×

খেলা

যেখানে সবার ওপরে লিটন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ মার্চ ২০২৩, ১০:৩১ পিএম

যেখানে সবার ওপরে লিটন

এ পর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে ৭০টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন লিটন। তার স্ট্রাইকরেট ১৪২.৫৭

যেখানে সবার ওপরে লিটন

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে লিটনের ছক্কা ৫০টি

যেখানে সবার ওপরে লিটন

১৮ বলে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন লিটন যা দেশের ব্যাটারদের মধ্যে দ্রুততম

আইরিশদের বিপক্ষে ঘরের মাঠে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৪১ বলে ৮৩ রানের মারমুখী ইনিংস খেলেন টাইগার ওপেনার লিটন দাস। টি-টোয়েন্টির পাশাপাশি নিয়মিত খেলছেন ওয়ানডে ও টেস্ট ফরম্যাটে। ওপেনিংয়ে বাংলাদেশের বড় ভরসার নাম হয়ে উঠেছেন এই তারকা। রান করার পাশাপাশি রান তুলছেনও দ্রুত। এমনকি ছেলেদের আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অন্তত ৭০০ বল খেলেছেন এমন ব্যাটারদের মধ্যে পাওয়ারপ্লেতে লিটনের স্ট্রাইক রেট সর্বোচ্চ। এমনটাই জানিয়েছে ক্রিকেটবিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকইনফো।

টাইগারদের জয়ের পথে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দেশের হয়ে দ্রুততম ফিফটির নতুন রেকর্ড গড়েন লিটন। এরপরই এই পরিসংখ্যানটি প্রকাশ করে ক্রিকইনফো। এ পর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে ৭০টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন লিটন। যেখানে পাওয়ারপ্লেতে ব্যাটিং করেছেন ৬৪ ইনিংসে। সব মিলিয়ে তার স্ট্রাইকরেট ১৪২.৫৭। যা অন্যান্য ব্যাটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ। লিটনের পরই আছেন দক্ষিণ আফ্রিকার মারকুটে ওপেনার কুইন্টন ডি কক। তিনি টি-টোয়েন্টিতে ৮০টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে অংশ নিয়ে পাওয়ারপ্লেতে খেলেছেন ৭৮ ইনিংস। যেখানে তার স্ট্রাইক রেট ১৪১.৫১ আর এই তালিকার তিন নম্বরে থাকা আফগানিস্তানের ওপেনার মোহাম্মদ শাহজাদ ৬৩ ইনিংস খেলে ব্যাট করেছেন ১৪০.৪৭ স্ট্রাইক রেটে।

তবে পাওয়ারপ্লেতে ছক্কর সংখ্যায় সবার ওপরে কুইন্টন ডি কক। পাওয়ারপ্লের ছয় ওভারে ৫৮টি ছক্কা মেরেছেন এই প্রোটিয়া ব্যাটার। দ্বিতীয় স্থানে থাকা শাহজাদের ছক্কার সংখ্যা ৪০টি। আর ৩৮টি ছক্কা নিয়ে তিন নম্বরে অবস্থান লিটনের। এই সংস্করণে ছক্কা হাঁকানোর হিসেবে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে লিটন। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে লিটনের ছক্কা সংখ্যা এখন ৫০টি। টাইগার ব্যাটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৬৪ ছক্কা হাঁকিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

[caption id="attachment_419109" align="aligncenter" width="1066"] আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে লিটনের ছক্কা ৫০টি[/caption]

তিন সংস্করণের ক্রিকেটে এতদিন টাইগারদের নির্ভরযোগ্য ওপেনার ছিলেন তামিম ইকবাল। তার সঙ্গী হিসেবে কখনো দেখা যেত জুনায়েদ সিদ্দিকী কখনো ইমরুল কায়েস কিংবা আনামুল হক বিজয়কে। তবে সেভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারেনি কেউ। এরপর তামিমের সঙ্গে জুটি বেঁধে দলকে একের পর এক চমক উপহার দেন প্রতিভাবান ক্রিকেটার লিটন দাস। ওয়ানডেতে এখনো একসঙ্গে ওপেনিং করলেও টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছেন তামিম। এরপর থেকে এই ফরম্যাটে নতুন সঙ্গীকে নিয়ে মারকুটে হয়ে উঠেছেন লিটন।

