×

জাতীয়

অর্থনৈতিকভাবে অগ্রগতি হলেও আদর্শে পিছিয়েছি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিকভাবে অগ্রগতি হলেও আদর্শে পিছিয়েছি

১৯৭১: গণহত্যা নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর-এর সভাপতি অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি
একটি অসাম্প্রদায়িক-ধর্মনিরপেক্ষ, শোষণমুক্ত, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ নির্মাণের চেতনা বুকে ধারণ করেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বাঙালি। স্বাধীনতার ৫২ বছরে মুক্তিযুদ্ধের সেই চেতনা কী বাস্তবায়ন হয়েছে; নাকি এখনো রয়ে গেছে প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির ফারাক? এ নিয়ে ভোরের কাগজের সঙ্গে কথা বলেছেন ৩ বীর মুক্তিযোদ্ধা- যারা আজ সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্বমহিমায় সমুজ্জ্বল। তাদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আমাদের সিনিয়র রিপোর্টার ঝর্ণা মনি

আমার জেনারেশনের একজন প্রতিনিধি হিসেবে বলতে পারি, আজকের যে বাংলাদেশ আমি দেখছি, এ রকম সমৃদ্ধশালী, উন্নয়নাকর্মী বাংলাদেশ দেখব বলে আমরা তখনো ভাবিনি। কিন্তু এটি সম্ভব হয়েছে। আমরা সব সময় বলেছি, এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকা দরকার, উন্নয়ন দরকার। তবে মানুষের মনেরও উন্নয়ন দরকার। আমি সব সময় বলি, অর্থনৈতিক জিডিপি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষা ও সংস্কৃতির জিডিপিও বাড়ানো দরকার। নাহলে উন্নয়নের সামঞ্জস্য থাকে না। দেশের অর্থনৈতিক জিডিপি বাড়ানোর ক্ষেত্রে মহা তোড়জোড় নেয়া হয়েছে। এটি ইতিবাচক; কিন্তু শিক্ষা ও সংস্কৃতির জিডিপি বাড়ার ক্ষেত্রে কোনো উদ্যোগ নেই। শিক্ষার ক্ষেত্রে কোনো কিছু হলেই ধর্মব্যবসায়ীরা প্রশ্ন তোলে, সরকার পিছিয়ে যায়। ফলে এখানে যদি আমাদের নড়বড়ে অবস্থা থাকে, তাহলে মুক্তিযুদ্ধের প্রধান যে চেতনা অসাম্প্রদায়িকতা ও ধর্ম নিরপেক্ষতা তা মার খাবে।

দ্বিতীয়ত, অনেকেই বলেন, রাষ্ট্রীয় যে চারনীতি ফিরিয়ে আনা হয়েছে, তা আছে কাগজে-কলমে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে- ধর্ম নিরপেক্ষতার ক্ষেত্রে কি তা আছে? অন্যদিকে আমি যদি সমাজতন্ত্রকে এভাবে দেখি অর্থাৎ সমাজে ন্যায়বিচার অর্থে, এক্ষেত্রেও প্রশ্ন রয়েছে। আমরা কি সে রকম দেখতে পাচ্ছি? যেখানে ৫শ টাকা চুরি করলে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়, ৫ হাজার কোটি টাকা চুরি করলে স্যার বলা হয়- এই হচ্ছে অবস্থা। এক্ষেত্রে আমাদের হতাশ হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। কারণ এই মনোভাব যদি না বদলায় তাহলে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা, শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ কার্যকর হবে না।

আমরা অর্থনৈতিক দিক থেকে এগিয়েছি কিন্তু আদর্শের দিক থেকে পিছিয়ে গেছি। নড়বড়ে অবস্থানে চলে গেছি। বিশেষ করে ধর্মের দিক থেকে মাতম শুরু হয়েছে। যা বাংলাদেশের চেতনার সঙ্গে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে আমার মনে হয় সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ধর্ম সব সময় ছিল, আছে, থাকবে। এ নিয়ে বাড়াবাড়ির কিছু নেই।

সত্তর দশকে যেভাবে নতুন প্রজন্মসহ সব মানুষ এগিয়ে এসেছিল আদর্শ রক্ষায়, তেমনি এখনো সব মনুষকে এগিয়ে আসতে হবে আদর্শ রক্ষায়। একটি সৎ বাংলাদেশ, একটি সজীব, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার লড়াইয়ে সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে।

অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন: সভাপতি, ১৯৭১: গণহত্যা নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App