ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বিশিষ্ট কবি চন্দ্রকান্ত মুড়াসিং মারা গেছেন। সোমবার (২৭ মার্চ) সকালে আকস্মিকভাবে অসুস্থ হয়ে প্রয়াত হন এ কবি। তার প্রয়াণে রাজ্যের সাহিত্য ও সংস্কৃতি জগতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
১৯৫৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন কবি চন্দ্রকান্ত মুড়াসিং। উত্তর-পূর্ব ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের অন্যতম বিখ্যাত কবি তিনি। রাজ্যের আদিবাসীদের ভাষা ককবরক-এ লিখেছেন এবং কবিতার পাঁচটি বই প্রকাশ করেছেন এ কবি। “সমসাময়িক ত্রিপুরায় জনজীবনের যন্ত্রণা” তার কবিতার মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিলো।
চন্দ্রকান্ত মুড়াসিং ত্রিপুরার পাহাড়, খরস্রোতা নদী এবং পাখির গানের সুরকে প্রতিস্থাপন করছেন কবিতায়। ককবরক সাহিত্যের বিকাশে অবদানের জন্য ১৯৯৭ সালে সাহিত্য একাডেমি, নয়াদিল্লি থেকে ভাষাসম্মান পুরস্কার অর্জন করেন তিনি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-এর গীতাঞ্জলির ককবরক ভাষায় স্বরলিপি তৈরি করা এ কবি ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ককবরক সাহিত্য একাডেমি।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৬ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই পুত্র এক কন্যা এবং নাতি-নাতনিদের রেখে গেছেন। ২০১৮ থেকে ২০২২ পর্যন্ত কবি চন্দ্রকান্ত ছিলেন সাহিত্য একাডেমির উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় মৌখিক সাহিত্য কেন্দ্র- এর অধিকর্তা।
বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু, ভারতের ককবরক ভাষার শ্রেষ্ঠ কবি চন্দ্রকান্ত মুড়াসিং’র আকস্মিক প্রয়াণে জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি মুহাম্মদ সামাদ ও সাধারণ সম্পাদক তারিক সুজাত গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং কবির শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। সাহিত্য-সংস্কৃতি ক্ষেত্রে তার অনন্য অবদানের জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের মানুষ তাঁকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। তিনি ছিলেন জাতীয় কবিতা পরিষদের একজন একনিষ্ঠ সুহৃদ। কবি চন্দ্রকান্ত মুড়াসিং উত্তর-পূর্ব জাতীয় কবিতা পরিষদ গঠন করে বাংলাদেশ ও উত্তরপূর্ব ভারতের কবি-সাহিত্যিক-সংস্কৃতিকর্মীদের মধ্যে এক নিবিড় ও সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। তার প্রয়াণ আমাদের জন্য অপূরণীয় শূন্যস্থান তৈরি করলো।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।