×

জাতীয়

আওয়ামী লীগের মূলনীতি টাকা পাচার দুর্নীতি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৩, ০৭:০৮ পিএম

আওয়ামী লীগের মূলনীতি টাকা পাচার দুর্নীতি

শনিবার বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: ভোরের কাগজ

সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতিতে দেশ ‘ফোকলা’ হয়ে গেছে বলে দাবি করেছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগের মূল নীতি হলো টাকা পাচার আর দুর্নীতি। আওয়ামী লীগের দুর্নীতি গোটা বাংলাদেশকে একটা ফোকলা অর্থনীতিতে পরিণত করেছে, গোটা দেশ ফোকলা হয়ে গেছে। এরা ভোট চোর, বাংলাদেশের অর্থনীতির চোর। তাদেরকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থে একটা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

শনিবার (১৮ মার্চ) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।

ফখরুল বলেন, ভারতে একটা শ্লোগান ছিলো- অলিগলি ম্যায় শোর হ্যায়, অমুক নেতা চোর হ্যায়, নাম বললাম না। আজকে আমাদের শ্লোগান হচ্ছে, আওয়ামী লীগ ভোট চোরের মূলনীতি, টাকা পাচার আর দুর্নীতি। একমত আছেন আপনারা। এ সময় নেতাকীরা হাত তুলে সম্মতি জানাতে থাকে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এই সরকার যারা বিনা নির্বাচনে জোর করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে, যারা রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করছে অন্যায়ভাবে তাদেরকে জনগণের শক্তি দিয়ে সরে যেতে বাধ্য করতে হবে। আজকে তাই সারা দেশ উত্তাল হয়ে উঠেছে।

তিনি আরো বলেন, আমরা আগস্ট মাস থেকে আন্দোলন শুরু করেছি। ১৭ জন নিরহ ভাই প্রাণ দিয়েছে, অসংখ্যা মানুষ আহত হয়েছেন,অসংখ্য নেতাকর্মী কারাগারে গেছেন, এখনো কারাগারে আছেন তাদের যে ঋণ সেই ঋণ শোক করতে, জনগনের দাবি আদায় করতে, স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বেঁচে থাকতে হয় এই সরকারকে অবশ্যই সরাতে হবে। সেজন্য আমাদের সকলকে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।

মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর পরিচালনায় আরো বক্তব্য দেন, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বিএনপি নেতা ফজলুল হক মিলন, নাজিম উদ্দীন আলম, ডা. রফিকুল ইসলাম, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, রকিবুল ইসলাম বকুল, ইশরাক হোসেন, সাঈদ সোহরাব, যুব দলের সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানী, রাজিব আহসান, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, সুলতানা আহমেদ, ছাত্র দলের সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।

‘দুর্নীতির মূলে আওয়ামী লীগ’

টিআইবিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সরকারের দুর্নীতির ফিরিস্তি তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন,আজকে যত সমস্যা দেখতে পান, এই বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি, চাল-ডাল-তেল-লবন-রসুনের দাম বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য, ব্যাংকিং খাত, অবকঠামো খাত- সবকিছুর মূ্লে হচ্ছে আওয়ামী লীগের দুর্নীতি।

এগুলো আমাদের কথা নয়, একথা গু্লো কিছুদিন আগে পশ্চিমা বিশ্বের একটি বিখ্যাত পত্রিকা দি ইকোনোমিক্সটের। সেই পত্রিকা বলেছে যে, বাংলাদেশে কিছুদিন আগেও পশ্চিমা রাজনীতি-অর্থনীতিবিদরা খুব জোরেশোরে বলতেন যে, বাংলাদেশ তৃতীয় বিশ্বের মধ্যে একটা মডেল-মডেল অব ডেভেলপমেন্ট। সেই পত্রিকা এখন বলছে যে, এই মডেল অব ডেভেলপমেন্টের যে ফানুস, যে বেলুন উড়ছিলো আকাশে তা দুর্নীতির কারণে চুপসে পড়ে গেছে।

