার মুরের। এতা দিন খেলেছেন জিম্বাবুয়ের হয়ে। সেই মুর এখন আইরিশ ক্রিকেটার। নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের সবশেষ ম্যাচটি মুর খেলেছিলেন ২০১৮ সালের নভেম্বরে, মিরপুরে জিম্বাবুয়ের হয়ে। আয়ারল্যান্ডের হয়ে তার প্রথম খেলাও সেই শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামেই। চট্টগ্রামে এক আলাপচারিতায় নিজেই শোনালেন ঠিকানা বদলের সেই গল্প।

মুরের ক্যারিয়ারের নতুন শুরুটা বাংলাদেশে হবে কি না, তা জানা যাবে আর দিন দুয়েক পরই। তবে শুরুটা হয়েছিল তার এখানেই। ২০১৪ সালে মিরপুরে ওয়ানডে দিয়ে তার আন্তর্জাতিক অভিষেক। জিম্বাবুয়ের হয়ে সেবার দুটি ওয়ানডে খেলেন সেই সময়ে তরুণ কিপার-ব্যাটসম্যান। পরের চার বছরে আরও তিনবার বাংলাদেশে আসেন তিনি। খেলেন ২ টেস্ট, ৭ ওয়ানডে ও ৪টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। শুধু জাতীয় দল নয়, বাংলাদেশ সফরে করেছেন তিনি জিম্বাবুয়ের ‘এ’ দলের হয়েও। সবশেষ ২০১৮ সালের সফরে মিরপুরে খেলেন টেস্ট ক্যারিয়ারের সেরা ৮৩ রানের ইনিংস।

প্রায় পাঁচ বছর পর আবার বাংলাদেশে এলেন তিনি আয়ারল্যান্ডের হয়ে। আইরিশ পাসপোর্ট অবশ্য আগে থেকেই ছিল তার। তাই ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই খোলা ছিল আয়ারল্যান্ডের হয়ে খেলার দুয়ার। তবে তখন তিনি বেছে নেন জন্মভূমিকে।

এখন তাহলে জিম্বাবুয়ে ছেড়ে আয়ারল্যান্ডের হয়ে খেলার সিদ্ধান্ত কেন? প্রশ্ন শুনে মুচকি হাসি ফুটে উঠল মুরের মুখে। যেন বোঝাতে চাইলেন, এটা তো বলা যাবে না! রহস্য অবশ্য খোলাসা করলেন একটু পরই। তার সিদ্ধান্তে বড় প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে ২০১৯ সালে জিম্বাবুয়েকে দেওয়া আইসিসির নিষেধাজ্ঞা।

ক্রিকেট বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপের কারণে ২০১৯ সালের জুলাইয়ে জিম্বাবুয়েকে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা দেয় আইসিসি। যে কারণে ওই বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব খেলতে পারেনি জিম্বাবুয়ে।

ঠিকানা বদলে ফেললেও সম্পর্ক ছিন্ন করেননি মুর। এখনও খেলছেন জিম্বাবুয়ের ঘরোয়া ক্রিকেটে। মূলত কখনও দল বদলানোর ইচ্ছেও ছিল না তার। ২০১৬ সালে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, আর্থিক দিক থেকে খুব একটা নিরাপদ না হলেও জিম্বাবুয়ে ছাড়ার কোনো পরিকল্পনা নেই তার।

সেই মুরই জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটের অধ্যায়ের ইতি টেনে আয়ারল্যান্ডের হয়ে খেলার জন্য তিন বছর ত্যাগ স্বীকার করেছেন। আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, এক পূর্ণ সদস্য দেশ থেকে আরেক পূর্ণ সদস্য দেশে যাওয়ার জন্য তিন বছর অপেক্ষা করতে হয়।

২০১৯ সালের অক্টোবরে জিম্বাবুয়ের হয়ে শেষ ম্যাচ খেলেছিলেন মুর। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে সেই টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের সেরা ৯২ রানের অপরাজিত ইনিংসটি খেলেন এই কিপার-ব্যাটসম্যান।

পরে গত বছরের অক্টোবরে তিন বছর পূর্ণ হলে আয়ারল্যান্ডের হয়ে খেলার অনুমতি পান তিনি। ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি বছর ত্যাগ স্বীকার করার পেছনে যে জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটের পারিপার্শ্বিক অবস্থার বড় প্রভাব ছিল, তা ফুটে উঠল মুরের কণ্ঠে।

“আমার এখনও অনেক বন্ধু আছে জিম্বাবুয়েতে। তাদের সঙ্গে আমার খুব ভালো সম্পর্ক। তারা এখন আবার উন্নতি করছে। দারুণ একজন কোচ পেয়েছে। অনেক ভালো ক্রিকেটারও আছে। দারুণ সমর্থন পায় তারা। তবে একটা সময় ছিল, যখন সবকিছু ভালো যাচ্ছিল না। আমি তখন দল বদলানোর সিদ্ধান্ত নিই।”

আয়ারল্যান্ডের হয়ে খেলার অনুমতি পাওয়ার জন্য প্রয়োজন ছিল যে নাগরিকত্ব, দাদীর সৌজন্যে সেটি পেয়েছেন তিনি। নতুন দেশের হয়ে খেলতে নামার আগে এই বিষয়ক পরিসংখ্যানও মুখস্থ তার।

“আমার দাদী আইরিশ নাগরিক। তার সূত্রেই ছোটবেলা থেকে আমারও আয়ারল্যান্ডের পাসপোর্ট আছে। (জিম্বাবুয়ে ছাড়ায়) আমার কোনো আক্ষেপ নেই। আশা করি, দুটি ভিন্ন দেশের হয়ে টেস্ট খেলা ১৭তম ক্রিকেটার হব আমি (হাসি)।”

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App