×

বিনোদন

লালযাত্রায় হেঁটে চলি ঐক্যের বন্ধনে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২৩, ০৯:১৮ এএম

লালযাত্রায় হেঁটে চলি ঐক্যের বন্ধনে

ছবি: সংগৃহীত

লালযাত্রায় হেঁটে চলি ঐক্যের বন্ধনে

২৫ মার্চের ভয়াল কালরাত স্মরণে প্রতি বছরের মতো এ বছরও দেশের অন্যতম নাট্য সংগঠন প্রাচ্যনাট আয়োজন করতে যাচ্ছে ‘লালযাত্রা’। এর মূল ভাবনায় রয়েছেন রাহুল আনন্দ।

শনিবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির ‘স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বর’ থেকে ফুলার রোডের ‘স্মৃতি চিরন্তন চত্বর’ পর্যন্ত হাতে হাত মিলিয়ে- কণ্ঠে দেশের গান গেয়ে আয়োজনটিতে অংশ নেবে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। এ সময় গাওয়া হবে ‘ধনধান্য পুষ্প ভরা’সহ দেশের গান। স্মৃতি চিরন্তন চত্বরে সব শহীদের প্রতি সম্মানার্থে প্রদীপ প্রজ্বালনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে লালযাত্রা। অনুষ্ঠানটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

২০১১ সাল থেকে প্রাচ্যনাট নিয়মিত লালযাত্রার আয়োজন করে আসছে। করোনার দুই বছর প্রতীকীভাবে যার যার বাসা থেকে লালযাত্রায় অংশগ্রহণ করেছিল। তবে গত বছর থেকে ফের টিএসসিতে আয়োজনটি করা হয়। গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় এবারো যথারীতি লালযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতি বছর যেভাবে হয়, এবারো সেভাবেই হবে জানিয়ে লালযাত্রার পরিকল্পক রাহুল আনন্দ বলেন, ‘২৫ মার্চের শহীদের স্মরণে লালযাত্রার সূচনা হয়েছিল। এখন আমরা এই আয়োজনটির মধ্য দিয়ে সব শহীদের স্মরণ করি, শ্রদ্ধা নিবেদন করি।

২৫ মার্চের কালরাতে শহীদের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী সব শহীদের স্মরণেই আমরা দিনটি পালন করি।’ এই আয়োজনটি সারাদেশে করার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে রাহুল আনন্দ বলেন, ‘অন্যান্য জেলা থেকে অনেকে যোগাযোগ করেছে। কিন্তু সবাই যেটা চাই, আমরাও সেখানে গিয়ে তাদের আয়োজনে অংশ নেই। আমার পক্ষে আসলে সব জায়গায় গিয়ে উপস্থিত হওয়াটা তো অসম্ভব। তবে সারাদেশে একযোগে আয়োজনটি হোক, এটা আমরাও চাই।’ প্রাচ্যনাট স্কুলের ক্লাস থেকে লালযাত্রার ভাবনাটি মাথায় আসে বলে জানান রাহুল।

তিনি বলেন, ‘লালযাত্রার ভাবনাটি আমার মাথায় আসছিল প্রাচ্যনাট স্কুলে ক্লাস নিতে গিয়ে। তখন স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে রাস্তায় একটা পারফরম্যান্স করা দায়িত্ব আমাকে দিয়েছিল প্রাচ্যনাট। তখন ভাবলাম, আমরা সবসময় দেখি একদিকে সবাই অভিনয় করে আরেকদিকে দর্শকরা বসে থাকে। আমার অনেক দিনের ইচ্ছা ছিল একটা পারফরম্যান্স করব, যে পারফরম্যান্সটা চলমান। এই যে চলে যাচ্ছে। চলমান লোকজনই দেখবে। পারফরম্যান্সটা হেঁটে যাচ্ছে। শান্তিপূর্ণভাবে গান গাইতে গাইতে একটা জায়গা থেকে আরেকটা জায়গায় হেঁটে যাওয়া। এই হেঁটে যাওয়াটা হচ্ছে সেই যুদ্ধের ৯ মাসকে অতিক্রম করার মতো। এরপরই আমরা লালযাত্রা করি। সেটি এখন আর কেবল প্রাচ্যনাটের মাঝে সীমাবদ্ধ নেই। অন্য সংগঠনের ছেলেমেয়ে এবং সাধারণ মানুষও যুক্ত হচ্ছে লালযাত্রায়।’

লালযাত্রায় একজন মাকে দেখা যায় লাল শাড়ি গায়ে জড়িয়ে হাঁটছে, সঙ্গে তার সন্তানেরা কালো কাপড়ে হেঁটে যায়। তাদের কণ্ঠে থাকে দেশের গান। রাহুল আনন্দ বলেন, ‘এই মাটিকে তো আমরা মা বলে ডাকি। লালযাত্রায় সে মাকে নিয়েই, শহীদের রক্ত রাঙা পথে হাঁটি। মুক্তিযুদ্ধের চাওয়া তো ছিল স্বাধীন দেশে স্বাধীনভাবে হাঁটব, একসাথে গান গাইব। আমরা সবাই তো মায়ের আঁচল ধরে হেঁটে হেঁটেই বড় হই। লালযাত্রায়ও আমরা মায়ের রক্তরাঙা লাল শাড়ির আঁচল ধরে হাঁটি, কণ্ঠে থাকে দেশের গান।

প্রতিবার প্রাচ্যনাটের সবচেয়ে নিবেদিত একজন মেয়ে এই মায়ের চরিত্রে দাঁড়ায়। এটা একটা রূপকের মতো, প্রাচ্যনাটের মা যিনি মায়ের মতো আগলে রাখে প্রাচ্যনাটকে, সে রকম আরকি। আমার মেয়ে তো মা হতে পারে। আসলে মাতৃরূপটাকে নিয়ে যাওয়া, এটা সবচেয়ে বড় কথা।’ এবার লালযাত্রায় মায়ের চরিত্রে থাকবে প্রাচ্যনাটের পুরনোকর্মী রুবাইয়া মঞ্জুর।

রাহুল আনন্দ বলেন, ‘এবার যেহেতু রমজানে লালযাত্রা হচ্ছে। রোজা রাখবে সবাই, তাই এবার আমরা সময়ের একটু পরিবর্তন করেছি। অন্যান্যবার সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্বালনের মাধ্যমে শেষ হয়। এবার সময়টা একটু এগিয়ে আনা হয়েছে। বিগত বছরে বিকাল ৫টা সন্ধ্যা ৬টা করতাম। এবার ৪টা-৫টায় শেষ করব।’ এবার লালযাত্রার জন্য একটি লোগোও ডিজাইন করেছেন রাহুল। তিনি বলেন, ‘শিমুল, পলাশ ফুলের রঙে লোগো করেছি। ওই যে শহীদের রক্তের রঙে রাঙা হলো পলাশ শিমুল, ওই লাইনটা থেকেই মূলত লোগোটা করা। আর শিমুল, পলাশ তো এই সময়ের ফুল।’

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App