এদেশ আর নেই, এদেশের কিছু আর অবশিষ্ট নেই অভিযোগ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এই রাষ্ট্রকে ওরা ধবংস করে ফেলেছে। গত দুইদিন আগে সুপ্রিম কোর্টে ঘটনা ঘটিয়েছে তা আপনারা দেখেছেন। তারা রাষ্ট্রের সমস্ত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে একে একে ধবংস করে ফেলেছে। এদেশে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করে ফেলেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, টিআইবি রিপোর্টে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিয়নের চাকরির জন্যও ১৫ লাখ টাকা ঘুষ দিতে হয়। আমি বলেছিলাম এই সরকার বিদ্যুৎ খাতকে দুর্নীতির প্রধান খাত হিসেবে বেছে নিয়েছে। এর আছে তেল আমদানি খাত। সিআইডি বলেছে- দেশ থেকে প্রতি বছর হুণ্ডির মাধ্যমে ৭৫ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়। একটা বালিশ কিনেছে পাঁচ হাজার ৭০০ টাকায়। ১০ হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতু ৩০ হাজার কোটি টাকায় বানিয়েছে। আবার নতুন শুরু করেছে পাতাল রেল। উদ্দেশ্য একটাই, লুট। ২১ কিলোমিটার পাতাল রেলে খরচ হবে ৫২ হাজার কোটি টাকা।

তিনি আরো বলেন, টাকা পাচার করে অর্থনীতিকে একেবারে ফোকলা করে দিয়েছে। ব্যাংকিং খাত থেকে ৮০০ কোটি টাকা লোপাট হয়ে গেছে। ডলার সংকটে নিত্যপ্রয়োনীয় পণ্য আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে। এই রাষ্ট্রকে আওয়ামী লীগ ধ্বংস করে দিয়েছে। দুদিন আগে সুপ্রিম কোর্টে পুলিশ ঢুকে আইনজীবীদের পিটিয়ে আহত করেছে।

আজকে আমাদের প্রধান কথা-এই দুর্নীতি বন্ধ করতে হলে এই সরকারকে সরাতে হবে, তাদের রেখে এদেশ টিকে না। এক সাথে আওয়াজ তুলতে হবে-আওয়ামী লীগের মূলনীতি- মুদ্রাপাচার, টাকা পাচার আর দুর্নীতি, অলি-গলি ম্যায় শোর হ্যা, কোন চোর হ্যায়। এ সময়ে নেতা-কর্মীরা সমস্বরে শ্লোগান দিতে থাকে ‘শেখ হাসিনা চোর হ্যায়’,আওয়ামী লীগে চোর হ্যায়’।

তিনি বলেন, ওরা শুধূ ভোট চুরি না প্রতিটি ওরা জনগনের পকেট কেটে বিদেশে টাকা পাচার করছে। বিদ্যুতের দাম বেড়েছে সেটাও তাদের দুর্নীতির জন্য। এভাবে তারা সব কিছু খেয়ে ফেলেছে। ৮০ দশকের মুস্তাসির মানুষের লেখা চোরের নাটকটি তুলে ধরে তিনি বলেন,আজকে আওয়ামী লীগ ওই জায়গায় গেছে তারা মানচিত্রটাও খেলে ফলতে শুরু করেছে।

‘হজের প্যাকেজ এতো কেন?’ মির্জা ফখরুল বলেন, দেখুন আপনারা হজের ব্যাপারে দুষ্টামী করা ওদের পুরনো অভ্যাস। আজকে সাধারণ মানুষ যারা হজ্বে যেতে চান তাদেরকে ৭ লাখ টাকা দিতে হবে। অথচ ভারতে আড়াই লাখ টাকা আর পাকিস্তানে চার লাখ টাকা। তাহলে বাংলাদেশে কেনো সাত লাখ টাকা হবে? ওই যে চুরি করেছে। বাংলাদেশ বিমান থেকে চুরি করে একেবারে শেষ করে ফেলেছে। সেই চুরিকে লোপাট করার জন্য তাদের এখন বেশি করে টাকা নিতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App