×

সারাদেশ

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামে সুন্দরগঞ্জের ৩০ সড়ক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩১ মার্চ ২০২৩, ০৯:৩৬ এএম

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামে সুন্দরগঞ্জের ৩০ সড়ক

ছবি: সংগৃহীত

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ৩১ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার নামে ৩০টি সড়কের নামকরণ করা হয়েছে। এসব সড়ক দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়িতে যাওয়া যাবে। প্রতিটি সড়কের শুরুতে নির্মাণ করা হয়েছে মুক্তিযোদ্ধার নাম ও ছবি সংবলিত পাকা নামফলক। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ-আল-মারুফের উদ্যোগে সড়কগুলোর নামকরণ করা হয়।

উদ্যোক্তা বললেন, মুক্তিযোদ্ধারা দেশের জন্য পতাকা এনে দিয়েছেন। আজকে তারা একজন একজন করে চলে যাচ্ছেন। তাদের স্মরণীয় করে রাখতে এই চেষ্টা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, উপজেলায় একটি পৌরসভা ও ১৫টি ইউনিয়ন রয়েছে। এ উপজেলায় মোট মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন ২৭২ জন। তাদের মধ্যে বর্তমানে ১৩৫ জন জীবিত আছেন। প্রথম পর্যায়ে ৩১ জনের নামে ৩০টি সড়কের নামকরণ করা হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২৫টি সড়কের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ২৬টি সড়কের ফলক নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। বাকিগুলো সমাপ্তির পথে। স্বাধীনতার মাসেই উদ্বোধন করা হবে। পর্যায়ক্রমে অন্যদের নামেও সড়কের নামকরণ করার উদ্যোগ নেয়া হবে।

সূত্রটি জানায়, প্রতিটি ইউনিয়নে দুটি করে সড়কের নাম মুক্তিযোদ্ধাদের নামে নামকরণ করা হয়। এতে খরচ হয় মোট ৭০ হাজার টাকা। উপজেলা পরিষদের সভার সিদ্ধান্তক্রমে উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর করের (ইউনিয়ন পরিষদের অংশ) ১ শতাংশ থেকে এ টাকা ব্যয় করা হয়।

সড়কগুলো হচ্ছে- উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল আউয়াল মিয়া সড়ক ও আবদুল জলিল মিয়া সড়ক, সোনারায় ইউনিয়নে তোফাজ্জাল হোসেন সড়ক ও আবদুল কুদ্দুছ মিয়া সড়ক, তারাপুর ইউনিয়নে আবদুল লতিফ সরকার সড়ক ও আবুল হোসেন সড়ক, বেলকা ইউনিয়নের হাফিজুর রহমান সড়ক ও ফেরদৌস আলী সড়ক, দহবন্দ ইউনিয়নে এনামুল হক সড়ক ও নুরুল ইসলাম সড়ক, সর্বনান্দ ইউনিয়নে শফিকুল ইসলাম সড়ক ও সন্তোষ কুমার চৌধুরী সড়ক, রামজীবন ইউনিয়নে আশরাফুল ইসলাম সড়ক ও শাহজালাল আহমেদ সড়ক, ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নে মৃত আব্বাস আলী সড়ক ও হাফিজ উদ্দিন মণ্ডল সড়ক, ছাপড়হাটি ইউনিয়নে মুনছুর আলী সড়ক ও মৃত মনোজ কুমার রায় সড়ক, শান্তিরাম ইউনিয়নে মনোরঞ্জন বর্মন সড়ক ও জহির উদ্দিন সড়ক, হরিপুর ইউনিয়নে আজিজুর রহমান সড়ক ও আমজাদ হোসেন সড়ক, কঞ্চিবাড়ি ইউনিয়নে মফিজল মিন্ত্রী সড়ক ও নুরুজ্জামান মিয়া সড়ক, শ্রীপুর ইউনিয়নে মো. ছলেমান সড়ক ও আবদুল মান্নান আকন্দ সড়ক, কাপাশিয়া ইউনিয়নে আমজাদ হোসেন সড়ক ও লায়েক আলী খান মিন্টু সড়ক, চন্ডিপুর ইউনিয়নে ফজলার রহমান ও দেওয়ান আব্দুল হামিদ সড়ক এবং নুরুল হক সড়ক।

সড়কের নামকরণ প্রসঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উপজেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার এমদাদুল হক বলেন, যারা বুকের রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছে তাদের নামে সড়কের নামকরণ হচ্ছে। এজন্য নিজেকে গর্বিত মনে হচ্ছে। যা দেখে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও মুক্তিযোদ্ধাদের মনে রাখবে। একই মন্তব্য উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির সদস্য দেওয়ান আবদুল হামিদের। তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দেখানো মহৎ উদ্যোগ।

এটা সারাদেশে হওয়া উচিৎ। সুন্দরগঞ্জের সংস্কৃতিকর্মী হাবিবুর রহমান বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানানোর এ উদ্যোগ সমাজে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

সড়কের নামকরণ উদ্যোগের কারণ জানতে চাইলে সুন্দরগঞ্জের ইউএনও মোহাম্মদ-আল-মারুফ বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ জয়ের পর সড়ক দিয়ে তাদের নিজ বাড়িতে ফিরেছেন, সেটি কল্পনা করে, তার বাড়ি যাওয়ার সড়কটি সংশ্লিষ্ট মুক্তিযোদ্ধার নামে করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আমরা ঋণি, এই ঋণ শোধ হওয়ার নয়। সড়কের নামকরণ করার উদ্দেশ্য হচ্ছে তাদের পরিবারকে মর্যাদা দেয়া, সমাজের সবাই যেন তাদের স্মরণ রাখেন।

তিনি বলেন, বর্তমান সমাজে ভালো পরপোকারি কাজ করতে মানুষ আগ্রহ হারাছে। ভালো কাজ করলে যে মানুষ মনে রাখে এবং মর্যাদা পায় সেটিও এর মাধ্যমে মানুষ দেখবে এবং উৎসাহ পাবে। মানুষ যেন ভালো কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখতে উৎসাহ পান সেদিকে লক্ষ্য রেখে এবং জেলা প্রশাসক মো. অলিউর রহমান স্যারের উৎসাহে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, সড়কগুলোর নাম উপজেলা পরিষদের সভায় রেজুলেশন করে সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হবে। সরকারিভাবে সংরক্ষণের জন্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App