×

অর্থনীতি

ছুটির দিনে জমেছে ঈদ কেনাকাটা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৫৬ এএম

ছুটির দিনে জমেছে ঈদ কেনাকাটা

ছবি: সংগৃহীত

রমজানের শুরুতেই ঈদের বার্তা পৌঁছে যায় ঘরে ঘরে। আসছে পহেলা বৈশাখের সুবাতাস আর ঈদুল ফিতর ঘিরে অন্যরকম বার্তা নিয়ে ধরা দিয়েছে উৎসবপ্রেমী বাঙালির মনে। রমজানের প্রথম সপ্তাহজুড়ে বিপণী বিতানগুলোয় তেমন ভিড় না থাকলেও শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ছিল জমজমাট। ক্রেতাদের ভিড় কেবল মার্কেটের ভেতরে নয়, ছিল বাইরেও।

এদিন রাজধানীর নিউমার্কেট, বসুন্ধরা শপিংমল, ইস্টার্ন প্লাজা, গাউছিয়া মার্কেট, মৌচাক, ইস্টার্ন মল্লিকার সামনের সড়কগুলোয় দুপুর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ছিল অসহনীয় যানজট। কিছু এলাকায় রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কারণে ঈদবাজার করতে আসা মানুষের ভোগান্তি ছিল চরমে।

এদিন বসুন্ধরা শপিং মলে ঢুকেই দেখা গেল, চলন্ত সিঁড়ি আর লিফটগুলোর সামনে মানুষের ভিড়। অনেকে পুরো পরিবার নিয়ে এসেছেন ঈদের কেনাকাটা করতে। আড়ং, দেশি দশ, ইয়েলো, অলিভ, আব্দুল্লাহ মালাবিস, কিউরিয়াস, ইনফিনিটি মেগামল, ইজি, জারা, প্লাস পয়েন্ট, সেইলর, জেন্টল পার্কসহ প্রায় সব শোরুমেই ক্রেতারা পছন্দের পোশাক খুঁজছেন। ফ্যাশন হাউস আড়ংয়ের সামনে কথা হয় ধানমন্ডি থেকে কেনাকাটা করতে আসা সেলিম আহমেদের সঙ্গে। পুরো পরিবার নিয়ে কেনাকাটা করতে এসেছেন তিনি। সেলিম বলেন, কেনাকাটা করা থেকেই শুরু হয়ে যায় ঈদের আনন্দ।উৎসবের পুরো আনন্দ পেতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে এসেছি। ছেলেমেয়েদের কেনাকাটা শেষ করেছি আজ। দুদিন পর আবার এসে নিজের কেনাকাটা করব।

প্রতি ঈদেই শৌখিন নারীদের ভিড় দেখা যায় শাড়ির দোকানগুলোয়। এবারও লেভেল ফোরে শাড়ির দোকানগুলোয় ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। ছোঁয়া, জামদানি হাউস, নীলাচল শাড়িজে বিক্রেতারা নিজেদের সংগ্রহে থাকা শাড়ি মেলে ধরছেন ক্রেতাদের সামনে। ঢাকার অন্যতম শাড়ির দোকান শালিমারের বিক্রয় প্রতিনিধি মো. রুবেল বলেন, আজ (শুক্রবার) থেকে ভালোই ক্রেতা পাচ্ছি আমরা। তবে দুয়েক দিনের ভেতর শাড়ির বাজারে ভিড় আরো বাড়ার সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি। এখনো অনেকে শাড়ি পছন্দ করে রেখে যাচ্ছেন দুয়েক দিন পরে কিনবেন বলে। থ্রিপিসের দোকান স্টাইল ইকোতে কথা হয় রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে আসা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী রুচিরা মাহবুবের সঙ্গে। তারা ৩ বান্ধবী এসেছেন থ্রিপিস কিনতে। রুচিরা জানান, ফেসবুকে অনেক শোরুম তাদের পোশাক নিয়ে লাইভ করে। ফেসবুকে লাইভ দেখে বসুন্ধরায় এসেছেন সরাসরি দেখে কেনার জন্য। রুচিরার সঙ্গে থাকা তার বান্ধবী বর্ষা জানালেন, ড্রেস কেনা হয়ে গেলেই তারা ছুটবেন নতুন কসমেটিকস কী এসেছে তা দেখতে।

মালিবাগ থেকে কেনাকাটা করতে এসেছেন রেশমা মিতি। বললেন, ঈদের পোশাকের সঙ্গে চাই নতুন জুতা, তাই ছেলেমেয়ের জন্য জুতা কিনলাম। এখন আমার আর আমার স্বামীর জুতা কিনব। প্রতি ঈদেই জুতার দোকানগুলোয় ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় থাকে। এবারো ব্যতিক্রম ঘটেনি। বাটা, বে, এপেক্সসহ অন্যান্য জুতার দোকানে বেশ ভিড় দেখা গেছে।

কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোজার শুরু থেকে এখানে ক্রেতার সমাগম না ঘটলেও গতকাল শুক্রবার পুরোদমে জমে উঠেছে কেনাকাটা। এটা অব্যাহত থাকলে বিগত সময়ে বিশেষ করে কারোনাকালীন যে ক্ষতি গুনতে হয়েছে তা পুষিয়ে ওঠা সম্ভব।

জানতে চাইলে আব্দুল্লাহ মালাবিস-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমরান হোসেন জানান, আমরা বিদেশি কাপড় দিয়েই দেশীয় পোশাক বানাই। প্রথম সপ্তাহে বিক্রির ধরন দেখে ভেবেছিলাম ফ্লপে পড়ে যাব। আগামী বছর আর ব্যবসা করতে হবে না। কারণ আমরা মার খাচ্ছি আড়ংয়ের জন্য। সব ভিড় সেখানেই। তবে আজ সবখানেই জমে উঠল।

আড়ংয়ের বিক্রয়কর্মী মো. আসাদ বলেন, সপ্তাহজুড়ে তেমন ভিড় না থাকলেও আজ আশাতীত সমাগম ঘটেছে। বিক্রিও বেশ ভালোই হচ্ছে।

অলিভ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আকরাম বলেন, ঈদকে সামনে রেখে পাশাপাশি ঋতুর বিষয়টা মাথায় রেখেই আমরা পোশাক তৈরি করি। এবার সুতি আর ব্যাম্বো কটনের মধ্যে এমব্রয়ডারি কাজে একটু ভিন্নধর্মী পোশাক আমরা উপহার দেয়ার চেষ্টা করেছি।

তিনি বলেন, রমজানের শুরুর দিকে বিক্রি তেমন না জমলেও আজ ছুটির দিনে জমে উঠল। আশা করছি সামনের দিনগুলোতে ভালোই বিক্রি হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App