×

জাতীয়

গণহত্যার স্বীকৃতি দিতে গড়িমসি করছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২৩, ০৭:০০ পিএম

গণহত্যার স্বীকৃতি দিতে গড়িমসি করছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়

শনিবার দুপুরে জাতীয় গণহত্যা দিবস উপলক্ষে ‘১৯৭১ : গণহত্যা ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির প্রেক্ষাপট’ শিরোনামে জাতীয় প্রেসক্লাবের আয়োজনে এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভোরের কাগজের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত। ছবি: ভোরের কাগজ

একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে ২৫ মার্চের কালরাতে বাংলাদেশে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যে নির্মম গণহত্যা চালিয়েছে তার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ অধিবেশনে জোর দাবি জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক কূটনীতিক ও সাংবাদিকরা।

তারা বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড তথা মানবতাবিরোধী অপরাধকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের গণহত্যাকেও স্বীকৃতি দিতে ওই সম্প্রদায় ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো গড়িমসি করছে।

শনিবার ( ২৫ মার্চ) সকালে জাতীয় গণহত্যা দিবস উপলক্ষে ‘১৯৭১ : গণহত্যা ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির প্রেক্ষাপট’ শিরোনামে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আয়োজনে তারা এসব কথা বলেন।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য জুলহাস আলমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক ও ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত। জাতীয় প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি কবি হাসান হাফিজের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন সাবেক কূটনীতিক ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ জমির, প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা কাউসার চৌধুরী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আশরাফ আলী এবং কোষাধ্যক্ষ পদে শাহেদ চৌধুরী।

মোহাম্মদ জমির বলেন, মানবাধিকার, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী নানা অপরাধ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বড় বড় কথা বলে। মিয়ানমারের নেত্রী অং সাং সু চি গণতন্ত্রের কথা বলেন। কিন্তু তিনি মিয়ানমারের গণহত্যা নিয়ে বক্তব্য দিতে গিয়ে বললেন, রোহিঙ্গা গণহত্যায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী জড়িত নয়। তার পরও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন তার হয়েই কথা বলবে! আর যখন বাংলাদেশের গণহত্যার স্বীকৃতির কথা আসে তখন তারা নীরব।

মোহাম্মদ জমির বলেন, একাত্তরের গণহত্যা নিয়ে রাজনীতি আর নয়। আমাদের এখন রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বৈঠকে জোর দাবি জানাতে হবে।

শ্যামল দত্ত বলেন, এখনও অনেক বধ্যভূমি নিতান্ত অবহেলায় পড়ে আছে। সেই বধ্যভূমিগুলো সরকারিভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। গণহত্যার স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণে সরকারি উদ্যোগ জোরদার না হলে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে বেগ পেতে হবে।

হাসান হাফিজ বলেন, একাত্তরে পুরো দেশটাই বধ্যভূমি হয়ে উঠেছিল। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী সেসময় পরিকল্পিতভাবে জাতিতাত্ত্বিক বিনাশের জন্যই গণহত্যা চালিয়েছে। সেই ইতিহাসের কথা নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে। একাত্তরের চেতনা সঞ্চারিত করতে হবে তাদের মধ্যে।

কাউসার চৌধুরী বলেন, আমরা কাগজে কলমে জিতেছি, রাজাকাররা কাগজে কলমে পরাজিত হয়েছে, তার মানে সব শেষ হয়ে যায়নি। এখনও তারা সক্রিয়। তাদের কেন উপেক্ষা করা হবে? কেন ছাড় দেয়া হয়? তিনি বলেন, আমরা যদি আমাদের গণহত্যার কথা বিশে^র কাছে তুলে না ধরি তাহলে গণহত্যার স্বীকৃতি পাব কি করে? গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ে সরকারিভাবে গুছিয়ে কাজ করারও আহবান জানান তিনি।

আলোচনা সভা শেষে কাউসার চৌধুরী নির্মিত দুই ঘণ্টা ৩মিনিটের প্রামাণ্যচিত্র ‘বধ্যভূমিতে একদিন’ প্রদর্শন করা হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App