×

জাতীয়

‘অতীতের মতো ভোট করার লেটেস্ট কৌশল’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২৩, ০৫:৩৫ পিএম

‘অতীতের মতো ভোট করার লেটেস্ট কৌশল’

শনিবার দুপুরে মহানগর নাট্য মঞ্চে রাজধানীর গুলিস্তানের মহানগর নাট্যমঞ্চে স্বাধীনতা দিবসে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: ভোরের কাগজ

নির্বাচন কমিশনের সংলাপের চিঠিকে ‘অতীতের মতো ভোট করার লেটেস্ট কৌশল’ হিসেবে দেখছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, অতীতে কেউ ভোট দিতে পারছেন? আবার ওই কাজ শুরু করতে যাচ্ছে। এবার একুট চাপাচাপি বেশি, পড়শিরা বলছে যে, আগের মতো ভোট আর চলবে না। জাপানের রাষ্ট্রদূত তো বলেই ফেললেন যে, বাপের জন্মে শুনিনি যে, আগের রাত্রে ভোট হয়। ওইজন্য এখন আবার নতুন নতুন কৌশল। তারমধ্যে নতুন লেটেস্ট কৌশল হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের আমাদেরকে একটা চিঠি দেয়া।

শনিবার (২৫ মার্চ) দুপুরে মহানগর নাট্য মঞ্চে রাজধানীর গুলিস্তানের মহানগর নাট্যমঞ্চে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপি মহাসচিবের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও সহ প্রচার সম্পাদক আমীরুল ইসলাম খান আলিমের যৌথ সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, শাহজাহান ওমর, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, এজেডএম জাহিদ হোসেনসহ অনেকে বক্তব্য রাখেন।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সংলাপের চিঠির বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত সোমবার দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে হবে জানি্য়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এটা নিয়ে আমি এখনই কথা বলতে চাই না। আমাদের সোমবার স্ট্যান্ডিং কমিটির মিটিং আছে সেই মিটিংয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নেবো গত বৃহস্পতিবার বিকালে প্রধান নির্বাচন কমিশরার কাজী হাবিবুল আউয়াল ডিও পত্রের মাধ্যমে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আলোচনা ও মতবিনিময়ের জন্য আমন্ত্রণ জানান।

সুষ্ঠু ভোট করার ক্ষমতা ইসির নেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নির্বাচন কমিশনের কোনো ক্ষমতা আছে নাকি? সে পারবে এই প্রশাসনকে সোজা করতে পারবে সে ভোটে? এই সময়ে দলের নেতাকর্মীরা ‘না’ ‘না’ শ্লোগান দিতে থাকলে তিনি বলেন, সঠিক কথা। এই নির্বাচন কমিশন চিঠি-টিঠি দিয়ে অযথা কেনো আপনারা হয়রান হচ্ছে। আপনারা ভদ্র লোকের মতো থাকতেন, ভদ্র লোকের মতো থাকেন, বেতন-টেতন নেন। ইভিএম দিতে চেয়েছিলেন ইভিএম দিতে পারছেন না।

তিনি আরো বলেন, সংকট একটাই। সেই সংকট হচ্ছে, নির্বাচনকালীন সময়ে সরকার কে থাকবে? নির্বাচনকালীন সময়ে যদি আওয়ামী লীগ থাকে, এই সরকার থাকে তাহলে এই নির্বাচন কোনোদিনই সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ হতে পারবে না- এটা প্রমাণিত। শুধু জাতীয় সংসদে নয়, স্থানীয় সরকারের নির্বাচনগুলোতেও। তাই এসব অযথা এই এক্সারসাইজ না করে আসল জায়গায় আসেন। প্রকৃত জায়গাটা হচ্ছে, নির্বাচনকালীন সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিতে হবে। সেটা নিয়ে কাজ করুন, সেটা নিয়ে কথা বলুন, সেটা নিয়ে ঘোষণা দিন। তা না হলে অন্য কোনো কিছু দেশের মানুষ মেনে নেবে না।

সরকারের নতুন খেলা মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ পরিকল্পিতভাবে নতুন একটা খেলায় নেমেছে। এই খেলাটি কি? যে আমার মুখে গণতন্ত্রের কথা বলব, ভোটের কথা বলব, ভোটও করব। কিন্তু আমার কাজটা আমি করবো। আমার মতো করে নির্বাচন কমিশন গঠন করব, আমার মতো করে প্রশাসন চলবে, পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেট, বিজেবি সব আমার কথায় চলবে এবং আমি যা চাইবো সেভাবে চলবে। এজন্য ২০১৪ সালে যে নির্বাচন করেছে সেই নির্বাচনে কোনো ভোটই হয় নেই।

তিনি আরো বলেন, ১৫৪ জনকে আগেই ঘোষণা করে ফেললো যে তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত।পৃথিবীর ইতিহাসে এই ধরনের কোনো নির্বাচন হয়েছিলো বলে আমরা জানা নাই। ঠিক একই কায়দায় ২০১৮ সালে আগের রাত্রে ভোট শেষ। অনেকে ভোট দিতে গেছেন ভোট কেন্দ্রে, গিয়ে মরুব্বীদের বলেন, চাচা হামার ভোট তো হয়ে গেছে আগের রাতেই। কেউ ভোট দিতে পারেনি।

আওয়ামী লীগ সব শেষ করে দিয়েছে মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সব শেষ করে দিয়েছে। আপনি যদি ভালোভাবে তাকান সরকার খালি বলে তারা এতো উন্নয়ন করেছে তা আমাদের নাকী চোখ অন্ধ, আমরা উন্নয়ন দেখতে পাই না। আমি মাঝখানে বরিশাল গিয়েছিলাম, বরিশাল থেকে আসার পথে পদ্মাসেতুর উপরে দেখি কী? সেতুর উপরে অর্ধেক রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে রিপেয়ার করা হচ্ছে। একবছর পার হয়নি অলরেডি রিপেয়ারের কাজ শুরু হয়ে গেছে। সেতুর রাস্তায় যে বিটুমিন, সেই বিটুমিনের আস্তর খুলে যাচ্ছে। এই হচ্ছে তাদের উন্নয়নের নমুনা। ১০ হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট ৩০ হাজার কোটি টাকা করেছো।

তিনি আরো বলেন, দেশের মানুষ খেতে পায়। আর পত্রিকা খুললে দেখবেন মানুষ কিভাবে ন্যায্যমূল্যে চাল-ডাল-তেল কেনার জন্য ট্রাকের পেছনে লাইন দিচ্ছে- তাতে আবার পাচ্ছে না। আর সরকার পাতাল রেল করছে। পূর্বাচলের ওই জায়গায় পাতাল রেল করা কি খুব বেশি প্রায়োরিটি হয়ে গেছে? কোনটাই না। অথচ যেটা প্রায়োরিটি দরকার মানুষ খাদ্যের চাল, চাল, তেল, লবনসহ সবকিছুর দাম এমন দাম বেড়ে যা ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। গ্যাসের দাম বাড়ছে, বিদ্যুতের দাম বাড়ছে।

মানে মানে পদত্যাগ করো সরকারের উদ্দেশ্যে ফখরুল বলেন, আমাদের কথা একটাই- মানে মানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার মেনে নাও, মানে মানে পদত্যাগ করো, মানে মানে সংসদ বিলুপ্ত করো এবং একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করো। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে সেই কমিশনের অধীনে এখানে নির্বাচন হবে এবং জনগন ভোট দেবে। এটাই আমাদের শেষ কথা। দেশকে রক্ষার জন্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে নেতা-কর্মীদের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়ার আহবানও জানান বিএনপি মহাসচিব।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App