তামিমের সঙ্গে সেভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি লিটন। এরপর আরো কয়েকজনের সঙ্গে ওপেন করেও সুবিধা করতে পারেননি তিনি। অনেককে চেষ্টা করা হলেও সফল হননি কেউ। তবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে দলে পরিবর্তন আনেন প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। এরপর থেকেই বদলে যায় উদ্বোধনী জুটি। রনি তালুকদারের সঙ্গে ওপেনিং করে এখন পর্যন্ত ৫ ইনিংসে ৬৩.৮০ গড়ে ৩১৯ রান করেছেন লিটন। ওভারপ্রতিও নিয়েছেন ১০ রানের বেশি। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ১২৪ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন লিটন-রনি। টি-টোয়েন্টিতে যা বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ। এর আগে সৌম্য সরকার ও নাঈম শেখের ১০২ রানের জুটিকে ছাড়িয়ে যান তারা। এমন কীর্তির পর সংবাদ সম্মেলনে আসেন লিটন। তার কাছে জানতে চাওয়া হয় দীর্ঘ সময়ের উদ্বোধনী জুটির সমস্যা ছিল। জবাবে তিনি বলেন, ‘পার্টনার বদলে গেছে, হয়ে গেছে।’

[caption id="attachment_419110" align="aligncenter" width="1280"] ১৮ বলে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন লিটন যা দেশের ব্যাটারদের মধ্যে দ্রুততম[/caption]

চলতি মাসেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ৫৭ ম্যাচে ৭৩ রানের ইনিংস খেলে রানে ফেরার ইঙ্গিত দেন লিটন। এরপর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে রীতিমতো ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ব্যাট হাতে ২৩ বলে ৪৭ রানের মারমুখী ইনিংস খেলার পর দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে খেলেন ক্যারিয়ারসেরা ৮৩ রানের ইনিংস। ১৮ বলে পূর্ণ করেন হাফসেঞ্চুরি। যা দেশের ব্যাটারদের মধ্যে দ্রুততম। আগে এই রেকর্ডটি ছিল মোহাম্মদ আশরাফুলের। গতকাল লিটনের প্রশংসা করে আশরাফুল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘রেকর্ড তো হয়ই ভাঙার জন্য। প্রায় ১৬ বছর এই রেকর্ড ছিল। এখনো টেস্ট ও ওয়ানডেতে দুটি রেকর্ড আছে। আশা করি এই দুটিও লিটনই ভাঙবে। যেভাবে সে খেলছে, বাকি দুই ফরম্যাটেও দ্রুততম অর্ধশতক তারই হবে আশা করি। রেকর্ড থাকলে অবশ্যই ভালো লাগে। নিজের নাম সবার ওপরে দেখতে ভালোই লাগে। ২০০৭ সালে প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপ ছিল। এটা তখন বিশ্বরেকর্ড ছিল। তার সাতদিন পর যুবরাজ সিং ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১২ বলে ফিফটি করেন। ভালো লাগছে। লিটনের ইনিংস নিয়ে তো বলার কিছু নেই। গত ২-৩ বছর ধরে অসাধারণ খেলছে। সব ফরম্যাটে ভালো করছে, বিশেষ করে টেস্টে যেভাবে পঞ্চাশেরও বেশি গড় নিয়ে খেলছে। এখন বাকি দুই ফরম্যাটে হাই স্ট্রাইক রেটে খেলছে। যেটা আমরা দেখতে চাই। লিটন যখন ভালো খেলে তার ব্যাটিং দেখতে মজা লাগে। ক্লাস প্লেয়ার, ওয়ার্ল্ড ক্লাস ব্যাটার। আশা করব ধারাবাহিকতা থাকবে।’

প্রথম ম্যাচে তিন রানের আক্ষেপ থাকলেও নতুন একটি মাইলফলক স্পর্শ করেন লিটন। বাংলাদেশি ব্যাটারদের পক্ষে টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম দেড় হাজার রানের রেকর্ড গড়েন ডানহাতি এই ওপেনার। সংবাদ সম্মেলনে লিটন আরো বলেন, ‘আমার মনে হয় উদ্বোধনী জুটিতে এটাই টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ। এর থেকে তো বড় কিছু হতে পারে না। কিন্তু ব্যাক টু ব্যাক প্রতিটা ম্যাচে আপনি এই সাফল্য পাবেন না। যে যাব আর হিট করব। স্ট্রাগল টাইম আসবেই। তবে ব্যাটিং করে অনেক মজা পাচ্ছি আর কি তার সঙ্গে।’

এছাড়া বছরের শুরুতে বিপিএলের নবম আসরে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে খেলেছেন লিটন। আসরের চ্যাম্পিয়ন দল কুমিল্লার হয়ে ১৩ ইনিংসে ২৯.১৫ গড়ে ৩৭৯ রান করেন এই ওপেনার। ফিফটি পেয়েছিলেন তিনটি। ফাইনালে খেলেছিলেন ৫৫ রানের ইনিংস।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App