×

সারাদেশ

মৌলভীবাজারের টং গ্রামে এবারও করলার বাম্পার ফলন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২৩, ০৭:৪৯ পিএম

মৌলভীবাজারের টং গ্রামে এবারও করলার বাম্পার ফলন

ছবি: ভোরের কাগজ

মৌলভীবাজারের টং গ্রামে এবারও করলার বাম্পার ফলন
মৌলভীবাজারের টং গ্রামে এবারও করলার বাম্পার ফলন
মৌলভীবাজারের টং গ্রামে এবারও করলার বাম্পার ফলন

বিগত কয়েক দশক ধরেই একযোগে বেশ কিছু কৃষক করলার চাষ করায় এবং প্রতিবছরই বাম্পার ফলন হওয়ায় পাড়ের টং গ্রামকে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়। কেউ বলে করলার গ্রাম কেউবা বলে সবজির গ্রাম। এটি মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার আশিদ্রোণ ইউনিয়নে পড়েছে।

গ্রামের ভিতর প্রবেশের পর যত দূর দৃষ্টি মেলে দেখা যায় করোলার মাচাং। সবুজ পাতায় ঘেরা এই মাচার নিচেই ঝুলে আছে করোলোগুলো।

শ্রীমঙ্গল উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাসুক মিয়া জানান, এই গ্রামের প্রায় শতাধিক একর জায়গা জুড়ে লালতীর সীডের টিয়া ও টিয়া সুপার জাতের করলা চাষ করেছেন বেশিরভাগ কৃষক। করলা চাষ করে কৃষকরা যেমন সাবলম্বী হয়েছেন তেমনি দৈনিক মজুরি হিসেবে করোলা খেতে কাজ করে স্থানীয় নারী পুরুষরা লাভবান হচ্ছেন।

গ্রামের করলা চাষী মো. নসু মিয়া জানান, তিনি লাল তীর সীড এর টিয়া জাতের করলা বীজ এনে প্রথম পাড়ের টং গ্রামে বানিজ্যিকভাবে চাষ করেন।পরে তার বাম্পার ফলন দেখে অনেকে করলা লাগানো শুরু করেন। এখন গ্রামের ঘরে ঘরেই করলা চাষী। তিনি বলেন, গ্রামের অনেক মানুষ এখন করলা চাষ করছে। নিজেরা সাবলম্বী হইছে এটা দেখে আমার ভালো লাগে। এখনও কেউ আমার কাছে পরামর্শ নিতে আসলে আমি সাহায্য করি।

গ্রামের গৃহবধূ আমেনা বেগম বলেন, আমার নিজের জমি নাই। আমি প্রতিদিন অন্যের খেতে কাজ করে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা মজুরি পাই।

এই করলাসহ অন্যান্য সবজি বিক্রির জন্য পাড়ের টং এলাকায় খোলা পাড়ের টং কালেকশন পয়েন্ট বাজার। যেখানে প্রতিদিন অসংখ্য পাইকার ভি করেন করলা কিনতে।

পাড়ের টং কালেকশন পয়েন্ট বাজারের সাধারণ সম্পাদক মো. হামদুল হক বলেন, এখানে আমরা একটা দাম নির্ধারণ করি। পাইকাররা এই দামেই কিনে নিয়ে যান। তিনি বলেন, প্রতিদিন আট থেকে দশ হাজার কেজি করলা এই কালেকশন পয়েন্ট থেকে বিক্রি হয়।

লালতীর সীড লিমিটেড এর ডিভিশনাল ম্যানেজার তাপস চক্রবর্তী বলেন, এই গ্রামে আগে স্থানীয়রা ধান, কচু, লতাসহ অনান্য সবজি চাষ করতেন। এখন প্রায় প্রতিটি পরিবারই করলা চাষের সাথে জড়িত। আমরা এই গ্রামের মানুষের কাছে প্রথমে টিয়া ও পরে টিয়া সুপার জাত চাষ করার পরামর্শ দেই। তারা তা চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন। বলতে গেলে এ ফলন আমাদের আশার চেয়ে বেশি।

তিনি বলেন, করোলার টিয়া ও টিয়া সুপার একটি দিবস নিরপেক্ষ হাইব্রিড জাত। উচ্চতা ও লবণাক্ততা সহিষ্ণু জাত। তীব্র শীত ব্যতীত সারা বছর এটি চাষ করা যায়। ফল আকর্ষণীয় সবুজ রঙের ও মধ্যম খাঁজযুক্ত। ফল খেতে মাঝারি তিক্ত নরম ও সুস্বাদু। ফল ২৮ থেকে ৩০ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ওজন ২৫০-২৮০ গ্রাম। একর প্রতি এর ফলন হয় ১২-১৩ টন। রোপণের ৪২ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে ফসল সংগ্রহ শুরু করা যায়।

মঙ্গলবার বিকেলে পাড়ের টংএ করলার এ বাম্পার ফলন দেখতে ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গল আসেন লাল তীর সীড মার্কেটিং এর প্রধান ব্যবস্থাপক কৃষিবিদ জহির আহমেদ। তিনি বলেন, করলার এ বাম্পার ফলন নিজ চোখে দেখতে এলাম। সত্যি ফলন দেখে আমি অভিভূত।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মহিউদ্দিন বলেন, করলা চাষ লাভজনক হওয়ার কারণে দিন দিন এর উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। শ্রীমঙ্গল উপজেলায় এবছর ৩০ হেক্টরেরও অধিক জমিতে করোলা চাষ হয়েছে। যার ৯০ ভাগই পাড়ের টং গ্রামে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App