‘খাঁচায় পোরা পাখির তড়পানি, ভেরি সুইট!’
‘অবিচার’ চলচ্চিত্রের প্রথম দৃশ্যটা এই সংলাপ দিয়ে শেষ করলেন উৎপল দত্ত (মহেশ বাবু)। প্রথম দর্শনেই যার ‘প্রকাণ্ড’ ব্যক্তিত্ব। পর্দায় এই দৃশ্যে যার সঙ্গে তার কথা হয়, তিনি মিঠুন চক্রবর্তী। দুজনই ভারতীয় চলচ্চিত্রের উজ্জ্বল মুখ। মজার ব্যাপার হলো, দুজনই বাংলাদেশের সন্তান, বরিশাল তাদের জন্মভূমি। উৎপল দত্তের জন্ম বরিশাল জেলায়।
বাংলা ও হিন্দি চলচ্চিত্রে যেমন ছিলেন অপরিহার্য, তেমনি ছিলেন মঞ্চের শক্তিমান অভিনেতা, নির্দেশক ও নাট্যকার। একটা সময় গেছে, যখন শক্তিশালী এ অভিনেতা শাসন করতেন ওপার বাংলার চলচ্চিত্রকে। যে মানুষটি হয়েছিলেন ‘হীরক রাজার দেশে’র রাজা, তিনিই আবার হলেন ‘পদ্মা নদীর মাঝি’র হোসেন মিয়া। এমন কত বিখ্যাত চরিত্র তাঁর জীবনে, ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’-এর মেঘরাজ, ‘আগন্তুক’-এর মনোমোহন মিত্র, ‘অমানুষ’-এর মহিম ঘোষাল, ‘জন অরণ্য’-এর বিশুদা- এমন কত চরিত্রেই না অবিস্মরণীয় হয়ে আছেন উৎপল দত্ত।
‘টিনের তলোয়ার’ হাতে তুলে নিয়ে ‘অঙ্গার’ উত্তাপ ছড়ানো মানুষটা নিজের সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘আমি শিল্পী নই। নাট্যকার বা অন্য যেকোনো আখ্যা লোকে আমাকে দিতে পারে। তবে আমি মনে করি, আমি প্রোপাগান্ডিস্ট। এটাই আমার মূল পরিচয়।’ সেই বিচিত্র, বহুমুখী প্রতিভা উৎপল দত্তের জন্মদিন আজ বুধবার (২৯ মার্চ)।
উৎপল দত্তকে আলাদা কোনো বিশেষণে ফেলা কঠিন। সত্যজিৎ রায়কে তিনি ডাকতেন ‘স্যার’ বলে। সত্যজিৎও মুগ্ধ ছিলেন উৎপলের প্রতিভায়। বলেছিলেন, উৎপল যদি রাজি না হতো, তবে হয়তো আমি ‘আগন্তুক’ বানাতামই না।
অবশ্য বলা হয়ে থাকে, মৃণাল সেনের ‘ভুবন সোম’ তাকে চলচ্চিত্র অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা দিয়েছিল। অবশ্য ‘অভিনেতা’ সে শুধু একটি পরিচয়মাত্র।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।