×

জাতীয়

স্ত্রী হত্যায় দণ্ড প্রদানে স্বামীর উপস্থিতির প্রমাণ লাগবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২৩, ০৩:১৪ পিএম

স্ত্রী হত্যা মামলায় দণ্ড প্রদানের ক্ষেত্রে স্বামীর উপস্থিতি প্রমাণের উপর জোর দিয়েছেন হাইকোর্ট। ‘রাষ্ট্র বনাম আব্দুল্লাহ ওরফে তিতুমীর’ মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায়ে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন।

আদালত বলেছেন, সাক্ষ্য আইনের ১০৬ ধারা অনুযায়ী ঋণাত্মক দায় নীতি (ঘটনার সময় স্বামীর উপস্থিতি) প্রযোজ্য হয় তাহলে মামলার আসামিকেই প্রমাণ করতে হবে যে সেখানে হত্যাকাণ্ড ঘটায়নি। আর যদি হত্যাকাণ্ড ঘটেও থাকে তাহলে সেটা যৌতুকের দাবিতে হয়নি।

তবে এই ঋণাত্মক দায় নীতিমালা প্রযোজ্য হওয়ার পূর্বে দুটি প্রাথমিক বিষয় রাষ্ট্রপক্ষকে সন্দেহের ঊর্ধ্বে উঠে প্রমাণ করতে হবে। এর একটি হলো মামলার ভিকটিম (স্ত্রী) আসামির হেফাজতে ছিলো এবং ঘটনার সময় আসামি এবং ভিকটিম একত্রে ছিল।

রায়ে বলা হয়েছে, স্ত্রী হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষকে প্রমাণ করতে হবে যে অপরাধ সংঘটনের সময় স্বামীর হেফাজতে ছিলো স্ত্রী এবং তিনিই তার স্ত্রীকে হত্যা করেছেন।

২০১০ সালে যশোরের কোতয়ালি থানার সালমা খাতুনের সঙ্গে বিবাহ হয় আব্দুল্লাহ ওরফে তিতুমীর ওরফে তিতুর। দেড় বছরের সংসার জীবনের সমাপ্তি হয় ২০১২ সালের ৯ জুলাই। ওইদিন রাতে শ্বশুর বাড়ি থেকে অগ্নিদগ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয় সালমার। স্বামী তিতুমীরের বিরুদ্ধে ভিকটিমের বাবার করা মামলায় অভিযোগ করা হয়, যৌতুক হিসাবে মোটরসাইকেল না দেয়ায় সালমাকে ঘুমন্ত অবস্থায় শ্বাসরোধ করে কেরোসিন জাতীয় পদার্থ গায়ে ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়। ২০১৭ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১(ক) ধারায় তিতুমীরকে মৃত্যুদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা করে ট্রাইব্যুনাল।

এই মামলার ডেথ রেফারেন্স খারিজ ও আসামির আপিল গ্রহণ করে হাইকোর্ট রায়ে বলেছে, মামলার ভিকটিম সালমা তার স্বামী তিতুমীরের হেফাজতে ছিলো এবং ঘটনার দিন ও রাতে বা ঘটনার সময় তারা একত্রে ছিলো এটা রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষ্য দ্বারা প্রমাণ করতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে। যেহেতু আসামির ন্যূনতম উপস্থিতি প্রমাণ করতে রাষ্ট্রপক্ষ ব্যর্থ হয়েছেন সেহেতু এটা বলতে দ্বিধা নেই যে, সাক্ষ্য আইনের ১০৬ ধারা অনুযায়ী এবং আমাদের উচ্চ আদালত কর্তৃক গৃহীত এবং বিভিন্ন সময়ে প্রণীত ঋণাত্মক দায়মূলক নির্দেশনা এই মামলার আসামির উপর কোনভাবেই বর্তায় না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App