×

শিক্ষা

শিক্ষার্থীর কানে চড় মারলেন ছাত্রলীগ নেতা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৩, ১২:২৩ এএম

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চড় মেরে শিক্ষার্থীর কান ফাটিয়ে দিয়েছেন ছাত্রলীগের এক নেতা।

মঙ্গলবার (২১ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের অতিথি কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত হাসান মাহমুদ ফরিদ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের ৪৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী সজিব আহমেদ ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে কয়েকজন বহিরাগতের সঙ্গে মীর মশাররফ হোসেন হলের শিক্ষার্থীদের বাগবিতণ্ডা হয়। এ সময় অনিন্দ্য দিব্য নামে একজন মেহেদী নামে ইতিহাস বিভাগের এক শিক্ষার্থীর ছবি তুলে রাখেন। তখন দিব্যকে মারধর করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিকেল চারটার দিকে দিব্যকে মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনে দেখতে পেয়ে তাকে মারধর করে হলের অতিথি কক্ষে আটকে রাখেন শিক্ষার্থীরা। মারধরের শিকার অনিন্দ্য দিব্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি এবং মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের পূর্বপরিচিত।

এ ঘটনার মীমাংসা করতে রাত সাড়ে আটটার দিকে হলের জ্যেষ্ঠ ছাত্রলীগ নেতারা ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ কর্মীদের অতিথি কক্ষে ডাকেন। সেখানে ঘটনার মীমাংসাও করে দেন তারা। তবে মীমাংসার পর দিব্য হল থেকে বের হলে ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী তাকে আরেক দফা মারধর করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে হলের জ্যেষ্ঠ ছাত্রলীগ নেতারা অতিথি কক্ষে ওই ছাত্রলীগ কর্মীদের আবার ডেকে পাঠান।

সেখানে রাত সাড়ে ১০টার দিকে সজীব আহমেদকে এলোপাতাড়ি থাপ্পড় দেন হাসান মাহমুদ ফরিদ। এতে সজীবের কান দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে। সজীবকে তার বন্ধুরা চিকিৎসাকেন্দ্রে নিতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও ইতিহাস বিভাগের ৪৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল ফারুক ইমরান বাধা দেন। পরে সজীবের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে এবং পরে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

অতিথি কক্ষে এ ঘটনার সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ ও শাহ পরান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, উপ-ছাত্রবৃত্তিবিষয়ক সম্পাদক আল রাজি সরকার প্রমুখ। তারা সবাই মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলের অনুসারী বলে পরিচিত।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মীর মশাররফ হোসেন হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘অতিথি কক্ষে আমাদের পাঁচজনকে সামনে দাঁড় করিয়ে কানে থাপ্পড় দিতে থাকেন ভাইয়েরা। সজিবের কানে আগে থেকেই সমস্যা ছিল। থাপ্পড়ের কারণে তার কান দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল।’

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা হাসান মাহমুদ ফরিদ বলেন, ‘কাল (মঙ্গলবার) রাতে গেস্টরুম হয়েছিল। সেখানে স্বাভাবিক কথাবার্তা হয়েছে। কাউকে কানে থাপ্পড় দেয়া বা মারা হয়নি। ওই ছেলে গেস্টরুমে অসুস্থ বোধ করছিল, তাই তাকে আমরা হাসপাতালে পাঠিয়েছি।’

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘গেস্টরুমে নির্যাতন কিংবা মারধর হয়ে থাকলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ বিষয়ে মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক এম ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাটি সম্পর্কে জানতে পেরেছি। তবে এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। স্বপ্রণোদিত হয়ে দুপক্ষকে ডেকে সমাধানের চেষ্টা করব।’

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App