×

মুক্তচিন্তা

ভালুকায় বন বিভাগ বনাম পাবলিক

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৮ মার্চ ২০২৩, ১২:১৭ এএম

ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ি মৌজায় ১৯৯২ সালের পূর্ব পর্যন্ত গেজেটে বন বিভাগের ভূমির পরিমাণ ছিল ১৫০০ একর, ১৯৯২ সালে বৃদ্ধি করে গেজেটে বিভিন্ন দাগ মিলিয়ে আসে ২০৫০ একর। এই ২০৫০ একর ভূমির ডিমারগেশন নেই, কোন জায়গা বন বিভাগের, কোন জায়গা রেকর্ডীয় পাবলিকের নামে অথবা কোন জায়গা সরকারি খাস ভূমি। যেসব পাবলিক বনের জমি জবরদখল করে আছে, তাদের বিরুদ্ধে বন বিভাগের কোনো ব্যবস্থা নেই, কারণ তারা বনের লোকজনের সঙ্গে মিলেমিশে আছে, যাদের কাগজপত্র সঠিক আছে, বন থেকে অবমুক্তি নিয়েছে, ডিমারগেশন করে নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ভিন্নরূপ ব্যবস্থা নিয়ে থাকে বন বিভাগের কর্মকর্তারা। সরকারি নকশা আছে, নকশায় বনভূমি এবং পাবলিকের সম্পত্তি একীভূত করা। একই দাগে পাবলিক ও বন আছে কিন্তু কোন অংশে পাবলিক, কোন অংশে বন তা চিহ্নিত করা নেই। বন বিভাগ যদি সরকারিভাবে রেকর্ডপত্র যাচাই করে, পাবলিকের অংশে পাবলিক রেখে বনের অংশটুকু দখল করে বন সৃজন করত এবং ২০ ধারা করে বন সৃজন করত তবে পাবলিক হয়রানি হতো না। বন বিভাগ তার জায়গা চিহ্নিত না করে দাগের সব অংশই বন বিভাগের বলে দাবি করে পাবলিক হয়রানি করছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বন বিভাগের নামে কোনো পরিমাণ ভূমি নেই, আছে জেলা প্রশাসকের নামে ১ নং খতিয়ানের ভূমি। এই ১ নং খতিয়ান থেকে কবুলিয়ত দলিলের মাধ্যমে ভূমিহীনদের নামে বন্দোবস্ত দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। ভূমি জরিপেও বন বিভাগের নামে ভূমি রেকর্ড হয়নি। রেকর্ড হয়েছে জেলা প্রশাসকের নামে। একজন পাবলিক জীবনের সবটুকু সম্বল নিয়ে কাগজপত্র অনুযায়ী চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করে সামান্য আয় করছে, এক সময় বন বিভাগের লোকজন এসে এই রেকর্ডীয় মালিকের নামে তিন চারটি মামলা ঠুকে দিয়ে সর্বশান্ত করে দিচ্ছে, কারণ বন বিভাগ মামলা করার সুযোগ নিচ্ছে ওই দাগে বনের অংশ আছে বিধায়। আবার দেখা যায় এক দাগের সম্পূর্ণ ভূমিই বন বিভাগের নামে গেজেটে উল্লেখ আছে, অথচ উক্ত দাগে সিএস আরওআরসহ কবুলিয়ত পাট্টা আছে এবং রেকর্ডীয় মালিক হিসেবে ভোগ দখলে থেকে বাড়িঘর করে চাষাবাদ করে আসছে শতবর্ষ ধরে। আবার গেজেটে উল্লেখিত দাগে সরকারিভাবে বন্দোবস্ত দেয়া হয়েছে দাগের সম্পূর্ণ ভূমি। এ ক্ষেত্রে রেকর্ডীয় ও বন্দোবস্ত মিলে কোন পরিমাণ ভূমিই বন বিভাগের দখলে কিংবা গেজেটের অংশ হিসেবেও নেই। বন বিভাগ চিহ্নিত করতে পারছে না তার অংশ কোনদিকে, কোন দাগে কত পরিমাণ জমি দখলে নেবে, অন্যদিকে পাবলিক তার জীবন দিয়ে হলেও তার দখলীয় ভূমি রক্ষা করতে মরিয়া। আবার দেখা যায় একটি দাগের আংশিক ভূমি বন বিভাগের, আংশিক রেকর্ডীয় ভূমি পাবলিকের নামে, এ ক্ষেত্রে বন বিভাগ তার জমি ডিমারগেট করে না নিয়ে, পাবলিক হয়রানি করছে। বন বিভাগ ওই দাগের সম্পূর্ণ অংশের ভূমিতে পাবলিককে দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে, একবার ওঠাচ্ছে, আবার বহাল করছে, মামলা দিচ্ছে, পাবলিক সর্বশান্ত হচ্ছে। বন বিভাগের লোকজন তাদের চাকরি বাঁচানোর স্বার্থে পাবলিকের নামে মামলা দিচ্ছে, মূলত দুই পক্ষেরই হয়রানি হচ্ছে। এইভাবে পাবলিক ও বন বিভাগের দ্ব›দ্ব চলছে ১৯৯২ সাল থেকে। যদি ২০ ধারার মাধ্যমে বন বিভাগের নামে ভূমি ডিমারগেট করে না দেয়া হয়, তবে বন বিভাগের কোনো ভূমিই থাকবে না বলে মনে হয়। পাবলিক ও বন বিভাগের দ্ব›দ্ব নিরসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং জনবান্ধব এই সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

মো. আবদুর রশিদ : প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী, আসপাডা পরিবেশ উন্নয়ন ফাউন্ডেশন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App