×

সারাদেশ

একসঙ্গে বেশি ভোগ্যপণ্য না কেনার আহ্বান

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৩, ০৯:০০ পিএম

একসঙ্গে বেশি ভোগ্যপণ্য না কেনার আহ্বান

চট্টগ্রামে চৌমুহনী কর্নফুলী বাজারে চসিকেরর সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজনের সচেতনতামূলক প্রচারণা। ছবি: চট্টগ্রাম অফিস

একসঙ্গে বেশি ভোগ্যপণ্য না কেনার আহ্বান

চট্টগ্রামের পাইকারি বাজারে ক্যাবের সচেতনতামূলক প্রচারণা। ছবি: চট্টগ্রাম অফিস

একসঙ্গে বেশি ভোগ্যপণ্য না কেনার আহ্বান

চট্টগ্রামে ক্যাবের সচেতনতামূলক প্রচারণা। ছবি: চট্টগ্রাম অফিস

রমজান মাসে ভোগ্যপণ্যের সরবরাহ ও দাম স্বাভাবিক রাখার দাবি জানিয়েছেন কনজ্যুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) ও নাগরিক উদ্যোগ চট্টগ্রামের নেতারা।

বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) নগরীর বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা বাজারে জনসাধারণ ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য তারা প্রচারণা চালিয়েছেন। পাশাপাশি সংগঠনের নেতারা ভোক্তাদেরকে একসঙ্গে বেশি ভোগ্যপণ্য ঘরে কিনে মজুদ না করারও আহ্বান জানান।

দেশের বৃহত্তম পাইকারী বাজার খাতুনগঞ্জ বাজারে ক্যাব চট্টগ্রামের বাজার ভিত্তিক প্রচারণা কর্মসূচিতে বক্তারা রমজানে মাসের বাজার একসাথে না করা, ইফতার সামগ্রীর পরিবর্তে নগদ অর্থ বিতরণ ও অতিমুনাফা আদায়ে থেকে সংযম প্রদর্শন এবং ইফতারিতে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের আহবান।

পবিত্র রমজান মাসে পণ্য-দ্রব্য ক্রয়ে সংযমের পরিচয় প্রদানের জন্য মাসের বাজার একসাথে না করে সপ্তাহের বাজার করা, দরিদ্রদের মাঝে নিত্যপণ্যের বাজার যোগান ও সরবরাহ ঠিক রাখতে ইফতার সামগ্রী বিতরণের পরিবর্তে নগদ অর্থ বিতরণ করা হলে পণ্যের সরবরাহ ও যোগানে ঘাটতি হবে না। বাজারের দোকানগুলিতে মূল্য তালিকা না থাকলে, কেউ অতিমুনাফা করলে বা হয়রানি করলে, অবৈধভাবে মজুত করলে ভোক্তা অধিদপ্তরের হটলাইন নাম্বার ১৬১২১, জেলা প্রশাসন ও ক্যাব এর নাম্বারে জানানোর আহবান জানানো হয়। অন্যদিকে পবিত্র মাহে রমজান মাস এলেই আমাদের দেশের কিছু ধনাঢ্য ব্যক্তি, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান প্রতিযোগিতা আকারে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করে থাকেন। কিন্তু পুরো রমজান মাস জুড়ে সাধারন দরিদ্র মানুষ যেন ইফতার ও সেহেরী স্বাশ্রয়ী মূল্যে খেতে পারেন তার জন্য কিছু করার আহবান জানান।

বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) সকালে দেশের বৃহত্তম পাইকারী বাজার খাতুনগঞ্জ বাজার, টেরিবাজার ও বক্সিরহাট বাজারে অনুষ্ঠিত বাজার ভিত্তিক প্রচারণা কর্মসূচিতে উপরোক্ত আহবান জানান।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম ও ক্যাব যুব গ্রুপের উদ্যোগে গণঅবস্থান ও বাজার ভিত্তিক প্রচারণা কর্মসুচির অংশহিসাবে এ কর্মসূচিতে অংশ নেন ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন।

[caption id="attachment_417056" align="alignnone" width="1600"] চট্টগ্রামে ক্যাবের সচেতনতামূলক প্রচারণা। ছবি: চট্টগ্রাম অফিস[/caption]

ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি আবু হানিফ নোমানের সঞ্চালনায় গণঅবস্থান কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস, ক্যাব মহানগরের যুগ্ন সম্পাদক মোহাম্মদ জানে আলম প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, ব্যবসায়ীরা ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধ, আর্ন্তজাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধি, ডলার ও এলসির সংকটসহ নানা অজুহাত দেখিয়ে ব্যবসায়ীরা একবার সয়াবিন, একবার পেঁয়াজ, একবার ডাল, আটা-ময়দা এভাবে প্রতিটি পণ্যের বাজারে অস্থিরতা তৈরি করছেন। গুটিকয়েক অসাধু ব্যবসায়ীদের এ ধরনের কারসাজি ও অতি মুনাফা এবং তাদের নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ঠদের কালক্ষেপণে সরকারের সব অর্জনকে ম্লান করে দিচ্ছে। পাশাপাশি ভোক্তাদেরকে অধিক পরিমান পণ্য না কেনারও আহ্বান জানান।

এদিকে, চট্টগ্রাম নগরীর চৌমুহনী বাজারে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য নাগরিক উদ্যোগ, চট্টগ্রামের উপদেষ্টা ও চসিকের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন এক প্রচারণা চালান।

এ সময় তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে ভোগ্যপণ্যের কোন সংকট নেই। পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে এবং সরবরাহও স্বাভাবিক রয়েছে। তাই এ ধারা যেকোন মূল্যে ধরে রাখতে হবে। বিশেষ করে ক্রেতারা যদি দুই দিনের বেশি ইফতারির পণ্য ক্রয় না করেন তাহলে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের সকল অপকর্ম বিফলে যাবে।

[caption id="attachment_417055" align="alignnone" width="1600"] চট্টগ্রামের পাইকারি বাজারে ক্যাবের সচেতনতামূলক প্রচারণা। ছবি: চট্টগ্রাম অফিস[/caption]

তিনি বলেন, আমরা সচরাচর দেখতে পাই রমজান আসলে ক্রেতাদের মাঝে একসাথে বাজার করার একটা প্রবণতা থাকে। ক্রেতারা মনে করেন একসাথে বাজার করলে সম্ভবত তিনি জিতে যাবেন, কারণ পরবর্তীতে পণ্যের দাম বৃদ্ধি হলে সেটা তার গায়ে লাগবে না। এ ধরণের মনোবৃত্তির কারণে সবাই একসাথে বাজার করতে শুরু করেন এর ফলে বাজারে একটা বিশাল চাপ পড়ে। যে কারণে অনেক সময় স্বাভাবিক সরবরাহেও বিঘ্ন ঘটে। তাই কোনভাবেই একসাথে বাজার করে রাখা সমীচীন নয়। এর ফলে অসাধু ব্যবসায়ীরা পণ্যের কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে উৎসাহিত হয় এবং বাজারে সরবরাহ কমিয়ে দিয়ে ক্রেতাদের উপর চাপ সৃষ্টি করে।

সাবেক এই চসিক প্রশাসক ক্রেতাদের মাঝে মাইকে উৎসাহমূলক প্রচারণার পাশাপাশি প্রচারপত্রও বিলি করেন। এ সময় তিনি চৌমুহনী বাজারের বিভিন্ন দোকানে দুই ধরণের দাম প্রত্যক্ষ করেন।

উপস্থিত ব্যবসায়ীরা এ সময় সুজনকে সিন্ডিকেটের হাত থেকে বাঁচাতে উদ্যোগ নেয়ার আহবান জানান এবং এ সংক্রান্ত তথ্য সরকারের উচ্চ পর্যায়ে জানানোর অনুরোধ জানান।

সুজন এ সময় ব্যবসায়ীদের কাছে ব্রয়লার মুরগির অত্যধিক দামের কারণ জানতে চাইলে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের দায়ী করেন।

তারা বলেন, এ মৌসুমে কোনভাবেই প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৬০-১৭০ টাকার উপরে থাকার কথা নয়। কিন্তু মুরগির বাচ্চার আমদানিকারক এবং মুরগির খাদ্য কর্পোরেট প্রতিষ্টানগুলো সিন্ডিকেট করে রাখায় বাজারে ব্রয়লার মুরগির এই উচ্চমূল্য। এ উচ্চমূল্য কাটাতে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের দৌরাত্ব্য কমিয়ে প্রান্তিক খামারীদের উৎসাহিত করার আহ্বান জানান খোরশেদ আলম সুজন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App